০৮:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
হোয়াইট হাউসের কাছে গুলিবর্ষণ: কে এই আফগান নাগরিক রহমানউল্লাহ লাখানওয়াল? ১৪ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতির বিদায়ী অভিভাষণ থাইল্যান্ডে ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধার জোরদার, ইন্দোনেশিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ ডেঙ্গু সংকট: আরও ৭ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৫৬৭ জন রাজউক প্লট বরাদ্দে অনিয়ম: শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় আবারও হালকা ভূমিকম্প সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের কর্মীদের বেতন কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চীনের স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ বাধা হোয়াইট হাউসের কাছে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর আকস্মিক হামলা কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রাণ বিতরণ

গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি: নজরুল ইসলাম

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের এই আন্দোলন ও এর অর্জিত বিজয়কে ভিন্নখাতে নেওয়ার নানা চেষ্টা হবে। এসব অপচেষ্টা মোকাবিলা করতেই হবে। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরাই; তাই তাদের ত্যাগের মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলনের লক্ষ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া বিএনপির দায়িত্ব।

নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

বিএনপির অভিজ্ঞতাই তাদের শক্তি

নজরুল ইসলাম বলেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তারা অতীত অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে জনকল্যাণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোনো যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে অভিজ্ঞ কারিগরিকেই ডাকা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার যন্ত্র আরও জটিল—এটি পরিচালনায় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। তার দাবি, দেশ চালনায় দীর্ঘ ও প্রমাণিত অভিজ্ঞতা শুধু বিএনপিরই আছে।

তিনি বলেন, তারা জনগণের সামনে নিজেদের সেই সামর্থ্য উপস্থাপন করবে এবং একই সঙ্গে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও ভালোভাবে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবে।

ড. মিলনের সংগ্রামের লক্ষ্য

শহীদ ড. মিলনের স্মরণে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় নজরুল ইসলাম বলেন, ড. মিলনের সংগ্রাম ছিল বৈষম্যহীন, নিরাপদ, ন্যায়সুলভ ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করার মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য।

তিনি বলেন, তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামী দিনে সবাইকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ৯০–এর দশকের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের সাবেক ছাত্রনেতারা। তারা জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ ড. মিলন দিবস ও তার ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনার আয়োজন করেন।

এর আগে সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শহীদ মিলন স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। খালেদা জিয়া বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে চিকিৎসাধীন।

১৯৮৬ সালের নির্বাচন নিয়ে নজরুল ইসলামের অভিযোগ

নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।

তার দাবি, ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তারা এরশাদের সামরিক শাসনকে বৈধতা দেয়। না হলে ১৯৮৬ সালেই তার শাসনের পতন ঘটতে পারত।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে ‘জামায়াতে ইসলামী’ নামে কোনো দল অংশ নেয়নি। ‘ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লিগ (আইডিএল)’ নামে একটি জোট অংশ নেয়, যেখানে জামায়াতের কিছু সদস্য ছিলেন। কিন্তু জামায়াত নিজ নামে তখন নির্বাচনে যায়নি।

তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ১৯৮৬ সালে এরশাদের কাছ থেকে ক্ষমতায় থাকার সুবিধা নেয় এবং পরবর্তীতে এরশাদের দলও আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্বাচনের বিকল্প নেই: আমানুল্লাহ আমান

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আমানুল্লাহ আমান বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্বাচনের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, নানা ষড়যন্ত্র ও বাধা থাকলেও ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারো নেই।

তিনি ঘোষণা দেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলন করা রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে।

তিনি গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

হাসিনার শাসন ও অর্থনীতি নিয়ে রিজভীর সমালোচনা

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ ও শেখ হাসিনার চরিত্র একই—তাই তারা বারবার একে অন্যের বিরুদ্ধে কথা বললেও সংকটময় মুহূর্তে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের অর্থনীতি প্রকৃত অর্থে অর্থনীতি নয়—এটি ‘হাসিনোমিক্স’।

তার অভিযোগ, এই সময়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দিয়েও নতুন ঋণ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়, যার ফলে দেশে ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের বোঝা সৃষ্টি হয়েছে।

 

#রাজনীতি #বিএনপি #জাতীয়_নির্বাচন #ডক্টর_মিলন #গণতন্ত্র #বাংলাদেশ

জনপ্রিয় সংবাদ

হোয়াইট হাউসের কাছে গুলিবর্ষণ: কে এই আফগান নাগরিক রহমানউল্লাহ লাখানওয়াল?

গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি: নজরুল ইসলাম

০৬:৩৫:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের এই আন্দোলন ও এর অর্জিত বিজয়কে ভিন্নখাতে নেওয়ার নানা চেষ্টা হবে। এসব অপচেষ্টা মোকাবিলা করতেই হবে। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরাই; তাই তাদের ত্যাগের মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলনের লক্ষ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া বিএনপির দায়িত্ব।

নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

বিএনপির অভিজ্ঞতাই তাদের শক্তি

নজরুল ইসলাম বলেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তারা অতীত অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে জনকল্যাণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোনো যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে অভিজ্ঞ কারিগরিকেই ডাকা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার যন্ত্র আরও জটিল—এটি পরিচালনায় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। তার দাবি, দেশ চালনায় দীর্ঘ ও প্রমাণিত অভিজ্ঞতা শুধু বিএনপিরই আছে।

তিনি বলেন, তারা জনগণের সামনে নিজেদের সেই সামর্থ্য উপস্থাপন করবে এবং একই সঙ্গে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও ভালোভাবে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবে।

ড. মিলনের সংগ্রামের লক্ষ্য

শহীদ ড. মিলনের স্মরণে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় নজরুল ইসলাম বলেন, ড. মিলনের সংগ্রাম ছিল বৈষম্যহীন, নিরাপদ, ন্যায়সুলভ ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করার মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য।

তিনি বলেন, তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামী দিনে সবাইকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ৯০–এর দশকের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের সাবেক ছাত্রনেতারা। তারা জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ ড. মিলন দিবস ও তার ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনার আয়োজন করেন।

এর আগে সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শহীদ মিলন স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। খালেদা জিয়া বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে চিকিৎসাধীন।

১৯৮৬ সালের নির্বাচন নিয়ে নজরুল ইসলামের অভিযোগ

নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।

তার দাবি, ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তারা এরশাদের সামরিক শাসনকে বৈধতা দেয়। না হলে ১৯৮৬ সালেই তার শাসনের পতন ঘটতে পারত।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে ‘জামায়াতে ইসলামী’ নামে কোনো দল অংশ নেয়নি। ‘ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লিগ (আইডিএল)’ নামে একটি জোট অংশ নেয়, যেখানে জামায়াতের কিছু সদস্য ছিলেন। কিন্তু জামায়াত নিজ নামে তখন নির্বাচনে যায়নি।

তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ১৯৮৬ সালে এরশাদের কাছ থেকে ক্ষমতায় থাকার সুবিধা নেয় এবং পরবর্তীতে এরশাদের দলও আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্বাচনের বিকল্প নেই: আমানুল্লাহ আমান

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আমানুল্লাহ আমান বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্বাচনের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, নানা ষড়যন্ত্র ও বাধা থাকলেও ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারো নেই।

তিনি ঘোষণা দেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলন করা রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে।

তিনি গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

হাসিনার শাসন ও অর্থনীতি নিয়ে রিজভীর সমালোচনা

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ ও শেখ হাসিনার চরিত্র একই—তাই তারা বারবার একে অন্যের বিরুদ্ধে কথা বললেও সংকটময় মুহূর্তে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের অর্থনীতি প্রকৃত অর্থে অর্থনীতি নয়—এটি ‘হাসিনোমিক্স’।

তার অভিযোগ, এই সময়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দিয়েও নতুন ঋণ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়, যার ফলে দেশে ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের বোঝা সৃষ্টি হয়েছে।

 

#রাজনীতি #বিএনপি #জাতীয়_নির্বাচন #ডক্টর_মিলন #গণতন্ত্র #বাংলাদেশ