ঢাকায় প্রত্যেক বাড়িতে বাকরখানি রুটির ভেতরে দিয়ে কাবাবি বাকরখানি তৈরি হতো।
কবি সৈয়দ আলী আহসানও এই কাবাবের প্রশংসা করে লিখে গেছেন। কিন্তু তিনি কাবাবের নামটি বলেননি। তবে, তিনি যে বিবরণ ও কাবাব তৈরির যে কৌশলের উল্লেখ করেছেন তা সুতি কাবাবের। তাঁর বিবরণ গত শতকের চল্লিশ (বা পঞ্চাশও হতে পারে) দশকের। লিখেছেন তিনি-
“ঢাকাই কাবাব বলে এক ধরনের কাবাব ঢাকার সর্বত্র পাওয়া যেত এবং তখন অন্য কোনো ধরনের শিক কাবাবের রেওয়াজ ছিল না। সন্ধ্যার দিকে তিন হাত সাড়ে তিন হাত লম্বা বাঁশের ডগার কাবাব জড়ানো থাকত। ডগার অর্থ কিন্তু শুধুমাত্র-অগ্রভাগে তাই নয়, ডগা থেকে নিচের দিকে দু-হাত পর্যন্ত এই কাবাব বাঁশে জড়ানো থাকত এবং সুতো দিয়ে পেঁচানো থাকত। এই কাবাবটি খুব নরম হতো।
গোশত পিষে নিয়ে কাবাবটি তৈরি করত বলে এর মধ্যে কোনো প্রকার আঁশ পাওয়া যেত না। তন্দুরে পোড়ানো হতো বলে কাবাবের ওপরের অংশটুকু শক্ত হতো। অর্থাৎ কাবাবটি পুড়ে ওপরে একটি শক্ত আবরণ তৈরি হতো। এই আবরণ ভেঙে ভেতরে নরম কাবাব পাওয়া যেত। কাবাবটি নরম মাটির মতো। ঢাকায় প্রত্যেক বাড়িতে বাকরখানি রুটির ভেতরে দিয়ে কাবাবি বাকরখানি তৈরি হতো। তেমনি কাঁচা পরটার কাবাব দিয়ে পরাটা বেলে সেঁকে নিলে সেটা হতো কাবাবি পরটা। এগুলোও ছিল ঢাকার সুস্বাদু খাবার।
এখনও চকবাজারে যারা বাকরখানি বা পরটা তৈরি করে, তাদেরকে বললে বাকরখানি বা পরটা তৈরি করে দিতে পারে, কিন্তু আগেকার মতো স্বাদ হবে না। তার কারণ কয়েকটি। প্রথমত, এখন কেউ ব্যবহার করে না। দ্বিতীয়ত, এখন যে কাবাব তৈরি হয়, সেই গোশতের মধ্যে রগ এবং আঁশ থাকে। তৃতীয়ত, আগে যেভাবে নরম মাটি মাটি কাবাবকে পরটা বা বাকরখানির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হতো, এখন সেভাবে হয় না। সুতরাং আগেকার স্বাদ এখন আর পাওয়া যায় না।”
(চলবে)
																			
																মুনতাসীর মামুন								 



















