ভারত ও রাশিয়া আগামী মাসে মস্কো–দিল্লি শীর্ষ সম্মেলনের আগে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, উদ্যোগ ও প্রকল্প চূড়ান্ত করার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সোমবার মস্কোতে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকে এই তথ্য জানান।
সভাপতি পুতিনের সফর সামনে রেখে গুরুত্ব বাড়ল বৈঠকের
জয়শঙ্কর বলেন, পুতিনের সফর যতই ঘনিয়ে আসছে, এই বৈঠক ততই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তিনি জানান, দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু চুক্তি ও প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে এবং শিগগিরই এগুলোর চূড়ান্তকরণ আশা করা হচ্ছে। এসব উদ্যোগ দুই দেশের বিশেষ ও বিশেষাধিকারের কৌশলগত অংশীদারত্বে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ২৩তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ভারতে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মার্কিন চাপের মধ্যেও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত: ভারত
জয়শঙ্কর বর্তমানে সাংহাই কোঅপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) সরকারপ্রধানদের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাশিয়া থেকে জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা কমানোর জন্য ভারতের ওপর নতুন করে চাপ বাড়ানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার করছেন।
সম্প্রতি ভারত রাশিয়া থেকে ক্রুড তেল আমদানি কিছুটা কমিয়েছে বলে জানা গেছে। একই দিন ভারত ঘোষণা করে, তাদের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২.২ এমটিপিএ এলপিজি আমদানির একটি এক বছরের চুক্তি সম্পন্ন করেছে।
তবুও জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন, ভারত–রাশিয়া সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতার প্রতীক। এই সম্পর্কের বিকাশ কেবল দুই দেশের স্বার্থেই নয়, বরং বৈশ্বিক স্বার্থেও গুরুত্বপূর্ণ।

ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা
জয়শঙ্কর–ল্যাভরভ বৈঠকে চলমান বৈশ্বিক সংকট নিয়েও খোলামেলা আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা এবং আফগানিস্তানের পরিস্থিতি।
ইউক্রেন প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ভারত শান্তি প্রতিষ্ঠার সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে এবং সব পক্ষকে গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানায়। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের দ্রুত অবসান এবং স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা পুরো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বার্থে।
বাণিজ্য–সহযোগিতা জোরদারে রাশিয়ার পদক্ষেপ
ল্যাভরভ বলেন, ভারতের সঙ্গে অংশীদারত্ব রাশিয়ার শীর্ষ অগ্রাধিকারের একটি। মস্কো দিল্লির সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলায় যাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















