নেটফ্লিক্সের “ডেথ বাই লাইটনিং” সিরিজটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ডের হত্যাকাণ্ডের পেছনের গল্প তুলে ধরছে, এবং এটি এক অবিশ্বাস্য, রোমাঞ্চকর ও অদ্ভুত ইতিহাসের মিশ্রণ। সিরিজটির মাধ্যমে ইতিহাসকে সহজ, কিন্তু অদ্ভুতভাবে নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা অবশ্যই দর্শকদের আকর্ষণ করবে।
গারফিল্ড ও গুইটেউয়ের গল্প
“ডেথ বাই লাইটনিং”-এ গারফিল্ডের সহকারী প্রেসিডেন্ট চেস্টার আ. আর্থার চরিত্রে নিক অফারম্যান অভিনয় করেছেন। তিনি একটি অদ্ভুত, মদ্যপানপ্রিয় এবং সসেজ পছন্দকারী ব্যক্তি, যিনি গারফিল্ডের কাছে পদত্যাগ করতে চান, কিন্তু গারফিল্ড তাকে নাকচ করে দেন। সিরিজটি সেগুলোকে অত্যন্ত হাস্যকর এবং তীক্ষ্ণ অনুপ্রেরণার সঙ্গে উপস্থাপন করেছে। গারফিল্ডের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে তাকে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়, এবং এই দৃশ্যগুলো হাস্যরসের সঙ্গে দুঃখজনক ঘটনার মিশ্রণ।
ম্যাথিউ ম্যাকফ্যাডেন, যিনি গুইটেউ চরিত্রে অভিনয় করছেন, তাকে গিল্ডেড এজ টম ওয়াম্বসগ্যান্সের মতো একটি চরিত্র হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। গুইটেউ একজন বিভ্রান্ত, অহঙ্কারী এবং একে অপরকে নিচু করার জন্য সমাজের সিঁড়ি বেয়ে ওঠার চেষ্টা করে। গুইটেউয়ের জন্য শ্রদ্ধা এবং ঘৃণা একসঙ্গে অনুভূত হয়, যা সিরিজের বেশিরভাগ হাস্যরসের উৎস।

গারফিল্ডের প্রেসিডেন্সি এবং পারিবারিক জীবন
গারফিল্ডের জীবনটাও সিরিজে খুব সোজাসাপ্টা, কিন্তু তার প্রেসিডেন্সির কিছু মুহূর্ত খুব আধুনিকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। গারফিল্ড তার পরিবারকে নিয়ে সরল এবং আন্তরিক জীবনযাপন করেন, যার মধ্যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একটি সমান অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কও দেখানো হয়েছে। বেটি গিলপিন তার স্ত্রীর চরিত্র ক্রিটে হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।
গারফিল্ডের মৃত্যুর পূর্বে রাজনৈতিক পরিস্থিতি
সিরিজে গারফিল্ডের মৃত্যুর পেছনের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলাও দেখানো হয়েছে। ১৮৮০ সালের রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে গারফিল্ডের প্রার্থী হওয়া এবং সেই সময়কার রাজনৈতিক উত্তেজনা ও দ্বন্দ্বের দৃশ্যগুলি এক নতুন আলোকে তুলে ধরা হয়েছে। গারফিল্ডের মৃত্যুর পর আমেরিকার ইতিহাসে এই ঘটনাটি একটি নাটকীয় পরিবর্তনের সূচনা করে।
সিরিজের অভিনয় এবং সঙ্গীত
এই সিরিজের অভিনয় খুবই শক্তিশালী, এবং মাইকেল শ্যানন, যারা গারফিল্ডের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তার অভিনয়ে অনেক শক্তিশালী অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। নাটকটির সঙ্গীতও অত্যন্ত সুন্দর, এবং রামিন জাওয়াদি-এর সঙ্গীতের মাধ্যমে সিরিজটি আরও জীবন্ত হয়ে ওঠে।

হাস্যরসের সাথে ইতিহাসের চিত্রায়ন
যদিও সিরিজটি কিছু জায়গায় অতিরিক্ত নাটকীয়তা ব্যবহার করেছে, তবে এটি ইতিহাসের অদ্ভুত ঘটনাগুলিকে মজার এবং আলাদা করে তুলে ধরেছে। “ডেথ বাই লাইটনিং” সিরিজটি ইতিহাসের একদম অপ্রত্যাশিত দিকগুলোকে পর্দায় তুলে ধরে, এবং এটি বর্তমান দিনের সংযোগ না রেখে কেবল এক মজার কাহিনী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেছে।
“ডেথ বাই লাইটনিং” একটি বিরল এবং আনন্দদায়ক সিরিজ, যা ইতিহাসকে একটি নাটকীয় এবং হাস্যরসাত্মক উপস্থাপনায় তুলে ধরেছে। এটি ইতিহাসের এক আশ্চর্যজনক অধ্যায়কে অদ্ভুতভাবে উপস্থাপন করেছে, যা বর্তমানে অস্পষ্ট এবং বিতর্কিত ঘটনাগুলোর প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















