০৫:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
আদানিকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সিদ্ধান্ত ইসলামাবাদ আদালতের বাইরে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ১২, আহত ২৭ গ্লোবাল ফাইন্যান্সের মূল্যায়নে ‘সি’ গ্রেড পেলেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর পাকিস্তান ২৭তম সংশোধনী বিল অনুমোদিত, বাড়বে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাও বিচার বিভাগে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ মোহাম্মদপুরে ছাত্রদল নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানের জামিয়াতে উলেমা-ই-ইসলাম প্রধান মৌলানা ফজলুর রহমান মুদ্রাস্ফীতির সময় টিআইপিএস বন্ডের সীমাবদ্ধতা  আফগান-পাকিস্তান আলোচনায় অচলাবস্থা: সীমান্তে আবারও সংঘাতের আশঙ্কা দুবাই মেট্রোর ব্লু লাইন নির্মাণে নতুন ১০টির বেশি সড়ক পরিবর্তন ‘ঠান্ডায় খাও, জ্বরে উপোস’—প্রচলিত ধারণার পেছনের আসল সত্য

সালউইন নদীর হত্যাযজ্ঞ: টিকে থাকার লড়াইয়ে কারেন জনগোষ্ঠী

মায় সট, থাইল্যান্ড:

প্রায় এক দশক আগেও ৬৫ বছর বয়সী ভুট্টাচাষি স’ নিসে প্রতিদিন মোই নদী থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত মাছ ধরতে পারতেন। কিন্তু আজ ভাগ্য ভালো থাকলে তিনি এক কেজিরও কম মাছ পান। তাঁর মতোই সালউইন নদীর জীবনধারার ওপর নির্ভরশীল অন্তত ১৩টি জাতিগোষ্ঠীর ১ কোটিরও বেশি মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত।

নদীর সংকট: দূষণ ও বাঁধ নির্মাণের হুমকি

সালউইন নদী এশিয়ার দীর্ঘতম অ-বাঁধযুক্ত নদী, যার দৈর্ঘ্য ২,৮০০ কিলোমিটার। এটি চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড হয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা, নদী দূষণ এবং নিয়ন্ত্রণহীন মাছ ধরা নদীটির অস্তিত্বকেই বিপন্ন করে তুলছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) ২০১০ সালে সালউইন নদীকে বিশ্বের ১০টি সবচেয়ে দূষিত নদীর একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এই দূষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রভাব পড়েছে বিশেষ করে কারেন জনগোষ্ঠীর ওপর, যাদের অধিকাংশই কৃষক ও জেলে। তারা নদীর পানি ব্যবহার করে ফসল ফলায় এবং মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে।

কারেন রিভার্স ওয়াচ-এর সমন্বয়ক স’ হিয়া সে বলেন, “কারেন জনগণ সারাজীবন নদীর সঙ্গে সম্পর্কিত। নদীই তাদের জীবন, সংস্কৃতি ও জীবিকার মূল উৎস।”

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থায় চাকরি, আবেদন অনলাইনে

জীববৈচিত্র্যের সংকট

মোই ও সালউইন নদীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছের আবাসস্থল রয়েছে—যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এখনো অনেক প্রজাতি অনাবিষ্কৃত। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক পিটার নং বলেন, “আমরা এখনো এই নদীগুলোর জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে খুব কম জানি। বিশেষ করে কীটপতঙ্গের মতো প্রাণীর প্রায় ৯০ শতাংশ প্রজাতিই এখনো অজানা।”

এই অজানাই কর্তৃপক্ষের জন্য কার্যকর সংরক্ষণ পরিকল্পনা তৈরি করা কঠিন করে তুলছে।

নদীজীবনের হুমকি: দূষণ ও অবৈধ মাছ ধরা

মোই নদী মূলত বৃষ্টিপাত ও বর্জ্যপ্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। বর্ষাকালে নদীর তীর থেকে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ও খাবারের প্যাকেটসহ নানা বর্জ্য পানিতে মিশে যায়।
স’ নিসে বলেন, “প্রায় দুই বছর আগে মিয়ানমারের মিয়াওয়াদ্দি অঞ্চলে দেখেছি, প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে মানুষ নির্বিচারে নদীতে আবর্জনা ফেলছে, এমনকি ময়লার ট্রাকও নদীতে ফেলে দিত।”

এছাড়া, অনেক জেলে নদীতে বিস্ফোরক ও বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করে একসঙ্গে অনেক মাছ মেরে ফেলে, যার ফলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ছোট মাছও মারা যায় এবং প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

পরিবেশবাদী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিভার্স জানায়, বাঁধ নির্মাণের কারণে নদীর মাছের বাস্তুসংস্থান ভেঙে পড়ছে এবং প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।

আইন প্রয়োগে ঢিলেঢালা মনোভাব

যদিও থাই সরকার বর্জ্য ফেলার জন্য ১০,০০০ বাথ (প্রায় ৪০০ সিঙ্গাপুর ডলার) পর্যন্ত জরিমানার বিধান রেখেছে, কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ—এসব আইন কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয় না।

স’ হিয়া সে বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাতের কারণে পরিবেশগত বিষয়গুলো থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার—উভয় দেশেরই জাতীয় অগ্রাধিকারের বাইরে চলে গেছে। অথচ নদীটাই আমাদের ঘর। যদি নদী ধ্বংস হয়, আমরাও ধ্বংস হবো।”

বাঁধ প্রকল্প ও বাস্তুচ্যুতি

গত দুই দশক ধরে চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সালউইন নদীতে জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। থাইল্যান্ডের ইলেকট্রিসিটি জেনারেটিং অথরিটি ও চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো মোট সাতটি বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়, যার একটি—হাটগি বাঁধ—মিয়ানমারের কারেন রাজ্যের হপান জেলায় স্থাপিত হওয়ার কথা ছিল।

২০০৬ সালে ঘোষিত এই প্রকল্পের কাজ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও স্থানীয়দের প্রতিরোধের কারণে থমকে গেছে। ২০১৬ সালে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড ফোর্স প্রস্তাবিত বাঁধ এলাকার কাছাকাছি গ্রামগুলো থেকে প্রায় ৫,০০০ কারেন অধিবাসীকে উচ্ছেদ করে।

২০২৩ সালে গ্রামবাসীরা সালউইন ওয়াটার ডাইভারশন প্রকল্প বন্ধের জন্য মামলা দায়ের করে, যা মোই ও ইউয়াম নদীর পানি থাইল্যান্ডের ধানক্ষেতে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

প্রতিবাদ ও নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব

২০১৬ সাল থেকে কারেন স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক গ্রুপ প্রতিবছর ১৪ মার্চ—আন্তর্জাতিক নদী রক্ষা দিবসে—বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

সংগঠনের কর্মকর্তা জোসেফ লাহ বলেন, “আমাদের মানুষরা ধান, ডাল ও সবজি চাষ করে। যদি নদীর প্রবাহ বাঁধ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়, তবে কৃষি ও জীবিকা দুই দিকেই ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।”

ছাত্ররা শুধু প্রতিবাদ নয়, বরং নদী পরিষ্কার অভিযান, বৃক্ষরোপণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমেও পরিবেশ রক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তবে লাহ স্বীকার করেন, “মানুষের বর্জ্য ফেলার অভ্যাস বদলানো কঠিন। তারা যা করে আসছে, সেটাই চালিয়ে যাচ্ছে।”

ভবিষ্যতের আশা

কারেন রিভার্স ওয়াচের স’ হিয়া সে মনে করেন, “নদীগুলোকে মুক্তভাবে প্রবাহিত হতে দিতে হবে—এটা সম্ভব তখনই, যখন থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার যৌথভাবে কাজ করবে।”

তিনি আরও বলেন, “দায়িত্বশীল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও টেকসই মাছ ধরার বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা বাড়ানো জরুরি। আইনগুলোও কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও একটি সুস্থ নদী পায়।”

 

#সালউইন_নদী #কারেন_জনগোষ্ঠী #পরিবেশসংরক্ষণ #দূষণ #বাঁধবিরোধী_আন্দোলন #নদীর_অস্তিত্ব #টেকসই_উন্নয়ন   

জনপ্রিয় সংবাদ

আদানিকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের সিদ্ধান্ত

সালউইন নদীর হত্যাযজ্ঞ: টিকে থাকার লড়াইয়ে কারেন জনগোষ্ঠী

০৩:২৮:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

মায় সট, থাইল্যান্ড:

প্রায় এক দশক আগেও ৬৫ বছর বয়সী ভুট্টাচাষি স’ নিসে প্রতিদিন মোই নদী থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত মাছ ধরতে পারতেন। কিন্তু আজ ভাগ্য ভালো থাকলে তিনি এক কেজিরও কম মাছ পান। তাঁর মতোই সালউইন নদীর জীবনধারার ওপর নির্ভরশীল অন্তত ১৩টি জাতিগোষ্ঠীর ১ কোটিরও বেশি মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত।

নদীর সংকট: দূষণ ও বাঁধ নির্মাণের হুমকি

সালউইন নদী এশিয়ার দীর্ঘতম অ-বাঁধযুক্ত নদী, যার দৈর্ঘ্য ২,৮০০ কিলোমিটার। এটি চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড হয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা, নদী দূষণ এবং নিয়ন্ত্রণহীন মাছ ধরা নদীটির অস্তিত্বকেই বিপন্ন করে তুলছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) ২০১০ সালে সালউইন নদীকে বিশ্বের ১০টি সবচেয়ে দূষিত নদীর একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এই দূষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রভাব পড়েছে বিশেষ করে কারেন জনগোষ্ঠীর ওপর, যাদের অধিকাংশই কৃষক ও জেলে। তারা নদীর পানি ব্যবহার করে ফসল ফলায় এবং মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে।

কারেন রিভার্স ওয়াচ-এর সমন্বয়ক স’ হিয়া সে বলেন, “কারেন জনগণ সারাজীবন নদীর সঙ্গে সম্পর্কিত। নদীই তাদের জীবন, সংস্কৃতি ও জীবিকার মূল উৎস।”

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থায় চাকরি, আবেদন অনলাইনে

জীববৈচিত্র্যের সংকট

মোই ও সালউইন নদীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছের আবাসস্থল রয়েছে—যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এখনো অনেক প্রজাতি অনাবিষ্কৃত। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক পিটার নং বলেন, “আমরা এখনো এই নদীগুলোর জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে খুব কম জানি। বিশেষ করে কীটপতঙ্গের মতো প্রাণীর প্রায় ৯০ শতাংশ প্রজাতিই এখনো অজানা।”

এই অজানাই কর্তৃপক্ষের জন্য কার্যকর সংরক্ষণ পরিকল্পনা তৈরি করা কঠিন করে তুলছে।

নদীজীবনের হুমকি: দূষণ ও অবৈধ মাছ ধরা

মোই নদী মূলত বৃষ্টিপাত ও বর্জ্যপ্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। বর্ষাকালে নদীর তীর থেকে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ও খাবারের প্যাকেটসহ নানা বর্জ্য পানিতে মিশে যায়।
স’ নিসে বলেন, “প্রায় দুই বছর আগে মিয়ানমারের মিয়াওয়াদ্দি অঞ্চলে দেখেছি, প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে মানুষ নির্বিচারে নদীতে আবর্জনা ফেলছে, এমনকি ময়লার ট্রাকও নদীতে ফেলে দিত।”

এছাড়া, অনেক জেলে নদীতে বিস্ফোরক ও বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করে একসঙ্গে অনেক মাছ মেরে ফেলে, যার ফলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ছোট মাছও মারা যায় এবং প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

পরিবেশবাদী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিভার্স জানায়, বাঁধ নির্মাণের কারণে নদীর মাছের বাস্তুসংস্থান ভেঙে পড়ছে এবং প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।

আইন প্রয়োগে ঢিলেঢালা মনোভাব

যদিও থাই সরকার বর্জ্য ফেলার জন্য ১০,০০০ বাথ (প্রায় ৪০০ সিঙ্গাপুর ডলার) পর্যন্ত জরিমানার বিধান রেখেছে, কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ—এসব আইন কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয় না।

স’ হিয়া সে বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাতের কারণে পরিবেশগত বিষয়গুলো থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার—উভয় দেশেরই জাতীয় অগ্রাধিকারের বাইরে চলে গেছে। অথচ নদীটাই আমাদের ঘর। যদি নদী ধ্বংস হয়, আমরাও ধ্বংস হবো।”

বাঁধ প্রকল্প ও বাস্তুচ্যুতি

গত দুই দশক ধরে চীন, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সালউইন নদীতে জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। থাইল্যান্ডের ইলেকট্রিসিটি জেনারেটিং অথরিটি ও চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো মোট সাতটি বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়, যার একটি—হাটগি বাঁধ—মিয়ানমারের কারেন রাজ্যের হপান জেলায় স্থাপিত হওয়ার কথা ছিল।

২০০৬ সালে ঘোষিত এই প্রকল্পের কাজ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও স্থানীয়দের প্রতিরোধের কারণে থমকে গেছে। ২০১৬ সালে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড ফোর্স প্রস্তাবিত বাঁধ এলাকার কাছাকাছি গ্রামগুলো থেকে প্রায় ৫,০০০ কারেন অধিবাসীকে উচ্ছেদ করে।

২০২৩ সালে গ্রামবাসীরা সালউইন ওয়াটার ডাইভারশন প্রকল্প বন্ধের জন্য মামলা দায়ের করে, যা মোই ও ইউয়াম নদীর পানি থাইল্যান্ডের ধানক্ষেতে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

প্রতিবাদ ও নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব

২০১৬ সাল থেকে কারেন স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক গ্রুপ প্রতিবছর ১৪ মার্চ—আন্তর্জাতিক নদী রক্ষা দিবসে—বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

সংগঠনের কর্মকর্তা জোসেফ লাহ বলেন, “আমাদের মানুষরা ধান, ডাল ও সবজি চাষ করে। যদি নদীর প্রবাহ বাঁধ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়, তবে কৃষি ও জীবিকা দুই দিকেই ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।”

ছাত্ররা শুধু প্রতিবাদ নয়, বরং নদী পরিষ্কার অভিযান, বৃক্ষরোপণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমেও পরিবেশ রক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তবে লাহ স্বীকার করেন, “মানুষের বর্জ্য ফেলার অভ্যাস বদলানো কঠিন। তারা যা করে আসছে, সেটাই চালিয়ে যাচ্ছে।”

ভবিষ্যতের আশা

কারেন রিভার্স ওয়াচের স’ হিয়া সে মনে করেন, “নদীগুলোকে মুক্তভাবে প্রবাহিত হতে দিতে হবে—এটা সম্ভব তখনই, যখন থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার যৌথভাবে কাজ করবে।”

তিনি আরও বলেন, “দায়িত্বশীল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও টেকসই মাছ ধরার বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা বাড়ানো জরুরি। আইনগুলোও কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও একটি সুস্থ নদী পায়।”

 

#সালউইন_নদী #কারেন_জনগোষ্ঠী #পরিবেশসংরক্ষণ #দূষণ #বাঁধবিরোধী_আন্দোলন #নদীর_অস্তিত্ব #টেকসই_উন্নয়ন