আফ্রিকা উন্নতি করছে এবং বিশ্বকে অবশ্যই আফ্রিকার দিকে ফিরে তাকাতে হবে। বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ইউরোপীয় দেশগুলি আফ্রিকার প্রতি তাদের সাহায্য, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ হ্রাস করছে, যা একটি বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
আফ্রিকার উন্নয়ন এবং পশ্চিমা বিশ্ব
গানার আক্রা শহরের কাওমে নক্রুমা স্মৃতিস্তম্ভ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা কাওমে নক্রুমাকে সম্মানিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই স্মৃতিস্তম্ভের মাধ্যমে আফ্রিকার অতীতকে অতিক্রম করতে আফ্রিকান ডায়াস্পোরা’র বড় ভূমিকা এবং আফ্রিকাকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নতুনভাবে উপস্থাপন করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
লেখক এবং প্রাক্তন সাংবাদিক হাওয়ার্ড ফ্রেঞ্চ আফ্রিকার বর্তমান পরিস্থিতি এবং আফ্রিকার ভবিষ্যতের জন্য কাওমে নক্রুমার ভাবনাগুলিকে কেন্দ্র করে একটি বই লিখেছেন। তিনি তার বই “দ্য সেকেন্ড এম্যানসিপেশন: নক্রুমা, প্যান-আফ্রিকানিজম, এবং গ্লোবাল ব্ল্যাকনেস অ্যাট হাই টাইড” এ আফ্রিকার ও ব্ল্যাক ডায়াস্পোরা’র ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকার সাথে সম্পর্ক

হাওয়ার্ড ফ্রেঞ্চ বলেন, আফ্রিকার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে এই সম্পর্ক হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাব-সাহারান আফ্রিকার সাথে সম্পর্কের বিশ্লেষণে ফ্রেঞ্চ বলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মানবিক সহায়তা, অর্থনীতি এবং সংঘাতের তিনটি মূল ক্ষেত্র ছিল। বর্তমানে, মানবিক সহায়তা এবং শান্তি উদ্যোগগুলো হ্রাস পেয়েছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কগুলোও বেশি একত্রীকৃত হয়ে উঠেছে।
কাওমে নক্রুমার আফ্রিকান প্যান-আফ্রিকানিজম দৃষ্টিভঙ্গি
কাওমে নক্রুমা, গানের প্রথম প্রেসিডেন্ট, আফ্রিকার স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে প্যান-আফ্রিকানিজমের জন্য একটি বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গি প্রবর্তন করেছিলেন। তার জীবনের অঙ্গীকার ছিল একটি বৃহত্তর আফ্রিকান মহাদেশের ধারণা, যেখানে সব আফ্রিকান রাষ্ট্র একত্রিত হয়ে সমৃদ্ধি অর্জন করবে।
নক্রুমা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে তার অভিজ্ঞতা থেকে আফ্রিকার ডায়াস্পোরা’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বুঝেছিলেন। তিনি জানতেন, ব্ল্যাক আমেরিকানদের আফ্রিকার প্রতি সমর্থন বিশ্বের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করতে পারে। ১৯৫৮ সালে নক্রুমা যখন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করেন, তখন তিনি আফ্রিকার প্রতি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সক্ষম হন।
আফ্রিকার ভবিষ্যত এবং বিশ্বব্যাপী সম্পর্ক

আফ্রিকা ২০৭০ সালের মধ্যে তার জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে তিন বিলিয়ন হয়ে যাবে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব ফেলবে। আফ্রিকার শহরগুলির দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে, যা বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করবে, কিন্তু যদি আফ্রিকার উন্নয়ন অব্যাহত না থাকে, তবে এই শহরগুলোতে বড় ধরনের দারিদ্র্য ও বস্তি সৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি, আফ্রিকার নেতাদের সামনে এই মুহূর্তে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে, তারা যদি একত্রিত হয়ে আফ্রিকার অভ্যন্তরে সহযোগিতা বাড়িয়ে বাণিজ্য, শক্তির উৎপাদন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করেন, তাহলে আফ্রিকা তার গ্লোবাল ভূমিকায় নতুন দিগন্ত খুলতে পারবে।
নক্রুমার দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভবিষ্যত
ফ্রেঞ্চ বলেন, “আফ্রিকার নেতারা যদি নক্রুমার পথ অনুসরণ করেন এবং তাদের নিজস্ব সম্পদ একত্রিত করেন, তবে তারা আফ্রিকার একত্রিত ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারবেন।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, আফ্রিকান ডায়াস্পোরা’র সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা আফ্রিকার ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শেষে, তিনি বলেন, আফ্রিকার উন্নয়নে বিশ্বের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, না হলে আফ্রিকার সমস্যাগুলো শেষ পর্যন্ত বিশ্বের উপর প্রভাব ফেলবে।
#আফ্রিকা #গ্লোবাল_অর্থনীতি #প্যানআফ্রিকানিজম #হাওয়ার্ড_ফ্রেঞ্চ #আফ্রিকার_ভবিষ্যত #বিশ্ব_সম্পর্ক #আফ্রিকার_নেতৃত্ব
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















