গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে বিপুল আফিম বীজ জব্দ
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস পাকিস্তান থেকে পাখির খাবার হিসেবে আমদানি করা একটি চালানে প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ আফিম বীজ জব্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার কাস্টমস কর্তৃপক্ষের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই চালানটি করবানীগঞ্জ, কোতোয়ালী, চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আদিব ট্রেডিং-এর নামে আমদানি করা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির নিযুক্ত সি অ্যান্ড এফ (C&F) এজেন্ট ছিল হালিশহরের শান্তিবাগে অবস্থিত এম.এইচ. ট্রেডিং সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট লিমিটেড।
ঘোষণায় ছিল পাখির খাবার, বাস্তবে মিলল আফিম বীজ
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম কাস্টমসে মোট ৩২,০১০ কেজি ‘বার্ড ফিড’ বা পাখির খাবার হিসেবে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে।
তবে গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমসের গোয়েন্দা শাখা চালানটি আটক করে এবং ২২ অক্টোবর সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট ও অফডক কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে কনটেইনারগুলোর শারীরিক পরীক্ষা চালায়।
পরীক্ষায় দেখা যায়, ঘোষিত ৭,২০০ কেজি পাখির খাবারের পাশাপাশি বাকি ২৪,৯৬০ কেজি পণ্য আসলে আফিম বীজ। তদন্তে আরও জানা যায়, কনটেইনারের দরজার সামনে কৌশলে পাখির খাবারের বস্তা সাজিয়ে পেছনে আফিম বীজ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল—যা স্পষ্টভাবে পাচারের উদ্দেশ্য প্রকাশ করে।
ল্যাব পরীক্ষায় নিশ্চিত হলো অবৈধ আফিম বীজ
কাস্টমস কর্মকর্তারা পরীক্ষার জন্য চালান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ কোয়ারেন্টাইন শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোটেকনোলজি সেন্টার এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) পাঠান।
পরবর্তীতে উদ্ভিদ কোয়ারেন্টাইন উইং এবং কুয়েটের পরীক্ষার প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয় যে, জব্দকৃত পণ্যটি আসলে আফিম বীজ।
আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ ও মাদক শ্রেণিভুক্ত পণ্য
২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে অঙ্কুরোদগম সক্ষম আফিম বীজ ‘এ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য হিসেবে গণ্য। পাশাপাশি ২০২১–২০২৪ সালের আমদানি নীতি আদেশে এটি নিষিদ্ধ আমদানি পণ্যের তালিকার ১৫ নম্বর আইটেম হিসেবে উল্লেখ আছে।
মামলার প্রস্তুতি ও পণ্যের প্রকৃত মূল্য
মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে অবৈধভাবে পণ্য আমদানির অভিযোগে কাস্টমস আইন ২০২৩-এর অধীনে চালানটি জব্দ করা হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ঘোষণায় চালানের মূল্য দেখানো হয়েছিল ৩০ লাখ ২ হাজার ৪৮২ টাকা, কিন্তু জব্দ করা আফিম বীজের প্রকৃত বাজারমূল্য আনুমানিক ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বলে অনুমান করা হয়েছে।
#চট্টগ্রামবন্দর #আফিমবীজজব্দ #অবৈধআমদানি #মাদকদ্রব্যনিয়ন্ত্রণ #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















