ডিজিটাল জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলাচ্ছে পাওয়ার ব্যাংক
কিছু বছর আগেও পাওয়ার ব্যাংককে অনেকেই বাড়তি গ্যাজেট মনে করতেন, এখন তা প্রায় অপরিহার্য। অফিসযাত্রী, শিক্ষার্থী, ডেলিভারি–রাইডার থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী বাস–ট্রেনে থাকা সবাই দিনের বড় অংশ কাটাচ্ছে স্মার্টফোনে—টাকা দেওয়া, টিকেট দেখানো, লোকেশন দেখা, ছবি তোলা আর ভিডিও দেখায়। ফলে ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলে শুধু ফোন নয়, পুরো দিনের কাজই ঝুলে যেতে পারে। নতুন গাইডে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক পাওয়ার ব্যাংকগুলো আগের তুলনায় বেশি ক্যাপাসিটি, দ্রুত চার্জিং আর একাধিক পোর্ট দিয়েও আকারে পাতলা ও হালকা হচ্ছে।
বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন মিলছে নানা ব্যবহারকারীর কথা ভেবে। দীর্ঘ যাত্রায় থাকা পর্যটক বা আউটডোর ইভেন্টে যাওয়া তরুণদের জন্য বড় ক্যাপাসিটির “ইটের মতো” পাওয়ার ব্যাংক জনপ্রিয়। অন্যদিকে অফিস–গামী বা ক্যাফে–কর্মীদের জন্য ছোট আকারের, পকেটে রাখা যায় এমন ইউনিট বেশি কার্যকর, যেগুলো দিয়ে দিনে এক–দুবার দ্রুত চার্জ দেওয়া যায়। অনেক ডিভাইস এখন ল্যাপটপ–সমর্থনযোগ্য ইউএসবি–সি পাওয়ার ডেলিভারি আউটপুট দিচ্ছে, ফলে শিক্ষার্থী বা ফ্রিল্যান্সাররা এক ব্যাগে ফোন–ট্যাব–ল্যাপটপ তিনটিই চালাতে পারছেন। নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়ায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ওভার–কারেন্ট প্রটেকশন আর সার্টিফায়েড সেলের মতো ফিচারও এখন অধিকাংশ ভালো ব্র্যান্ডে বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে।
ঘনবসতিপূর্ণ শহরে কোন পাওয়ার ব্যাংকটা বেশি ‘প্র্যাকটিক্যাল’
ঢাকা, ব্যাংকক কিংবা ম্যানিলার মতো যানজট আর ভিড়–ভাট্টায় ভরা শহরে প্রশ্নটি এখন “পাওয়ার ব্যাংক লাগবে কি লাগবে না” নয়, বরং “কোনটা নিলে ভালো হবে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগে ভাবতে হবে দিনে গড়ে কতবার ফোন পুরোপুরি চার্জ করতে হয়, আর তার বাইরে ইয়ারফোন, ক্যামেরা বা গেমিং কনসোলের মতো অতিরিক্ত ডিভাইস চার্জ দেবেন কিনা। যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য বিমানে অনুমোদিত ক্ষমতা ও পাতলা ডিজাইন গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সহজেই ল্যাপটপ–ব্যাগে রাখা যায়। ভিড়ভাট্টার গণপরিবহনে চলাফেরা করা ব্যবহারকারীরা আবার বিল্ট–ইন ক্যাবল–ওয়ালা মডেল পছন্দ করেন, যাতে আলাদা তার খুঁজতে না হয়।
দামের দিক থেকে এখনো বাজেট চিন্তা বড় বিষয়, তবে সাম্প্রতিক তালিকায় দেখা যাচ্ছে—মাঝারি দামের পাওয়ার ব্যাংকেই এখন বেশ ভালো মানের সেল, দ্রুত চার্জিং আর টেকসই বডি পাওয়া যাচ্ছে। ইউএসবি–সি পিডি বা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিজস্ব ফাস্ট–চার্জ প্রোটোকল এখন ধীরে ধীরে নিচের দামের মডেলেও চলে এসেছে, ফলে ব্যবহারকারীদের কম সময় প্লাগে ঝুলে থাকতে হচ্ছে। যেহেতু এখন রাইড–শেয়ার, খাবার অর্ডার, মোবাইল ব্যাংকিং—সব কিছুই অ্যাপের ওপর নির্ভরশীল, তাই পাওয়ার ব্যাংক অনেকটা অদৃশ্য ডিজিটাল অবকাঠামোর অংশ হয়ে উঠছে। শহরের অনেকের কাছেই এখন ব্যাগে একটি পাওয়ার ব্যাংক থাকা মানে ঠিক পকেটে চাবি বা মানিব্যাগ রাখার মতো স্বাভাবিক অভ্যাস।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















