০৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫১) মৃতদের আহ্বান: মেক্সিকোর মৃত্যু সংস্কৃতির পুনর্মূল্যায়ন সীতাকুণ্ডে প্রার্থী ঘোষণাকে ঘিরে সহিংসতার অভিযোগে বিএনপির চার নেতাকে বহিষ্কার ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের প্রশাসনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে শেয়ারবাজারে টানা পতন: ডিএসই ও সিএসই-তে লেনদেন কমেছে অনলাইন জুয়া লেনদেন বন্ধে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে কঠোর নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশের বিমান খাতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হবে এয়ারবাস: ফরাসি দূত তালেবানের ‘গ্রেটার আফগানিস্তান’ মানচিত্র: শক্তির নয়, হতাশার প্রতিফলন সিলেটে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত অন্তত ৩০ ঢাকায় এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২০)

আগের কাবাব আকারে হতো বড়, স্বাদও ছিল অন্যরকম। এখন তা আকারে অনেক ছোট। স্বাদও হয়েছে বদল।

পটোয়া

ঢাকায় যারা চুলের ফিতা তৈরি করতো তাদের বলা হতো পটোয়া। এরা ছিলেন মুসলমান। লাক্ষা দিয়ে তৈরি এক প্রকার রং তৈরি ‘ঝুরি’ প্রস্তুতেও তারা ছিলেন দক্ষ। পটোয়ারা তাগাও বানাতেন। ওয়াইজ লিখেছেন, উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকায় প্রায় ২৬ ঘর পটোয়া ছিলেন।

পতুবাবু-রতুবাবু

উনিশ শতকে ঢাকায় দুই ভাই পতুবাবু ও রত্নবাবু ছিলেন বিখ্যাত। তাদের পিতামহ বংশীলোচন মিত্র ছিলেন ছোটখাটো জমিদার। তিনি ও তাঁর ভাই রাজিবলোচন ছিলেন খিলগাঁর জমিদার। উত্তরাধিকার সূত্রে পতু ও রতুও ছিলেন ছোটখাটো জমিদার। তারা বিখ্যাত ছিলেন ফুলবাড়িয়ায়, এখন যেখানে ফায়ার সার্ভিসের দফতর, সেখানে ছিল তাদের ৫২ কক্ষের বিশাল ইমারত। দুই ভাই প্রেমদ ও রক্ষিতাদের পেছনে সর্বস্ব খরচের জন্যও পরিচিত ছিলেন। হাশেম সুফি শিখেছেন, পতুবাবুর মৃত্যুর পর রক্তবাবু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার মৃত্যু হলে তাকে দিলকুশা আমে মসজিদে নাজন করা হয়।

পরসন্দ কাবাব

মুষল আমল থেকে এখন পর্যন্ত যে কাষাধটিকে ঢাকার নিজস্ব উদ্ভাবন বলা যায়, তা হলো পরসন্দ। কাবাব যা আমাদের কাছে সুতি কাবাব নামে পরিচিত। এখন, রোজার সময় যে সুতি কাথার আমরা দেখি, তার সঙ্গে পুরনো আমলে তৈরি এ ভাবাবের একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। আগের কাবাব আকারে হতো বড়, স্বাদও ছিল অন্যরকম। এখন তা আকারে অনেক ছোট। স্বাদও হয়েছে বদল।

সুতি কাবাব

এ কাবাব তৈরির কৌশল বর্ণনা করেছেন হাকিম হাবিবুর রহমান। উনিশ শতকের শেষার্ধ বা বিশ শতকের শুরুর সময় তৈরি করা কাবাবের বর্ণনা দিয়েছেন-“ঢাকার বিখ্যাত কাবাব হল পারসান্দে শিক কাবাব। এত বড় ভারী কাবাব আমি তো কোথাও দেখিনি যা দশ পনেরো সের গোশতের এক এক শিকতো সাধারণ ব্যাপার, এমনকি তার চেয়েও ভারী বা ওজনের পাকানো হয়।

এই কাবাবের এই যে গোশতের কোমলতা কিন্তু খাশতা ও খুশকীর মতো এত নরম বা ভিজা হওয়া উচিত নয় যা ভাঙ্গার সাথে সাথে যেন গুঁড়াগুঁড়া না হয়ে যায় এবং সম্পূর্ণ চাক যাতে না বের করা যায়। এতে গোশত ছাড়া বেসন জাতীয় কোনো জিনিস কখনো মিশানো হতো না। শিকের ভারী কাবাব কিমার সঙ্গে সুতা লেপটিয়ে পেঁছিয়ে জানানো হয়, কিন্তু এতে ঢাকার সাধারণ রুচির লোকেরা পছন্দ করতো না। এই সমস্ত কাবাব বিশেষ কাবাবরূপে বানানেওয়ালারা বানিয়ে থাকেন। যদিও ঘরেও তৈরি হয়।”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১১৯)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১১৯)

 

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫১)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১২০)

০৯:০০:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

আগের কাবাব আকারে হতো বড়, স্বাদও ছিল অন্যরকম। এখন তা আকারে অনেক ছোট। স্বাদও হয়েছে বদল।

পটোয়া

ঢাকায় যারা চুলের ফিতা তৈরি করতো তাদের বলা হতো পটোয়া। এরা ছিলেন মুসলমান। লাক্ষা দিয়ে তৈরি এক প্রকার রং তৈরি ‘ঝুরি’ প্রস্তুতেও তারা ছিলেন দক্ষ। পটোয়ারা তাগাও বানাতেন। ওয়াইজ লিখেছেন, উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকায় প্রায় ২৬ ঘর পটোয়া ছিলেন।

পতুবাবু-রতুবাবু

উনিশ শতকে ঢাকায় দুই ভাই পতুবাবু ও রত্নবাবু ছিলেন বিখ্যাত। তাদের পিতামহ বংশীলোচন মিত্র ছিলেন ছোটখাটো জমিদার। তিনি ও তাঁর ভাই রাজিবলোচন ছিলেন খিলগাঁর জমিদার। উত্তরাধিকার সূত্রে পতু ও রতুও ছিলেন ছোটখাটো জমিদার। তারা বিখ্যাত ছিলেন ফুলবাড়িয়ায়, এখন যেখানে ফায়ার সার্ভিসের দফতর, সেখানে ছিল তাদের ৫২ কক্ষের বিশাল ইমারত। দুই ভাই প্রেমদ ও রক্ষিতাদের পেছনে সর্বস্ব খরচের জন্যও পরিচিত ছিলেন। হাশেম সুফি শিখেছেন, পতুবাবুর মৃত্যুর পর রক্তবাবু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার মৃত্যু হলে তাকে দিলকুশা আমে মসজিদে নাজন করা হয়।

পরসন্দ কাবাব

মুষল আমল থেকে এখন পর্যন্ত যে কাষাধটিকে ঢাকার নিজস্ব উদ্ভাবন বলা যায়, তা হলো পরসন্দ। কাবাব যা আমাদের কাছে সুতি কাবাব নামে পরিচিত। এখন, রোজার সময় যে সুতি কাথার আমরা দেখি, তার সঙ্গে পুরনো আমলে তৈরি এ ভাবাবের একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। আগের কাবাব আকারে হতো বড়, স্বাদও ছিল অন্যরকম। এখন তা আকারে অনেক ছোট। স্বাদও হয়েছে বদল।

সুতি কাবাব

এ কাবাব তৈরির কৌশল বর্ণনা করেছেন হাকিম হাবিবুর রহমান। উনিশ শতকের শেষার্ধ বা বিশ শতকের শুরুর সময় তৈরি করা কাবাবের বর্ণনা দিয়েছেন-“ঢাকার বিখ্যাত কাবাব হল পারসান্দে শিক কাবাব। এত বড় ভারী কাবাব আমি তো কোথাও দেখিনি যা দশ পনেরো সের গোশতের এক এক শিকতো সাধারণ ব্যাপার, এমনকি তার চেয়েও ভারী বা ওজনের পাকানো হয়।

এই কাবাবের এই যে গোশতের কোমলতা কিন্তু খাশতা ও খুশকীর মতো এত নরম বা ভিজা হওয়া উচিত নয় যা ভাঙ্গার সাথে সাথে যেন গুঁড়াগুঁড়া না হয়ে যায় এবং সম্পূর্ণ চাক যাতে না বের করা যায়। এতে গোশত ছাড়া বেসন জাতীয় কোনো জিনিস কখনো মিশানো হতো না। শিকের ভারী কাবাব কিমার সঙ্গে সুতা লেপটিয়ে পেঁছিয়ে জানানো হয়, কিন্তু এতে ঢাকার সাধারণ রুচির লোকেরা পছন্দ করতো না। এই সমস্ত কাবাব বিশেষ কাবাবরূপে বানানেওয়ালারা বানিয়ে থাকেন। যদিও ঘরেও তৈরি হয়।”

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১১৯)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১১৯)