০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে উত্তরবাংলার জীবন: মাটি, ঘর আর স্বপ্ন একসঙ্গে হারাচ্ছে মানুষ বাংলাদেশে ইস্পোর্টসের উত্থান: গেমার তরুণরা গড়ছে নতুন ক্যারিয়ার প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত কেন সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে? স্ট্রেঞ্জার থিংস ৫ ইভেন্টে ফটোগ্রাফারকে ‘ইউ স্মাইল’—মিলি ববি ব্রাউনের এক ঝটকা জবাব ভাইরাল অনলাইন স্ক্যাম এখন ডকুমেন্টারির গল্প নয়—রোলিং স্টোন জানালো ঠকবে কি না, বুঝবেন কীভাবে কানাডা–মার্কিন সীমান্তে আরও তেল নিয়ে যেতে এনারব্রিজের ১.৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন পরিকল্পনা মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছুটির দিনেও বিষাক্ত বাতাসে ঢাকা, রাজধানীবাসীর ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যাওয়া অস্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ পারমাণবিক সাবমেরিন পরিকল্পনা আলোচনায়

যুক্ত মিত্রতার নতুন সামরিক মাত্রা
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে নীরবে আলোচনা করছে, যা দুই দেশের নিরাপত্তা জোটকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। অক্টোবরের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও লি জে মিয়ং ঘোষণায় সিউলকে নিজস্ব পারমাণবিক সাবমেরিন বানানোর সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন। এরপর থেকে আলোচনাটি কেবল অনুমতি নয়, বরং দুই নৌবাহিনীর জন্য যৌথ নির্মাণের বৃহত্তর পরিকল্পনায় রূপ নিয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলছে। তবে প্রকাশিত যৌথ তথ্যপত্রে এ বিষয়টি অল্প কথায় উল্লেখ থাকায় বোঝা যায়, রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে এখনও খুঁটিনাটি প্রকাশ করা হচ্ছে না।

এই সম্ভাব্য প্রকল্পের পেছনে আছে দুই দেশের কৌশলগত হিসাব। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ও জাপান–তাইওয়ান ঘিরে উত্তেজনা বৃদ্ধির মুখে দক্ষিণ কোরিয়া বহুদিন ধরেই উন্নত সাবমেরিনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য, মিত্র দেশের সঙ্গে উচ্চপ্রযুক্তির নৌজাহাজ নির্মাণ মানে ব্যয় ভাগাভাগি, সরবরাহ শৃঙ্খল বিস্তার ও যৌথ অভিযানের সক্ষমতা বাড়ানো। কিন্তু পারমাণবিক জ্বালানির উৎস, প্রযুক্তি হস্তান্তর, তৃতীয় দেশের প্রতিক্রিয়া এবং দুই দেশের সংসদীয় সমর্থন—সব মিলিয়ে পথটি মোটেও সহজ নয়। সমালোচকরা ইতিমধ্যে ব্যয়ের চাপ, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও অনুপ্রবেশ রোধে সুরক্ষা কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পথ
যৌথ পারমাণবিক সাবমেরিন পরিকল্পনা বাস্তব রূপ পেলে এর প্রভাব পড়বে সমগ্র অঞ্চলে। জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও অন্য মার্কিন মিত্ররা নিজেদের নিরাপত্তা নীতিতে কী ধরনের সমন্বয় আনবে, তা এখনই আলোচনায় আছে। চীন ও উত্তর কোরিয়া এ ধরনের উদ্যোগকে নতুন সামরিক ব্লক গঠনের অংশ হিসেবে তুলে ধরে আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। বেইজিং বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক জোট ব্যবস্থা ও চুক্তিগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখছে; নতুন সাবমেরিন সহযোগিতা সে উদ্বেগ আরও বাড়াবে।

দেশের ভেতরেও দুই সরকারকে নানা ভারসাম্য সামলাতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিরক্ষা বাজেট, করদাতার চাপ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক—সব বিষয় বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আবার একাধিক যুদ্ধক্ষেত্র ও নিরাপত্তা অঙ্গীকারের মধ্যে অগ্রাধিকার বাছাইয়ের চাপ আছে, যেখানে কংগ্রেস বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও স্বচ্ছতা নিয়ে কড়া নজর রাখছে। বিশ্লেষকদের মতে, শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটি হয়তো পূর্ণ যৌথ নির্মাণের বদলে প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রযুক্তিগত সহায়তার মতো ধাপে বাস্তবায়িত হতে পারে। তারপরও আলোচনার শুরুই ইঙ্গিত দিচ্ছে—উত্তর–পূর্ব এশিয়ায় শক্তির হিসাব দ্রুত পাল্টাচ্ছে, আর সেই নতুন মানচিত্রে পানির নিচের শক্তিকেই মূল ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নদী ভাঙনে বদলে যাচ্ছে উত্তরবাংলার জীবন: মাটি, ঘর আর স্বপ্ন একসঙ্গে হারাচ্ছে মানুষ

যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ পারমাণবিক সাবমেরিন পরিকল্পনা আলোচনায়

০৩:২৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

যুক্ত মিত্রতার নতুন সামরিক মাত্রা
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে নীরবে আলোচনা করছে, যা দুই দেশের নিরাপত্তা জোটকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। অক্টোবরের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও লি জে মিয়ং ঘোষণায় সিউলকে নিজস্ব পারমাণবিক সাবমেরিন বানানোর সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন। এরপর থেকে আলোচনাটি কেবল অনুমতি নয়, বরং দুই নৌবাহিনীর জন্য যৌথ নির্মাণের বৃহত্তর পরিকল্পনায় রূপ নিয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলছে। তবে প্রকাশিত যৌথ তথ্যপত্রে এ বিষয়টি অল্প কথায় উল্লেখ থাকায় বোঝা যায়, রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে এখনও খুঁটিনাটি প্রকাশ করা হচ্ছে না।

এই সম্ভাব্য প্রকল্পের পেছনে আছে দুই দেশের কৌশলগত হিসাব। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ও জাপান–তাইওয়ান ঘিরে উত্তেজনা বৃদ্ধির মুখে দক্ষিণ কোরিয়া বহুদিন ধরেই উন্নত সাবমেরিনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য, মিত্র দেশের সঙ্গে উচ্চপ্রযুক্তির নৌজাহাজ নির্মাণ মানে ব্যয় ভাগাভাগি, সরবরাহ শৃঙ্খল বিস্তার ও যৌথ অভিযানের সক্ষমতা বাড়ানো। কিন্তু পারমাণবিক জ্বালানির উৎস, প্রযুক্তি হস্তান্তর, তৃতীয় দেশের প্রতিক্রিয়া এবং দুই দেশের সংসদীয় সমর্থন—সব মিলিয়ে পথটি মোটেও সহজ নয়। সমালোচকরা ইতিমধ্যে ব্যয়ের চাপ, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও অনুপ্রবেশ রোধে সুরক্ষা কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পথ
যৌথ পারমাণবিক সাবমেরিন পরিকল্পনা বাস্তব রূপ পেলে এর প্রভাব পড়বে সমগ্র অঞ্চলে। জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও অন্য মার্কিন মিত্ররা নিজেদের নিরাপত্তা নীতিতে কী ধরনের সমন্বয় আনবে, তা এখনই আলোচনায় আছে। চীন ও উত্তর কোরিয়া এ ধরনের উদ্যোগকে নতুন সামরিক ব্লক গঠনের অংশ হিসেবে তুলে ধরে আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। বেইজিং বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক জোট ব্যবস্থা ও চুক্তিগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখছে; নতুন সাবমেরিন সহযোগিতা সে উদ্বেগ আরও বাড়াবে।

দেশের ভেতরেও দুই সরকারকে নানা ভারসাম্য সামলাতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিরক্ষা বাজেট, করদাতার চাপ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক—সব বিষয় বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আবার একাধিক যুদ্ধক্ষেত্র ও নিরাপত্তা অঙ্গীকারের মধ্যে অগ্রাধিকার বাছাইয়ের চাপ আছে, যেখানে কংগ্রেস বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও স্বচ্ছতা নিয়ে কড়া নজর রাখছে। বিশ্লেষকদের মতে, শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটি হয়তো পূর্ণ যৌথ নির্মাণের বদলে প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রযুক্তিগত সহায়তার মতো ধাপে বাস্তবায়িত হতে পারে। তারপরও আলোচনার শুরুই ইঙ্গিত দিচ্ছে—উত্তর–পূর্ব এশিয়ায় শক্তির হিসাব দ্রুত পাল্টাচ্ছে, আর সেই নতুন মানচিত্রে পানির নিচের শক্তিকেই মূল ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।