০২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
গ্রামীণ ব্যাংক ও ফরহাদ মজাহারের দোকান “প্রবর্তনা” চত্বরে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ সিল্কপঙ্ক স্রষ্টা কেন লিউ — এআই, আধুনিকতা ও আমেরিকান হওয়ার মানে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে: সুষ্ঠু ভোট আয়োজনেই ‘জিহাদ’ ঘোষণা দুর্ঘটনায় নিহত শারীরিক প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্র ও এক বৃদ্ধা আগামী ৫০ বছর চলবে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা: সাবেক ডব্লিউটিও প্রধানের সতর্কবার্তা ক্যান্সারের ওষুধের দাম কমে যাবে – চীনা রসায়নবিদদের যুগান্তকারী সাফল্য যখন নদী গিলে খায় জমি: বাংলাদেশের অবিরাম লড়াই ভাঙনের সঙ্গে বিকাশমান মস্তিষ্কের মানচিত্র উন্মোচন: বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার উপজেলা ভূমি অফিসে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের পথ: আলী ইমাম মজুমদারের বক্তব্য কুমিল্লায় বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০

চীনের বিনিয়োগে ধস: লুকানো সংকেত নাকি পরিসংখ্যানের কারসাজি?

অর্থনৈতিক মন্দার ইঙ্গিত: বিনিয়োগে ভয়াবহ পতন

চীনের অর্থনীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা চলছে — অনেকের মতে দেশটির বিনিয়োগ অতিমাত্রায় বেশি, আর সরকারি পরিসংখ্যান বাস্তবতার তুলনায় অনেকটাই বাড়িয়ে দেখানো হয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে বিনিয়োগের দুর্বলতা এতটাই প্রকট হয়েছে যে বিশ্লেষকদের একাংশ পর্যন্ত মনে করছেন, সংখ্যাগুলো সত্য হতে খুবই খারাপ।

চীন প্রতি মাসে অবকাঠামো, উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগের তথ্য প্রকাশ করে। ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে দেশটি মোট ৩৭.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান(প্রায় ৫.২ ট্রিলিয়ন ডলার) ব্যয় করেছে। পরিমাণে বিশাল মনে হলেও, এটি আগের বছরের তুলনায় ০.৫ শতাংশ কম। কোভিড-১৯ মহামারির সময় বাদ দিলে এটি গত তিন দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বার্ষিক বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি।


গ্রীষ্মকালেই শুরু পতন

বছরের শুরুতে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু গ্রীষ্মকাল থেকে বিনিয়োগ হঠাৎ করেই ধসে পড়ে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৬.৬ শতাংশ কমেছে। এই ধসটিকেই অনেকে চীনের দীর্ঘদিনের আশঙ্কাকৃত অর্থনৈতিক সংকটের বাস্তব রূপ বলে মনে করছেন।

যদিও সম্পত্তি খাতে বিনিয়োগ অনেকদিন ধরেই কমছে, তবুও উৎপাদন, অবকাঠামো ও সেবাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছিল। কিন্তু তৃতীয় প্রান্তিকে সেই স্থিতিশীলতাও ভেঙে পড়ে — সম্পত্তি বাদ দিয়েও বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৩.৫ শতাংশ কমে যায়।


সরকারের ইনভলিউশন দমন অভিযান

এই পতনের একটি সম্ভাব্য কারণ হলো সরকারের ইনভলিউশন বা বিশৃঙ্খল প্রতিযোগিতা বিরোধী অভিযান। চীনা কর্তৃপক্ষ মনে করে, দাম কমানোর প্রতিযোগিতা ও অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করা দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। এই প্রবণতা মূলত স্থানীয় সরকারগুলোর মধ্যে অতি প্রতিযোগিতা থেকে জন্ম নিয়েছে — যারা নিজেদের অঞ্চলে নতুন শিল্পনেতা গড়তে চায়।

গত এক বছরে এই বিষয়ে সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। জুলাই মাসে ২৪ সদস্যবিশিষ্ট পলিটব্যুরোর বৈঠকে অবিন্যস্ত প্রতিযোগিতা দমনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পরে ২০ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্থানীয় সরকারগুলোকে সতর্ক করে বলেন, “নতুন উৎপাদনশীল শক্তি” তৈরির নামে যেন তারা হঠাৎ নতুন উদ্যোগে ঝাঁপিয়ে না পড়ে।


স্থানীয় সরকারগুলোর ভূমিকা ও ঋণসংকট

তবে বিনিয়োগ কমার মূল কারণ শুধু এই অভিযান নয়। বিনিয়োগ হ্রাসের বড় অংশটি এমন খাতে দেখা গেছে যেগুলোকে সরকারের ইনভলিউশন অভিযান সরাসরি লক্ষ্য করেনি। উদাহরণস্বরূপ, গাড়ি শিল্পে দাম কমানোর অভিযোগ থাকলেও জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের বিনিয়োগ ১৯ শতাংশ বেড়েছে।

অনেক স্থানীয় সরকার হয়তো এই অভিযানের অর্থ ভুলভাবে বুঝেছে — তারা ঋণ পরিশোধে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, যার অর্থ বিনিয়োগের জন্য অর্থসংস্থান কমে গেছে। চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য বন্ড ইস্যুর অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু অনেক স্থানীয় প্রশাসন বিনিয়োগের পরিবর্তে সেই অর্থ দিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ করছে। চীনা সিকিউরিটিজ ফার্ম শেনওয়ান হংইউয়ান-এর ঝাও ওয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগের ঘাটতি তৈরি হয়েছে — যা মোট বিনিয়োগ পতনের প্রায় অর্ধেক।


পরিসংখ্যানের অসঙ্গতি

অন্যদিকে গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্যাভেকাল ড্রাগোনমিকস-এর অ্যান্ড্রু ব্যাটসনের মতে, এই পতনের ব্যাখ্যা পুরোপুরি সঙ্গত নয়। কারণ, চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী তৃতীয় প্রান্তিকে মূলধনী ব্যয় জিডিপি বৃদ্ধির প্রায় এক-পঞ্চমাংশে অবদান রেখেছে। যদি এটি সত্য হয়, তবে বিনিয়োগ বরং আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশের বেশি বাড়া উচিত ছিল (মূল্যস্ফীতি সামঞ্জস্য করার পর)।

প্রযুক্তিগত কারণে কিছু পার্থক্য থাকতে পারে — যেমন মাসিক বিনিয়োগের হিসাব জমি-ক্রয় অন্তর্ভুক্ত করে, যা জিডিপি-তে ধরা হয় না, আবার মজুত পরিবর্তনের তথ্য বাদ পড়ে। তবে এই পার্থক্যগুলো এত বড় বৈষম্য ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট নয়।


‘সত্য গোপন’ না ‘পরিসংখ্যান সংশোধন’?

ব্যাটসনের মতে, এবার হয়তো চীনের মাসিক বিনিয়োগের পরিসংখ্যান বাস্তব অবস্থার তুলনায় কম দেখাচ্ছে। স্থানীয় সরকারগুলো ইনভলিউশন দমনের দায়িত্ব পালন করছে এমন প্রমাণ দিতে গিয়ে হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে বিনিয়োগ কম রিপোর্ট করছে। অতীতে তারা বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে দেখাত, এখন “পানি চেপে(squeezing the water)” সংখ্যাগুলো বাস্তবের কাছাকাছি আনার সুযোগ পেয়েছে।


সরকারের প্রতিক্রিয়া: সীমিত ও সংযত

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো — কেন্দ্রীয় সরকার এ নিয়ে আতঙ্কিত নয়। বড় ধরনের প্রণোদনা না দিয়ে তারা খুবই সংযত নীতি গ্রহণ করেছে। চীনের পরিকল্পনা সংস্থা তিনটি নীতিমালা ব্যাংককে ২৩০০ প্রকল্পে মোট ৫০০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও স্থানীয় সরকারগুলোর বন্ড ইস্যুর সীমা কিছুটা বাড়িয়েছে।


ভবিষ্যতের প্রশ্ন

এখন দুইটি সম্ভাবনা সামনে আসছে:
১. স্থানীয় সরকারগুলো সত্যিই বিনিয়োগ ধসের সঠিক তথ্য দিচ্ছে, আর কেন্দ্রীয় সরকার সমস্যাটিকে অবমূল্যায়ন করছে।
২. অথবা, স্থানীয় সরকারগুলো “ইনভলিউশন সংশোধনের” নামে তথ্য বিকৃত করছে।

দুটি সম্ভাবনার যেকোনো একটি সত্য হলেও, তা চীনের অর্থনীতির জন্য মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।


সারাক্ষণ রিপোর্ট


#চীন #বিনিয়োগ #অর্থনীতি #চীনা_সরকার #অর্থনৈতিক_মন্দা #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্রামীণ ব্যাংক ও ফরহাদ মজাহারের দোকান “প্রবর্তনা” চত্বরে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ

চীনের বিনিয়োগে ধস: লুকানো সংকেত নাকি পরিসংখ্যানের কারসাজি?

১২:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

অর্থনৈতিক মন্দার ইঙ্গিত: বিনিয়োগে ভয়াবহ পতন

চীনের অর্থনীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা চলছে — অনেকের মতে দেশটির বিনিয়োগ অতিমাত্রায় বেশি, আর সরকারি পরিসংখ্যান বাস্তবতার তুলনায় অনেকটাই বাড়িয়ে দেখানো হয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে বিনিয়োগের দুর্বলতা এতটাই প্রকট হয়েছে যে বিশ্লেষকদের একাংশ পর্যন্ত মনে করছেন, সংখ্যাগুলো সত্য হতে খুবই খারাপ।

চীন প্রতি মাসে অবকাঠামো, উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগের তথ্য প্রকাশ করে। ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে দেশটি মোট ৩৭.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান(প্রায় ৫.২ ট্রিলিয়ন ডলার) ব্যয় করেছে। পরিমাণে বিশাল মনে হলেও, এটি আগের বছরের তুলনায় ০.৫ শতাংশ কম। কোভিড-১৯ মহামারির সময় বাদ দিলে এটি গত তিন দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বার্ষিক বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি।


গ্রীষ্মকালেই শুরু পতন

বছরের শুরুতে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু গ্রীষ্মকাল থেকে বিনিয়োগ হঠাৎ করেই ধসে পড়ে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৬.৬ শতাংশ কমেছে। এই ধসটিকেই অনেকে চীনের দীর্ঘদিনের আশঙ্কাকৃত অর্থনৈতিক সংকটের বাস্তব রূপ বলে মনে করছেন।

যদিও সম্পত্তি খাতে বিনিয়োগ অনেকদিন ধরেই কমছে, তবুও উৎপাদন, অবকাঠামো ও সেবাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কিছুটা ভারসাম্য রক্ষা করেছিল। কিন্তু তৃতীয় প্রান্তিকে সেই স্থিতিশীলতাও ভেঙে পড়ে — সম্পত্তি বাদ দিয়েও বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৩.৫ শতাংশ কমে যায়।


সরকারের ইনভলিউশন দমন অভিযান

এই পতনের একটি সম্ভাব্য কারণ হলো সরকারের ইনভলিউশন বা বিশৃঙ্খল প্রতিযোগিতা বিরোধী অভিযান। চীনা কর্তৃপক্ষ মনে করে, দাম কমানোর প্রতিযোগিতা ও অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করা দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। এই প্রবণতা মূলত স্থানীয় সরকারগুলোর মধ্যে অতি প্রতিযোগিতা থেকে জন্ম নিয়েছে — যারা নিজেদের অঞ্চলে নতুন শিল্পনেতা গড়তে চায়।

গত এক বছরে এই বিষয়ে সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। জুলাই মাসে ২৪ সদস্যবিশিষ্ট পলিটব্যুরোর বৈঠকে অবিন্যস্ত প্রতিযোগিতা দমনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পরে ২০ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্থানীয় সরকারগুলোকে সতর্ক করে বলেন, “নতুন উৎপাদনশীল শক্তি” তৈরির নামে যেন তারা হঠাৎ নতুন উদ্যোগে ঝাঁপিয়ে না পড়ে।


স্থানীয় সরকারগুলোর ভূমিকা ও ঋণসংকট

তবে বিনিয়োগ কমার মূল কারণ শুধু এই অভিযান নয়। বিনিয়োগ হ্রাসের বড় অংশটি এমন খাতে দেখা গেছে যেগুলোকে সরকারের ইনভলিউশন অভিযান সরাসরি লক্ষ্য করেনি। উদাহরণস্বরূপ, গাড়ি শিল্পে দাম কমানোর অভিযোগ থাকলেও জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের বিনিয়োগ ১৯ শতাংশ বেড়েছে।

অনেক স্থানীয় সরকার হয়তো এই অভিযানের অর্থ ভুলভাবে বুঝেছে — তারা ঋণ পরিশোধে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, যার অর্থ বিনিয়োগের জন্য অর্থসংস্থান কমে গেছে। চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য বন্ড ইস্যুর অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু অনেক স্থানীয় প্রশাসন বিনিয়োগের পরিবর্তে সেই অর্থ দিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ করছে। চীনা সিকিউরিটিজ ফার্ম শেনওয়ান হংইউয়ান-এর ঝাও ওয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগের ঘাটতি তৈরি হয়েছে — যা মোট বিনিয়োগ পতনের প্রায় অর্ধেক।


পরিসংখ্যানের অসঙ্গতি

অন্যদিকে গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্যাভেকাল ড্রাগোনমিকস-এর অ্যান্ড্রু ব্যাটসনের মতে, এই পতনের ব্যাখ্যা পুরোপুরি সঙ্গত নয়। কারণ, চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী তৃতীয় প্রান্তিকে মূলধনী ব্যয় জিডিপি বৃদ্ধির প্রায় এক-পঞ্চমাংশে অবদান রেখেছে। যদি এটি সত্য হয়, তবে বিনিয়োগ বরং আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশের বেশি বাড়া উচিত ছিল (মূল্যস্ফীতি সামঞ্জস্য করার পর)।

প্রযুক্তিগত কারণে কিছু পার্থক্য থাকতে পারে — যেমন মাসিক বিনিয়োগের হিসাব জমি-ক্রয় অন্তর্ভুক্ত করে, যা জিডিপি-তে ধরা হয় না, আবার মজুত পরিবর্তনের তথ্য বাদ পড়ে। তবে এই পার্থক্যগুলো এত বড় বৈষম্য ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট নয়।


‘সত্য গোপন’ না ‘পরিসংখ্যান সংশোধন’?

ব্যাটসনের মতে, এবার হয়তো চীনের মাসিক বিনিয়োগের পরিসংখ্যান বাস্তব অবস্থার তুলনায় কম দেখাচ্ছে। স্থানীয় সরকারগুলো ইনভলিউশন দমনের দায়িত্ব পালন করছে এমন প্রমাণ দিতে গিয়ে হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে বিনিয়োগ কম রিপোর্ট করছে। অতীতে তারা বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে দেখাত, এখন “পানি চেপে(squeezing the water)” সংখ্যাগুলো বাস্তবের কাছাকাছি আনার সুযোগ পেয়েছে।


সরকারের প্রতিক্রিয়া: সীমিত ও সংযত

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো — কেন্দ্রীয় সরকার এ নিয়ে আতঙ্কিত নয়। বড় ধরনের প্রণোদনা না দিয়ে তারা খুবই সংযত নীতি গ্রহণ করেছে। চীনের পরিকল্পনা সংস্থা তিনটি নীতিমালা ব্যাংককে ২৩০০ প্রকল্পে মোট ৫০০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও স্থানীয় সরকারগুলোর বন্ড ইস্যুর সীমা কিছুটা বাড়িয়েছে।


ভবিষ্যতের প্রশ্ন

এখন দুইটি সম্ভাবনা সামনে আসছে:
১. স্থানীয় সরকারগুলো সত্যিই বিনিয়োগ ধসের সঠিক তথ্য দিচ্ছে, আর কেন্দ্রীয় সরকার সমস্যাটিকে অবমূল্যায়ন করছে।
২. অথবা, স্থানীয় সরকারগুলো “ইনভলিউশন সংশোধনের” নামে তথ্য বিকৃত করছে।

দুটি সম্ভাবনার যেকোনো একটি সত্য হলেও, তা চীনের অর্থনীতির জন্য মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।


সারাক্ষণ রিপোর্ট


#চীন #বিনিয়োগ #অর্থনীতি #চীনা_সরকার #অর্থনৈতিক_মন্দা #সারাক্ষণরিপোর্ট