“বিয়ের অতিথিদের যেভাবে আপ্যায়ন করা হতো সে সময়, তা হয়তো বিশ্বাসই করতে চাইবে না এখনকার ছেলেমেয়েরা।
নীলগর
উনিশ শতকের মাঝামাঝিই নীলগর পেশার ক্ষয় শুরু হয়। ঢাকায় নীল রঙের কাজ করতেন তারা। সুতা ও কাপড় রঙের কাজ করত নীলগররা। উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকায় মাত্র তিন চার ঘর নীলগর বসবাস করতেন।’
নীলক্ষেত

নীলক্ষেতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকাটি নীলক্ষেং নামে পরিচিত। উনিশ শতকে এখানে নীল চাষ হতো। টেলর জানিয়েছেন ১৮৪০ তাঁর বইটির পাণ্ডুলিপি এর আগে লেখা: এখানে প্রকাশকালটিকে ধরা হয়েছে) সালে ঢাকা জেলায় ৩৭টি নীলকুঠি কারখানা ছিল এবং প্রায় এক লক্ষ বিঘায় এর চাষ হতো। ঢাকার বিখ্যাত নীল কুঠিয়াল ছিলেন জেমস ওয়াইজ।
নদী তীর ঘেঁষে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির ভবনটি ছিল ওয়াইজের বাসগৃহ। ড. আলমগীর উল্লেখ করেছেন, বর্তমান আণবিক শক্তি কমিশন অফিসটির স্থানে ছিল ওয়াইজের ঢাকা কুঠি। অর্থাৎ, এ এলাকাটিতে তিনি নীল চাষ করতেন। সেই নীল চাষের স্মৃতি বহন করছে নীলক্ষেত।
নেওতা

নীলক্ষেত মোড় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটক; স্থপতি: রবিউল হুসাইন
গত শতকের চল্লিশ পঞ্চাশ দশকে, লিখেছেন আনোয়ার হোসেন, বিয়ের কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রণ করা হতো না। প্রথাটি ছিল অন্য। একে বলা হতো নেওতা। তাঁর ভাষায়-
“বিয়ের অতিথিদের যেভাবে আপ্যায়ন করা হতো সে সময়, তা হয়তো বিশ্বাসই করতে চাইবে না এখনকার ছেলেমেয়েরা। তখন বিয়ের কার্ড ছাপানোর প্রচলন ছিল না। দাওয়াত দেয়াকে আঞ্চলিক ভাষায় “নেওতা” দেয়া বলতাম আমরা।
আমন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করা হতো রং করা কিসমিশ বা লবঙ্গ এবং পরবর্তীতে ১ পয়সার মুদ্রা। বিয়ের দিন সকালে নাস্তা হিসেবে বুটের ডাল দিয়ে রান্না করা গরুর মাংস, পরটা, বাখরখানি, মিষ্টি পাঠিয়ে দেয়া হতো মহল্লার বিভিন্ন বাড়িতে। যারা সেসব খাবার গ্রহণ করত, ধরে নেয়া হতো দাওয়াত কবুল করেছে তারা, তার মানে বিয়েতে আসবে।”
(চলবে)
মুনতাসীর মামুন 



















