০৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ তদন্ত নিয়ে কী বলছে সরকার, আইএসপিআর চীন বিরল খনিজ রপ্তানি বিধিনিষেধ শিথিলের উদ্যোগ নিলেও ট্রাম্পের প্রত্যাশার পূর্ণতা নেই এআই বাজারে উদ্বেগে নাসডাকের পতন: এপ্রিলের পর সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহ টাইফুন ‘কালমেগি’-এর তাণ্ডবে ভিয়েতনামে প্রাণহানি, ফিলিপাইনে মৃতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২০০ ইলন মাস্ক পেলেন ইতিহাসগড়া বেতন অনুমোদন, টেসলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোট্যাক্সি কেন্দ্রীয় ভূমিকা চার দশকের সংঘাতের অবসানে তুরস্কের বড় পদক্ষেপ — পিকেকে যোদ্ধাদের দেশে ফেরাতে বিশেষ আইন প্রণয়নের প্রস্তুতি বিশ্ববাজারে ওয়াইন বিক্রিতে ধাক্কা, মার্কিন ও চীনা বাজারে মন্দা যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ফিরেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা, মানসিক যুদ্ধ থেকে বাঁচবে কীভাবে? ২০২৫ সালের ১০০ প্রভাবশালী জলবায়ু-অভিযান নেতা: বিশ্বের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে ব্যবসার নতুন অঙ্গীকার আনিসিমোভার দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন: রিবাকিনা সেমিফাইনালে জায়গা পেলেন

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বড় অগ্রগতি: পোকরোভস্ক দখলের দ্বারপ্রান্তে

ইউক্রেন যুদ্ধে প্রায় পাঁচ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এই দীর্ঘ লড়াইয়ের মাঝে রাশিয়া এখন পোকরোভস্ক নামের একটি শহর দখলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের এই শহরটি একসময় ছিল খনিশিল্পের কেন্দ্র, যেখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু এখন সেটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাস্তা জুড়ে মৃতদেহ, ভগ্নাবশেষ আর ক্রমাগত বিস্ফোরণ—এ যেন এক ভৌতিক নগরী।

তবে এই শহরটি দখল করার অর্থ শুধুমাত্র ভূমি দখল নয়, বরং এটি এক কঠিন প্রশ্ন উত্থাপন করছে—দুই দেশের মধ্যে কে আগে রক্তশূন্য হয়ে পড়বে?

শক্তির লড়াই: শিল্প বনাম সহায়তা

রাশিয়া মনে করছে, তাদের বিশাল জনসংখ্যা ও শিল্পশক্তির জোরে তারা ইউক্রেনকে পরাস্ত করতে পারবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের লক্ষ্য রাশিয়ার সামরিক সম্পদকে ক্লান্ত করে তোলা এবং পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া।

দুই বছর ধরে পোকরোভস্ককে কেন্দ্র করেই চলছে ভয়াবহ সংঘর্ষ। রুশ বাহিনী শহরের চারপাশের বনাঞ্চল ও গ্রামগুলোর মধ্য দিয়ে নিরন্তর আক্রমণ চালাচ্ছে, আর ইউক্রেন ব্যবহার করছে ড্রোন ও বিস্ফোরক হামলা।

শহরের নিয়ন্ত্রণ: সংকটে ইউক্রেনীয় সেনারা

ইউক্রেনীয় সেনাদের মতে, শহরের আকাশ এখন রুশ ড্রোনে পূর্ণ। রুশ সেনারা সংখ্যায় এগিয়ে এবং তারা উত্তর দিক থেকে শহরের ভেতরে প্রবেশ করছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পোকরোভস্ক পুরোপুরি রাশিয়ার দখলে যেতে পারে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা শহরের ভেতর থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ‘ঘিরে ফেলেছে’। তবে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই দাবি নাকচ করেছেন এবং বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা এখনও প্রতিরোধ গড়ে রাখছে।

রাজনৈতিক বার্তা: পুতিনের কৌশল

যদি পোকরোভস্ক রাশিয়ার দখলে যায়, এটি হবে ২০২৩ সালের পর মস্কোর সবচেয়ে বড় সাফল্য। এর মাধ্যমে পুতিন প্রমাণ করতে চান যে রাশিয়ার জয় অনিবার্য এবং ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো ‘অর্থহীন’।

জেলেনস্কি পাল্টা মন্তব্য করেছেন, “রাশিয়ার কাছে এমন কোনো অর্জন নেই যা তারা আমেরিকানদের কাছে ‘বিক্রি’ করতে পারে।”

রাশিয়ার ভেতরের সংকেত: যুদ্ধযন্ত্রের ক্লান্তি

যদিও রাশিয়া জনবল ও অস্ত্রের দিক থেকে এগিয়ে, তাদের অর্থনীতি ধীরে ধীরে চাপে পড়ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে, বিভিন্ন অঞ্চলে সেনা নিয়োগের বোনাসও কমানো হয়েছে। তবুও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনও এমন কোনো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি যা রাশিয়ার অর্থনীতিকে সত্যিই বিপর্যস্ত করতে পারে।

ইউক্রেনের সংকট: জনবল ঘাটতি

রাশিয়ার তুলনায় চার ভাগের এক জনসংখ্যা নিয়ে ইউক্রেন এখন মারাত্মক জনবল সংকটে পড়েছে। অতীতে অনেক সময় জেলেনস্কি ও সেনা নেতৃত্বের ওপর অভিযোগ উঠেছে: রাজনৈতিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে দেরি করা, ফলে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

২৫তম এয়ারবর্ন ব্রিগেডের এক কর্মকর্তা বলেন, “কঠিন সিদ্ধান্ত সময়মতো নিতে হবে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে মাটি রক্ষা করা যাবে না।”

অগ্রগতির ধীর গতি ও মূল্য

রাশিয়ার বাহিনী গত দুই বছরে মাত্র ২৪ মাইল অগ্রসর হয়েছে। পোকরোভস্ক পতন হলে পাশের শহর মিরনোহ্রাদও ঝুঁকিতে পড়বে।

তবুও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শহরে লড়াই এখনও তাদের পক্ষে। তারা দাবি করেন, প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ১০০ রুশ সৈন্য নিহত হচ্ছে। “এই যুদ্ধে আমি কখনও এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি দেখিনি, তবুও তারা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে,” বলেন এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের বিশ্লেষক জর্জ ব্যারোস বলেন, “পোকরোভস্ক এখনই পতন হওয়ার সম্ভাবনা কম। ইউক্রেন এখানেই রাশিয়াকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে রাখছে।”

ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্র

পোকরোভস্কের চারপাশে প্রতিটি সরবরাহপথে রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জ্বলে যাওয়া যানবাহনের সারি। সৈন্যদের অনেক সময় ১০ মাইল হেঁটে অবস্থানে পৌঁছাতে হয়।

ইউক্রেনের ৬৮তম জ্যাগার ব্রিগেডের এক কর্মকর্তা বলেন, “যত শহরের কাছাকাছি যাবেন, ততই জীবিত ফেরার সম্ভাবনা কমে যায়।”

শূন্য শহর ও অবিরাম ড্রোন

শহরের রাস্তাগুলো এখন প্রায় জনশূন্য। প্রতি ঘণ্টায় বিশাল রুশ ‘গ্লাইড বোমা’ শহর কাঁপিয়ে দেয়। আকাশে ড্রোনের গুঞ্জন কখনও থামে না।

২৫তম ব্রিগেডের ওই কর্মকর্তা বলেন, “তারা আকাশে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাদের কৌশল সহজ—বেশি মানুষ, বেশি অস্ত্র, বেশি ড্রোন।”

ক্ষয়ে যাওয়া বাহিনী

এখন পোকরোভস্কের বড় অংশই ‘গ্রে জোন’—অর্থাৎ কোনো পক্ষের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ রুশ সৈন্য শহরের ভেতরে প্রবেশ করেছে, কিন্তু অনেকে নিহত বা আহত। যারা বেঁচে আছে, তারা ভবনের বেজমেন্টে লুকিয়ে জড়ো হচ্ছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থাও নাজুক। কিছু ইউনিটে মাত্র ২০ শতাংশ সদস্য সক্রিয়। এক রিকনাইসেন্স কমান্ডার জানান, তার ২০ জনের দলে এখন কেবল পাঁচজন যুদ্ধের উপযোগী—বাকি সবাই হয় নিহত, নয়তো হাসপাতালে।

“সময় যত যাচ্ছে, যুদ্ধ তত কঠিন হয়ে উঠছে,” বলেন তিনি।

সারাংশে, পোকরোভস্ক এখন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রতীক—যেখানে কোনো পক্ষই সহজে জিতছে না, কিন্তু উভয় পক্ষই হারাচ্ছে মানুষ, শক্তি ও আশা।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ তদন্ত নিয়ে কী বলছে সরকার, আইএসপিআর

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বড় অগ্রগতি: পোকরোভস্ক দখলের দ্বারপ্রান্তে

০১:২৫:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

ইউক্রেন যুদ্ধে প্রায় পাঁচ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এই দীর্ঘ লড়াইয়ের মাঝে রাশিয়া এখন পোকরোভস্ক নামের একটি শহর দখলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের এই শহরটি একসময় ছিল খনিশিল্পের কেন্দ্র, যেখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু এখন সেটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাস্তা জুড়ে মৃতদেহ, ভগ্নাবশেষ আর ক্রমাগত বিস্ফোরণ—এ যেন এক ভৌতিক নগরী।

তবে এই শহরটি দখল করার অর্থ শুধুমাত্র ভূমি দখল নয়, বরং এটি এক কঠিন প্রশ্ন উত্থাপন করছে—দুই দেশের মধ্যে কে আগে রক্তশূন্য হয়ে পড়বে?

শক্তির লড়াই: শিল্প বনাম সহায়তা

রাশিয়া মনে করছে, তাদের বিশাল জনসংখ্যা ও শিল্পশক্তির জোরে তারা ইউক্রেনকে পরাস্ত করতে পারবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের লক্ষ্য রাশিয়ার সামরিক সম্পদকে ক্লান্ত করে তোলা এবং পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া।

দুই বছর ধরে পোকরোভস্ককে কেন্দ্র করেই চলছে ভয়াবহ সংঘর্ষ। রুশ বাহিনী শহরের চারপাশের বনাঞ্চল ও গ্রামগুলোর মধ্য দিয়ে নিরন্তর আক্রমণ চালাচ্ছে, আর ইউক্রেন ব্যবহার করছে ড্রোন ও বিস্ফোরক হামলা।

শহরের নিয়ন্ত্রণ: সংকটে ইউক্রেনীয় সেনারা

ইউক্রেনীয় সেনাদের মতে, শহরের আকাশ এখন রুশ ড্রোনে পূর্ণ। রুশ সেনারা সংখ্যায় এগিয়ে এবং তারা উত্তর দিক থেকে শহরের ভেতরে প্রবেশ করছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পোকরোভস্ক পুরোপুরি রাশিয়ার দখলে যেতে পারে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা শহরের ভেতর থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ‘ঘিরে ফেলেছে’। তবে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই দাবি নাকচ করেছেন এবং বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা এখনও প্রতিরোধ গড়ে রাখছে।

রাজনৈতিক বার্তা: পুতিনের কৌশল

যদি পোকরোভস্ক রাশিয়ার দখলে যায়, এটি হবে ২০২৩ সালের পর মস্কোর সবচেয়ে বড় সাফল্য। এর মাধ্যমে পুতিন প্রমাণ করতে চান যে রাশিয়ার জয় অনিবার্য এবং ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো ‘অর্থহীন’।

জেলেনস্কি পাল্টা মন্তব্য করেছেন, “রাশিয়ার কাছে এমন কোনো অর্জন নেই যা তারা আমেরিকানদের কাছে ‘বিক্রি’ করতে পারে।”

রাশিয়ার ভেতরের সংকেত: যুদ্ধযন্ত্রের ক্লান্তি

যদিও রাশিয়া জনবল ও অস্ত্রের দিক থেকে এগিয়ে, তাদের অর্থনীতি ধীরে ধীরে চাপে পড়ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে, বিভিন্ন অঞ্চলে সেনা নিয়োগের বোনাসও কমানো হয়েছে। তবুও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনও এমন কোনো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি যা রাশিয়ার অর্থনীতিকে সত্যিই বিপর্যস্ত করতে পারে।

ইউক্রেনের সংকট: জনবল ঘাটতি

রাশিয়ার তুলনায় চার ভাগের এক জনসংখ্যা নিয়ে ইউক্রেন এখন মারাত্মক জনবল সংকটে পড়েছে। অতীতে অনেক সময় জেলেনস্কি ও সেনা নেতৃত্বের ওপর অভিযোগ উঠেছে: রাজনৈতিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে দেরি করা, ফলে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

২৫তম এয়ারবর্ন ব্রিগেডের এক কর্মকর্তা বলেন, “কঠিন সিদ্ধান্ত সময়মতো নিতে হবে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে মাটি রক্ষা করা যাবে না।”

অগ্রগতির ধীর গতি ও মূল্য

রাশিয়ার বাহিনী গত দুই বছরে মাত্র ২৪ মাইল অগ্রসর হয়েছে। পোকরোভস্ক পতন হলে পাশের শহর মিরনোহ্রাদও ঝুঁকিতে পড়বে।

তবুও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শহরে লড়াই এখনও তাদের পক্ষে। তারা দাবি করেন, প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ১০০ রুশ সৈন্য নিহত হচ্ছে। “এই যুদ্ধে আমি কখনও এমন ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি দেখিনি, তবুও তারা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে,” বলেন এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের বিশ্লেষক জর্জ ব্যারোস বলেন, “পোকরোভস্ক এখনই পতন হওয়ার সম্ভাবনা কম। ইউক্রেন এখানেই রাশিয়াকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে রাখছে।”

ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্র

পোকরোভস্কের চারপাশে প্রতিটি সরবরাহপথে রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জ্বলে যাওয়া যানবাহনের সারি। সৈন্যদের অনেক সময় ১০ মাইল হেঁটে অবস্থানে পৌঁছাতে হয়।

ইউক্রেনের ৬৮তম জ্যাগার ব্রিগেডের এক কর্মকর্তা বলেন, “যত শহরের কাছাকাছি যাবেন, ততই জীবিত ফেরার সম্ভাবনা কমে যায়।”

শূন্য শহর ও অবিরাম ড্রোন

শহরের রাস্তাগুলো এখন প্রায় জনশূন্য। প্রতি ঘণ্টায় বিশাল রুশ ‘গ্লাইড বোমা’ শহর কাঁপিয়ে দেয়। আকাশে ড্রোনের গুঞ্জন কখনও থামে না।

২৫তম ব্রিগেডের ওই কর্মকর্তা বলেন, “তারা আকাশে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাদের কৌশল সহজ—বেশি মানুষ, বেশি অস্ত্র, বেশি ড্রোন।”

ক্ষয়ে যাওয়া বাহিনী

এখন পোকরোভস্কের বড় অংশই ‘গ্রে জোন’—অর্থাৎ কোনো পক্ষের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ রুশ সৈন্য শহরের ভেতরে প্রবেশ করেছে, কিন্তু অনেকে নিহত বা আহত। যারা বেঁচে আছে, তারা ভবনের বেজমেন্টে লুকিয়ে জড়ো হচ্ছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থাও নাজুক। কিছু ইউনিটে মাত্র ২০ শতাংশ সদস্য সক্রিয়। এক রিকনাইসেন্স কমান্ডার জানান, তার ২০ জনের দলে এখন কেবল পাঁচজন যুদ্ধের উপযোগী—বাকি সবাই হয় নিহত, নয়তো হাসপাতালে।

“সময় যত যাচ্ছে, যুদ্ধ তত কঠিন হয়ে উঠছে,” বলেন তিনি।

সারাংশে, পোকরোভস্ক এখন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রতীক—যেখানে কোনো পক্ষই সহজে জিতছে না, কিন্তু উভয় পক্ষই হারাচ্ছে মানুষ, শক্তি ও আশা।