সামিত সোম, ফুটবলার এই ছেলেটির প্রতি ভালোবাসা অনেক বেড়ে গেল। সে ভারতের বিরুদ্ধে জয় উৎসর্গ করেছে মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুর মহান স্মৃতিতে।
সামিত সোমের বয়সী এই দেশের কোটি কোটি ছেলেমেয়ে জানে না স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের কথা। জানে না অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু এবং দলের খেলোয়াড়দের নাম। অথচ সামিত সোম কানাডায় বসবাস করলেও জানে। এ থেকে বোঝা যায় মুক্তিযুদ্ধের প্রতি, দেশের প্রতি তার ভালোবাসা কতটা গভীর। তার সাথে তুলনা করলে দেশের কোটি কোটি তরুণ-তরুণীকে নিতান্তই অজ্ঞ বলে ঘোষণা করা যায়। সোজা কথা, যে মুক্তিযুদ্ধকে জানে না, জানার চেষ্টা করে না, জানার ইচ্ছাও যার নেই, সে এই দেশকে ভালোবাসে না।
স্বাধীনতার আগে বাঙালি খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতা করতে হতো শারীরিক গঠনে এগিয়ে থাকা মাকরানি-পাঞ্জাবি খেলোয়াড়দের সাথে। সাথে ছিল তাদের প্রতি সরকার ও ফেডারেশনের পক্ষপাতিত্ব। স্কিল, এবং অদম্য প্রতিজ্ঞা নিয়ে যে বাঙালি তরুণ-যুবকরা ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে ঢাকার ফুটবলকে তদানীন্তন সারা পাকিস্তানের পীঠস্থানে পরিণত করেছিলেন, তাদের মধ্যে জাকারিয়া পিন্টু অন্যতম।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ফুটবলারদের একত্রিত করে গঠন করা হয় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। তারা ভারতের বিভিন্ন শহরে খেলেছেন ভারতের বিভিন্ন দলের সাথে। ম্যাচের টিকেট থেকে পাওয়া অর্থ পুরোটাই তুলে দেওয়া হতো মুক্তিবাহিনীর অস্ত্র ও রসদ কেনার জন্য। আর প্রতিটি খেলা শুরুর আগে অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু উপস্থিত দর্শকদের প্রতি অনুরোধ জানাতেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে পাশে থাকার জন্য।
সেই ফুটবলাররা দেশের গুরুত্বপূর্ণ মুক্তিযোদ্ধা অবশ্যই।
সামিত সোমকে ধন্যবাদ। কামনা করি, তার কাছ থেকে বাংলাদেশের তরুণরা কেবল ফুটবলের অনুপ্রেরণা নয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জেনে দেশকে ভালোবাসার অনুপ্রেরণাও লাভ করুক।
(লেখাটি বাংলাদেশের প্রখ্যাত ও প্রজ্ঞাবান লেখক জাকির তালুকদারের ফেসবুক থেকে নেয়া)
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















