রাঁচিতে রবিবার ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে বিরাট কোহলি বলেছিলেন, তিনি নাকি অতিরিক্ত প্রস্তুতির পক্ষপাতী নন। তার কথায় যেন স্পষ্ট—যতটা প্রয়োজন, ততটাই প্রস্তুতি তার মতে যথেষ্ট। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত ক্যালেন্ডারে প্রস্তুতির সঠিক মাত্রা ঠিক কেমন হওয়া উচিত? এই প্রশ্নই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
জাতীয় দলের ভাবনা: ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলাকে উৎসাহ
বোর্ড ও নির্বাচকদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ফাঁকে যেন জাতীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেন।
• ব্যতিক্রম রাখা হয় শুধু পেসারদের জন্য।
• এখন যেহেতু কোহলি ও রোহিত শুধুমাত্র ওয়ানডে খেলছেন, তাই নিউ জিল্যান্ড সিরিজের (১১-১৮ জানুয়ারি) আগে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ভিজয় হজারে ট্রফিতে তাদের রাজ্য দলের হয়ে খেলার কথা।
খেলোয়াড়রা আপত্তি জানাচ্ছেন না, কিন্তু কোহলির কথাবার্তা থেকে স্পষ্ট—তিনি চাইলে ম্যাচ খেলার বদলে নিজস্ব অনুশীলনকেই অগ্রাধিকার দিতেন।
কোহলির দৃষ্টিভঙ্গি: অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা
কোহলির মতে,
• ৩০০টিরও বেশি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা
• ১৫-১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
—এসব মিলিয়ে তার অনুশীলনেই খেলার ছন্দ ফিরে আসে।

তিনি বলেন, নেটে দেড়-দুই ঘণ্টা বিরতিহীনভাবে ব্যাটিং করতে পারলে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতিই পূরণ হয়। আর সত্যিই, এক মাসের বিরতির পর ফিরে এসেই ৫২তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে তিনি তা প্রমাণ করেছেন—যা মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকরের থেকেও তিনটি বেশি।
রোহিতের পদ্ধতি: শারীরিক ফিটনেসই মূল
রোহিত শর্মাও তার নিজস্ব অনুশীলন নিয়মে অটল।
জানা যায়, এখন তার প্রধান মনোযোগ—
• শারীরিক ফিটনেস ধরে রাখা
• ব্যাটিংয়ে ‘মাসল মেমরি’ কাজে লাগানো
এ পদ্ধতি ভালোই ফল দিচ্ছে, কারণ রোহিত টানা তিনটি ম্যাচে পঞ্চাশের বেশি রান করেছেন।
নির্বাচকদের দৃষ্টিকোণ: ফর্ম ধরে রাখার পরীক্ষা
নির্বাচকদের যুক্তি—
• বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফর্ম ধরে রাখতে ম্যাচ খেলা জরুরি
• টেস্টে যেমন শেষদিকে ফর্ম হারিয়েছিলেন রোহিত- কোহলি, ওয়ানডেতেও যেন তা না ঘটে
তাদের ঘরোয়া পারফরম্যান্স দেখেই নির্বাচকরা খেলোয়াড়দের ম্যাচ-শার্পনেস এবং ফর্ম বিচার করতে চান।
ভারতীয় ক্রিকেট সবসময়ই কিছুটা নিয়মতান্ত্রিক। অন্য দেশের মতো (যেমন নিউ জিল্যান্ডে কেন উইলিয়ামসনের নমনীয় করার চুক্তি) ক্রিকেটারদের ইচ্ছামতো ছাড় দেওয়া হয় না। কারণ ভারতীয় বোর্ড খেলোয়াড়দের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক পুরস্কার দিয়ে থাকে।
কোহলি-গম্ভীর অস্বস্তি: আলোচনায় আসছে সম্পর্কের টানাপোড়েন
বিরাট কোহলি ও কোচ গৌতম গম্ভীরের সম্পর্কের টানাপোড়েন এখন কারও চোখ এড়ায় না।
• তারা শুধু প্রাক্তন দিল্লি সতীর্থ নন, এখন খেলোয়াড়- কোচ সম্পর্কেও যুক্ত।
• বুধবার বোর্ডের স্টক-টেকিং বৈঠকে এই বিষয়টি তুলতে পারে BCCI।

২০২৭ বিশ্বকাপ: রোহিত-কোহলির লক্ষ্য পরিষ্কার
দুই সিনিয়রই ২০২৭ বিশ্বকাপ খেলতে চান।
• লক্ষ্যপূরণের পথে তাদের কী পরিকল্পনা?
• কোহলির সিরিজ শুরুর আগে আকস্মিক নেট অনুশীলনের পরিকল্পনা ছিল যোগাযোগঘাটতির ফল—এটিও আলোচনায় আসবে।
• বোর্ড চাইছে এই ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে।
দলে তাদের ভূমিকা: অভিজ্ঞতার মূল্য
রোহিত ও কোহলি সাম্প্রতিক ওয়ানডেতে দু’টি শতরানের জুটি গড়েছেন—সিডনি ও রাঁচিতে।
• ইয়াশস্বী জয়সওয়াল ওপেনিংয়ে নিজেকে মেলাতে চেষ্টা করছেন
• মধ্যক্রম অভিজ্ঞতাহীন, গতি-ছন্দ খুঁজছে
• শুভমান গিল ও শ্রেয়স আইয়ার অনুপস্থিত—এই অবস্থায় রোহিত-কোহলির উপস্থিতি দলকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে
কোহলি ইতিমধ্যে তার পুরনো ঝলক ফিরিয়ে এনেছেন। রোহিতও ব্যাটে দারুণ টাইমিং পাচ্ছেন। দুজনের অভিজ্ঞতা ভারতের ক্রিকেটকে আরও সমৃদ্ধ করবে—যদি দলের ভেতরে সময়মতো প্রয়োজনীয় আলাপ-আলোচনা হয়।
#ক্রিকেট #ভারতীয়_দল #রোহিত_শর্মা #বিরাট_কোহলি #ওডিআই_ক্রিকেট #বিসিসিআই
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















