০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশে ইস্পোর্টসের উত্থান: গেমার তরুণরা গড়ছে নতুন ক্যারিয়ার প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত কেন সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে? স্ট্রেঞ্জার থিংস ৫ ইভেন্টে ফটোগ্রাফারকে ‘ইউ স্মাইল’—মিলি ববি ব্রাউনের এক ঝটকা জবাব ভাইরাল অনলাইন স্ক্যাম এখন ডকুমেন্টারির গল্প নয়—রোলিং স্টোন জানালো ঠকবে কি না, বুঝবেন কীভাবে কানাডা–মার্কিন সীমান্তে আরও তেল নিয়ে যেতে এনারব্রিজের ১.৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন পরিকল্পনা মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছুটির দিনেও বিষাক্ত বাতাসে ঢাকা, রাজধানীবাসীর ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যাওয়া অস্বস্তি এভরিওয়ান’স আ স্টার!’–এ বয়ব্যান্ড তকমা উল্টে দিল ৫ সেকেন্ডস অব সামার

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র–ড্রোন হামলায় কিয়েভে ৬ জন নিহত, বহু আহত

কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী কিয়েভে রাতের তান্ডব

রাশিয়া আবারও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের ওপর ভোরের আগে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও ৩৫ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণে একাধিক উঁচু আবাসিক ভবনের দেয়াল ছিঁড়ে গেছে, আগুন ধরে গেছে গাড়ি ও বাসাবাড়িতে, আর বাসিন্দারা দৌড়ে নেমেছেন মেট্রোস্টেশনসহ বিভিন্ন ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানিয়েছেন, শহরের একাধিক এলাকায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে গেছে এবং রাতভর উদ্ধারকর্মীরা ধসে পড়া অংশ থেকে মানুষ বের করে আনতে ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেছেন। আহতদের মধ্যে এক গর্ভবতী নারীসহ শিশুদের থাকার খবর স্থানীয় হাসপাতালের সূত্রে পাওয়া গেছে, যা আবারও দেখিয়েছে—এই যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকেরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া একযোগে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও একাধিক ড্রোন ব্যবহার করেছে এবং মূল লক্ষ্য ছিল রাজধানী কিয়েভ; তবে দক্ষিণের ওডেসা আর পূর্ব–উত্তরের শিল্পনগরী খারকিভও হামলার শিকার হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করলেও সবকিছু থামানো সম্ভব হয়নি; কয়েকটি সরাসরি আবাসিক ভবনে আঘাত হানায় জানালা ভেঙে গেছে, বারান্দা ভেঙে পড়েছে, ভেতরে থাকা মানুষজন আতংকে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, প্রথমে সাইরেনের শব্দ, তারপর একের পর এক বিস্ফোরণ আর পরে ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধে ঢেকে যায় পুরো আশপাশ। আগের বছরগুলোর বড় বড় হামলার স্মৃতি আবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে—যখন শীতকালে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে শহরজুড়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ ভেঙে পড়েছিল।

শক্তি অবকাঠামোকে লক্ষ্য, বাড়ছে শীতের আশঙ্কা

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের নতুন হামলা রাশিয়ার বড় একটি পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য শীতের আগে আকাশ প্রতিরক্ষা দুর্বল করা এবং ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামোকে ভেঙে ফেলা। আগের শীতেও একের পর এক পাওয়ার প্ল্যান্ট, সাবস্টেশন ও হিটিং নেটওয়ার্কে আঘাতের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঠান্ডায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। এবারও কিয়েভের আশপাশের কয়েকটি জ্বালানি স্থাপনার কাছে আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে, যদিও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, জরুরি মেরামতকাজের কারণে এখনও পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি লোডশেডিং এড়ানো গেছে।

একই সময়ে ফ্রন্টলাইনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য গোলাবারুদ ও প্রতিরক্ষা সহায়তা জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়ছে, কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর নতুন সহায়তা প্যাকেজ অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ভেতর আটকে আছে। জেলেনস্কি আবারও অতিরিক্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও মিসাইল–বিধ্বংসী গোলার দাবি জানিয়ে বলেছেন, প্রতিটি সফল প্রতিরোধ শুধু শহরকে রক্ষা করে না, মানুষের ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতেও সাহায্য করে। সাধারণ কিয়েভবাসীর জন্য তাৎক্ষণিক ভাবনা খুবই বাস্তব—কোথায় কাছের আশ্রয়কেন্দ্র, মোবাইলে সতর্কবার্তা এলে কত দ্রুত নেমে যেতে পারবে, আর প্রতিটি রাত কখন আবার নতুন বিস্ফোরণের শব্দে ভেঙে যেতে পারে সেই দুশ্চিন্তা।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে ইস্পোর্টসের উত্থান: গেমার তরুণরা গড়ছে নতুন ক্যারিয়ার

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র–ড্রোন হামলায় কিয়েভে ৬ জন নিহত, বহু আহত

০৩:১৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী কিয়েভে রাতের তান্ডব

রাশিয়া আবারও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের ওপর ভোরের আগে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও ৩৫ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণে একাধিক উঁচু আবাসিক ভবনের দেয়াল ছিঁড়ে গেছে, আগুন ধরে গেছে গাড়ি ও বাসাবাড়িতে, আর বাসিন্দারা দৌড়ে নেমেছেন মেট্রোস্টেশনসহ বিভিন্ন ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানিয়েছেন, শহরের একাধিক এলাকায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে গেছে এবং রাতভর উদ্ধারকর্মীরা ধসে পড়া অংশ থেকে মানুষ বের করে আনতে ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেছেন। আহতদের মধ্যে এক গর্ভবতী নারীসহ শিশুদের থাকার খবর স্থানীয় হাসপাতালের সূত্রে পাওয়া গেছে, যা আবারও দেখিয়েছে—এই যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকেরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া একযোগে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও একাধিক ড্রোন ব্যবহার করেছে এবং মূল লক্ষ্য ছিল রাজধানী কিয়েভ; তবে দক্ষিণের ওডেসা আর পূর্ব–উত্তরের শিল্পনগরী খারকিভও হামলার শিকার হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করলেও সবকিছু থামানো সম্ভব হয়নি; কয়েকটি সরাসরি আবাসিক ভবনে আঘাত হানায় জানালা ভেঙে গেছে, বারান্দা ভেঙে পড়েছে, ভেতরে থাকা মানুষজন আতংকে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, প্রথমে সাইরেনের শব্দ, তারপর একের পর এক বিস্ফোরণ আর পরে ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধে ঢেকে যায় পুরো আশপাশ। আগের বছরগুলোর বড় বড় হামলার স্মৃতি আবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে—যখন শীতকালে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে শহরজুড়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ ভেঙে পড়েছিল।

শক্তি অবকাঠামোকে লক্ষ্য, বাড়ছে শীতের আশঙ্কা

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের নতুন হামলা রাশিয়ার বড় একটি পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য শীতের আগে আকাশ প্রতিরক্ষা দুর্বল করা এবং ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামোকে ভেঙে ফেলা। আগের শীতেও একের পর এক পাওয়ার প্ল্যান্ট, সাবস্টেশন ও হিটিং নেটওয়ার্কে আঘাতের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঠান্ডায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। এবারও কিয়েভের আশপাশের কয়েকটি জ্বালানি স্থাপনার কাছে আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে, যদিও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, জরুরি মেরামতকাজের কারণে এখনও পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি লোডশেডিং এড়ানো গেছে।

একই সময়ে ফ্রন্টলাইনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য গোলাবারুদ ও প্রতিরক্ষা সহায়তা জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়ছে, কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর নতুন সহায়তা প্যাকেজ অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ভেতর আটকে আছে। জেলেনস্কি আবারও অতিরিক্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও মিসাইল–বিধ্বংসী গোলার দাবি জানিয়ে বলেছেন, প্রতিটি সফল প্রতিরোধ শুধু শহরকে রক্ষা করে না, মানুষের ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতেও সাহায্য করে। সাধারণ কিয়েভবাসীর জন্য তাৎক্ষণিক ভাবনা খুবই বাস্তব—কোথায় কাছের আশ্রয়কেন্দ্র, মোবাইলে সতর্কবার্তা এলে কত দ্রুত নেমে যেতে পারবে, আর প্রতিটি রাত কখন আবার নতুন বিস্ফোরণের শব্দে ভেঙে যেতে পারে সেই দুশ্চিন্তা।