দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন ভয়াবহ গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা বলছে, উচ্চশিক্ষিত চিকিৎসকদের একটি ‘হোয়াইট কলার’ সন্ত্রাসী চক্রই হামলাটি পরিচালনা করেছে এবং এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গভীর সংযোগ রয়েছে। পাওয়া গেছে বিদেশ-যোগ, অর্থপাচার ও ভুয়া স্বীকৃতির প্রমাণও।
দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণের দুই সপ্তাহ পর তদন্তে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত ‘হোয়াইট কলার টেরর মডিউল’ নামে পরিচিত এই নেটওয়ার্কের সদস্যরা ছিলেন উচ্চশিক্ষিত চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়-সম্পর্কিত কয়েকজন ব্যক্তি। তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে ফরিদাবাদের আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় ও এর মালিকপক্ষ।
লালকেল্লা বিস্ফোরণের প্রেক্ষাপট
দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১০ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়। বিস্ফোরণের পরপরই হরিয়ানার ফরিদাবাদের দাউজ গ্রাম থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। এই সূত্র ধরেই তদন্তকারীরা পৌঁছে যায় বড় একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের খোঁজে।
বিস্ফোরকবাহী গাড়িটি চালাচ্ছিলেন আল ফালাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ড. উমর উন নবি। একই প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন শিক্ষকও এতে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে তদন্ত সংস্থা।
‘হোয়াইট কলার’ সন্ত্রাসী চক্রের তহবিল
• তদন্তে জানা গেছে, পাঁচ চিকিৎসকের এই নেটওয়ার্ক হামলার জন্য মোট ২৬ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিল।
• প্রধান অভিযুক্ত ড. মুজাম্মিল গণাই জানিয়েছেন, প্রায় দুই বছর ধরে বিস্ফোরক ও রিমোট ডিভাইস সংগ্রহে কাজ করছিলেন তারা।
• এ পর্যন্ত তিন চিকিৎসক—ড. গণাই, শাহিন শাহিদ ও আদিল রাশেদ—গ্রেপ্তার হয়েছে।
• আদিলের ভাই মুজাফফর আফগানিস্তানে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থা।
• নিসার উল-হাসান নামে আরও এক শিক্ষককে খোঁজা হচ্ছে।
আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস-যোগ
• বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে বহুদিন ধরেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ করছে নিরাপত্তা সংস্থা।
• ২০০৮ সালের বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় মুজাহিদিন সদস্য মির্জা শাদাব বেগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টেশন বিভাগ থেকে ২০০৭ সালে বি-টেক সম্পন্ন করেন। তার মাথার মূল্য ঘোষণা রয়েছে ১ লাখ টাকা।
• চলমান তদন্তে বেগের সঙ্গে দিল্লি বিস্ফোরণের নতুন সংযোগ পাওয়া গেছে।
• তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, দুই দশক আগের ঘটনাও হলেও দুই কেসের মধ্যে সম্পর্ক অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
অর্থপাচার ও ভুয়া স্বীকৃতির অভিযোগ
• আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্ত চলছে।
• এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) জানিয়েছে, তিনি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ভুয়া এনএএসি স্বীকৃতি ও ইউজিসি অনুমোদনের নামে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতারিত করে প্রায় ৪১৫ কোটি টাকা আদায় করেছে।
• ইডি এটিকে “অপরাধ থেকে প্রাপ্ত অর্থ” হিসেবে উল্লেখ করেছে।
স্বীকৃতি বাতিলের নোটিশ
• দুই অভিযুক্তের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রকাশ পাওয়ার পর সংখ্যালঘু শিক্ষা কমিশন আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ নোটিশ দিয়েছে।
• কেন তাদের সংখ্যালঘু মর্যাদা বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
• ১২ নভেম্বর এনএএসি-ও স্বীকৃতি জালিয়াতির অভিযোগে আলাদা নোটিশ দেয়।
• আগামী ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও হরিয়ানা শিক্ষা বিভাগের Principal Secretary-কে শুনানিতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
#DelhiBlast #AlFalahUniversity #TerrorFunding #PakistanLink #WhiteCollarTerror #IndiaSecurity #FaridabadCase #SarakhanReport
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















