০৬:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
সাভারের আশুলিয়ায় রাজনৈতিক তৎপরতা, সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু, কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন চট্টগ্রাম–সিলেট–ময়মনসিংহে ঘন কুয়াশায় ভোরের যান চলাচল ব্যাহত গুগল আর অ্যামাজনের বিরল জোট: এক সেতুতে যুক্ত হচ্ছে দুই ক্লাউড জায়ান্ট ইউরোপে বায়ু বিদ্যুতের জোয়ার—পোল্যান্ডের ব্লেড কারখানায় উৎপাদন দ্বিগুণ করছে ভেস্তাস ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে ভয়াবহ বন্যা–ভূমিধসে মৃত ১,২০০ ছাড়াল আবার পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে হুমকি–ইঙ্গিত, নতুন দৌড়ের আশঙ্কা বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এরাস যুগের বিদায়: টেলর সুইফট প্রকাশ করলেন ‘দ্য ফাইনাল শো’ কনসার্ট ফিল্মের ট্রেলার লুই ভুঁতোঁ গ্রুপে ক্ষমতার রদবদল: ডিওরের শীর্ষ নির্বাহী এখন ফ্যাশন সাম্রাজ্যের প্রধান বন কেটে নেওয়ার সাজা: ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা–ধসে গ্রাম গিলে খাচ্ছে কাদা

বন কেটে নেওয়ার সাজা: ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা–ধসে গ্রাম গিলে খাচ্ছে কাদা

সুমাত্রার উন্মুক্ত পাহাড়েই বিপর্যয়ের বীজ

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রাজুড়ে সাম্প্রতিক বন্যা–ধসের ছবি যেন একই গল্প বারবার বলছে—পাহাড়ের গা থেকে শুরু হওয়া বয়ে চলা কাদা আর ভাঙা গাছের স্রোত, নিচে নেমে এসে গিলে খাচ্ছে ঘরবাড়ি আর মানুষ। দিনের পর দিন টানা বৃষ্টির পর যে ভয়াবহ ধস নেমে এসেছে, তা স্থানীয়দের চোখে কেবল “প্রকৃতির রোষ” নয়; বরং বহু বছর ধরে বন উজাড় আর অবৈধ জমি দখলের সম্মিলিত ফল। গ্রামের প্রবীণরা বলছেন, পাহাড়ের ওপর যেদিন থেকে কাঠের ট্রাক উঠতে শুরু করেছে, সেদিন থেকেই তারা বুঝেছিলেন, নিচের গ্রাম একদিন না একদিন এর মাশুল দেবে।

আগাম জেলার পালেমবায়ানসহ বহু এলাকার ওপর থেকে তোলা ছবি এখন সেই অভিযোগের বাস্তব প্রমাণ দেখাচ্ছে। যেখানে আগে ঘন বন ছিল, সেখানে এখন খোলা মাটি আর সমান্তরাল কাটা দাগ; বৃষ্টির পানি শুষে নেওয়ার মতো কোনো শিকড় আর ছায়া নেই। ফলে ভারি বর্ষণ নামতেই পানি সোজা ধসে পড়েছে ঢাল বেয়ে, সঙ্গে টেনে এনেছে পাথর, গাছের গুঁড়ি, ঘরের টিনের চালসহ যা সামনে পেয়েছে। বেঁচে ফেরা মানুষজন বলছেন, প্রথমে তারা শুনেছেন গর্জনের শব্দ, এরপর চোখের পলকেই পুরো এলাকা অন্ধকার কাদা আর ধুলোর মেঘে ঢেকে গেছে।

Men stand on logs swept away by flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বহুদিন ধরে বলছে, সুমাত্রার পাহাড়ি এলাকায় সংরক্ষিত বনভূমিতেও ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছে প্ল্যানটেশন, ছোট–খাটো খনি আর কাঠ চোরাচালানিদের নেটওয়ার্ক। বহু ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন চোখ বন্ধ করে থেকেছে, আবার কোথাও কোথাও সরাসরি সুবিধা নিয়েছে বলে অভিযোগ। পাহাড়ের গায়ে যেখানে–সেখানে বসানো হয়েছে নতুন চাষাবাদ বা নির্মাণ, যার শিকড় মাটি আঁকড়ে ধরার মতো শক্ত নয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ভঙ্গুর ভূ–প্রকৃতিতে যখন অতিবৃষ্টি নামে, তখন সামান্য ভূমিধসও মুহূর্তে মহাবিপর্যয়ে রূপ নেয়।

জাকার্তা ইতিমধ্যে কড়া ভাষায় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন–সংক্রান্ত অনুমতি আর প্ল্যানটেশন লাইসেন্সগুলো নতুন করে যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। কোথাও অবৈধভাবে বন কাটা হয়েছে কি না, স্থানীয় দপ্তরগুলো আগাম সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছে কি না—সে বিষয়েও তদন্ত হবে বলে আশ্বাস মিলেছে। সমালোচকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অতীতেও প্রতিটি বড় দুর্যোগের পর এমন তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে; কিন্তু কিছুদিন পরই সব ফাইল ধুলোমাখা তাকেই পড়ে থেকেছে। এবারের ক্ষোভ আর হতাশা যদি বাস্তব পরিবর্তনে না গড়ায়, তাহলে মানুষের আস্থার সংকট আরও বাড়বে।

A house is seen buried in the mud at a village affected by flash flood in Pidie Jaya, Aceh province, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Reza Saifullah)

জলবায়ু সংকট আর স্থানীয় অনিয়ম—দুইয়ের জটিল মিশ্রণ

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বননিধন এই বিপর্যয়ের একমাত্র কারণ নয়। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়াজুড়ে এবারের মৌসুমেই দেখা গেছে অস্বাভাবিক বৃষ্টি আর সাইক্লোনের সংমিশ্রণ; প্রতিবেশী সমুদ্রের অস্বাভাবিক উষ্ণতা আর বৃহত্তর জলবায়ু–প্যাটার্ন এই ঝড়কে আরও শক্তিশালী করেছে। তবু, অক্ষত বনভূমি থাকলে একই মাত্রার বৃষ্টি অনেক কম ক্ষতি করতে পারত—কারণ গাছ–রাজি মিলে পানি ধীরে নামিয়ে আনে, ঢালকে ধরে রাখে, নদীতে নেমে যাওয়ার স্রোতকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বাস্তবতা বোঝায়, জলবায়ু অভিযোজন আর পরিবেশ রক্ষা আলাদা দুই এজেন্ডা নয়; বরং একই ধারার দুই দিক। ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক মঞ্চে বন রক্ষা ও নিট–শূন্য নির্গমন লক্ষ্যের কথা বারবার বললেও মাঠের বাস্তবে সেই প্রতিশ্রুতি অনেক সময় দুর্বল হয়ে পড়ে স্থানীয় স্বার্থ আর দুর্নীতির চাপে। এবারের বন্যা–ধস দেখিয়ে দিল, এসব ব্যর্থতা কেবল ভবিষ্যতের কার্বন–হিসাব নয়; বর্তমানের জীবন–মৃত্যুর সঙ্গেও সরাসরি জড়িত।

In this aerial photo taken using a drone, people are seen making their way on a muddy road at a village affected by a flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

কৃষকদের সামনে এখন বেঁচে থাকার কঠিন অঙ্ক—কাদার নিচে চাপা পড়েছে জমি, সেচনালা আর বীজ; গবাদি পশু ভেসে গেছে স্রোতে। কেউ কেউ ভাবছেন, আদৌ কি একই জায়গায় আবার ঘর আর জমি বানানো নিরাপদ হবে; অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে বাধ্য হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়েই পুরোনো জমিতেই কাজ শুরু করতে। স্থানীয় পরিকল্পনাবিদদের এখন নতুন করে বসে ঠিক করতে হবে, কোন জায়গা বসতির জন্য নিষিদ্ধ থাকবে, কোথায় পুনরায় বন লাগানো হবে, কোথায় নদী খনন জরুরি।

এদিকে গ্রামগুলো নিজেদের মতো করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। বড় যন্ত্র দিয়ে যখন প্রধান সড়ক পরিষ্কার হচ্ছে, তখন ছোট দলগুলো হাতের কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে গলি থেকে কাদা সরাচ্ছেন। ভাঙা সেতুর জায়গায় বাঁশ আর কাঠের অস্থায়ী সাঁকো দেখা যাচ্ছে; মসজিদ আর কমিউনিটি সেন্টারে বসে বয়স্করা ভবিষ্যতে বন রক্ষার দাবিতে কীভাবে একজোট হওয়া যায়, সে নিয়ে পরামর্শ করছেন। তাদের আশা, এইবার যেন সেই কণ্ঠস্বর নীতিনির্ধারকদের কানে সত্যিই পৌঁছায়—যাতে আগামী বর্ষায় একই দৃশ্য আবার না দেখতে হয়।

A man looks at the damage caused by the floods at Gampola, Sri Lanka, Monday, Dec.1, 2025. (AP Photo/Eranga Jayawardena)

People look at a building damaged by the floods in Peradeniya, Sri Lanka, Monday, Dec. 1,2025. (AP Photo/Eranga Jayawardena)

জনপ্রিয় সংবাদ

সাভারের আশুলিয়ায় রাজনৈতিক তৎপরতা, সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

বন কেটে নেওয়ার সাজা: ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা–ধসে গ্রাম গিলে খাচ্ছে কাদা

০৫:১৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

সুমাত্রার উন্মুক্ত পাহাড়েই বিপর্যয়ের বীজ

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রাজুড়ে সাম্প্রতিক বন্যা–ধসের ছবি যেন একই গল্প বারবার বলছে—পাহাড়ের গা থেকে শুরু হওয়া বয়ে চলা কাদা আর ভাঙা গাছের স্রোত, নিচে নেমে এসে গিলে খাচ্ছে ঘরবাড়ি আর মানুষ। দিনের পর দিন টানা বৃষ্টির পর যে ভয়াবহ ধস নেমে এসেছে, তা স্থানীয়দের চোখে কেবল “প্রকৃতির রোষ” নয়; বরং বহু বছর ধরে বন উজাড় আর অবৈধ জমি দখলের সম্মিলিত ফল। গ্রামের প্রবীণরা বলছেন, পাহাড়ের ওপর যেদিন থেকে কাঠের ট্রাক উঠতে শুরু করেছে, সেদিন থেকেই তারা বুঝেছিলেন, নিচের গ্রাম একদিন না একদিন এর মাশুল দেবে।

আগাম জেলার পালেমবায়ানসহ বহু এলাকার ওপর থেকে তোলা ছবি এখন সেই অভিযোগের বাস্তব প্রমাণ দেখাচ্ছে। যেখানে আগে ঘন বন ছিল, সেখানে এখন খোলা মাটি আর সমান্তরাল কাটা দাগ; বৃষ্টির পানি শুষে নেওয়ার মতো কোনো শিকড় আর ছায়া নেই। ফলে ভারি বর্ষণ নামতেই পানি সোজা ধসে পড়েছে ঢাল বেয়ে, সঙ্গে টেনে এনেছে পাথর, গাছের গুঁড়ি, ঘরের টিনের চালসহ যা সামনে পেয়েছে। বেঁচে ফেরা মানুষজন বলছেন, প্রথমে তারা শুনেছেন গর্জনের শব্দ, এরপর চোখের পলকেই পুরো এলাকা অন্ধকার কাদা আর ধুলোর মেঘে ঢেকে গেছে।

Men stand on logs swept away by flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বহুদিন ধরে বলছে, সুমাত্রার পাহাড়ি এলাকায় সংরক্ষিত বনভূমিতেও ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছে প্ল্যানটেশন, ছোট–খাটো খনি আর কাঠ চোরাচালানিদের নেটওয়ার্ক। বহু ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন চোখ বন্ধ করে থেকেছে, আবার কোথাও কোথাও সরাসরি সুবিধা নিয়েছে বলে অভিযোগ। পাহাড়ের গায়ে যেখানে–সেখানে বসানো হয়েছে নতুন চাষাবাদ বা নির্মাণ, যার শিকড় মাটি আঁকড়ে ধরার মতো শক্ত নয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ভঙ্গুর ভূ–প্রকৃতিতে যখন অতিবৃষ্টি নামে, তখন সামান্য ভূমিধসও মুহূর্তে মহাবিপর্যয়ে রূপ নেয়।

জাকার্তা ইতিমধ্যে কড়া ভাষায় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন–সংক্রান্ত অনুমতি আর প্ল্যানটেশন লাইসেন্সগুলো নতুন করে যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। কোথাও অবৈধভাবে বন কাটা হয়েছে কি না, স্থানীয় দপ্তরগুলো আগাম সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছে কি না—সে বিষয়েও তদন্ত হবে বলে আশ্বাস মিলেছে। সমালোচকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অতীতেও প্রতিটি বড় দুর্যোগের পর এমন তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে; কিন্তু কিছুদিন পরই সব ফাইল ধুলোমাখা তাকেই পড়ে থেকেছে। এবারের ক্ষোভ আর হতাশা যদি বাস্তব পরিবর্তনে না গড়ায়, তাহলে মানুষের আস্থার সংকট আরও বাড়বে।

A house is seen buried in the mud at a village affected by flash flood in Pidie Jaya, Aceh province, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Reza Saifullah)

জলবায়ু সংকট আর স্থানীয় অনিয়ম—দুইয়ের জটিল মিশ্রণ

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বননিধন এই বিপর্যয়ের একমাত্র কারণ নয়। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়াজুড়ে এবারের মৌসুমেই দেখা গেছে অস্বাভাবিক বৃষ্টি আর সাইক্লোনের সংমিশ্রণ; প্রতিবেশী সমুদ্রের অস্বাভাবিক উষ্ণতা আর বৃহত্তর জলবায়ু–প্যাটার্ন এই ঝড়কে আরও শক্তিশালী করেছে। তবু, অক্ষত বনভূমি থাকলে একই মাত্রার বৃষ্টি অনেক কম ক্ষতি করতে পারত—কারণ গাছ–রাজি মিলে পানি ধীরে নামিয়ে আনে, ঢালকে ধরে রাখে, নদীতে নেমে যাওয়ার স্রোতকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বাস্তবতা বোঝায়, জলবায়ু অভিযোজন আর পরিবেশ রক্ষা আলাদা দুই এজেন্ডা নয়; বরং একই ধারার দুই দিক। ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক মঞ্চে বন রক্ষা ও নিট–শূন্য নির্গমন লক্ষ্যের কথা বারবার বললেও মাঠের বাস্তবে সেই প্রতিশ্রুতি অনেক সময় দুর্বল হয়ে পড়ে স্থানীয় স্বার্থ আর দুর্নীতির চাপে। এবারের বন্যা–ধস দেখিয়ে দিল, এসব ব্যর্থতা কেবল ভবিষ্যতের কার্বন–হিসাব নয়; বর্তমানের জীবন–মৃত্যুর সঙ্গেও সরাসরি জড়িত।

In this aerial photo taken using a drone, people are seen making their way on a muddy road at a village affected by a flash flood in Batang Toru, North Sumatra, Indonesia, Tuesday, Dec. 2, 2025. (AP Photo/Binsar Bakkara)

কৃষকদের সামনে এখন বেঁচে থাকার কঠিন অঙ্ক—কাদার নিচে চাপা পড়েছে জমি, সেচনালা আর বীজ; গবাদি পশু ভেসে গেছে স্রোতে। কেউ কেউ ভাবছেন, আদৌ কি একই জায়গায় আবার ঘর আর জমি বানানো নিরাপদ হবে; অন্যদিকে পরিবারের একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে বাধ্য হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়েই পুরোনো জমিতেই কাজ শুরু করতে। স্থানীয় পরিকল্পনাবিদদের এখন নতুন করে বসে ঠিক করতে হবে, কোন জায়গা বসতির জন্য নিষিদ্ধ থাকবে, কোথায় পুনরায় বন লাগানো হবে, কোথায় নদী খনন জরুরি।

এদিকে গ্রামগুলো নিজেদের মতো করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। বড় যন্ত্র দিয়ে যখন প্রধান সড়ক পরিষ্কার হচ্ছে, তখন ছোট দলগুলো হাতের কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে গলি থেকে কাদা সরাচ্ছেন। ভাঙা সেতুর জায়গায় বাঁশ আর কাঠের অস্থায়ী সাঁকো দেখা যাচ্ছে; মসজিদ আর কমিউনিটি সেন্টারে বসে বয়স্করা ভবিষ্যতে বন রক্ষার দাবিতে কীভাবে একজোট হওয়া যায়, সে নিয়ে পরামর্শ করছেন। তাদের আশা, এইবার যেন সেই কণ্ঠস্বর নীতিনির্ধারকদের কানে সত্যিই পৌঁছায়—যাতে আগামী বর্ষায় একই দৃশ্য আবার না দেখতে হয়।

A man looks at the damage caused by the floods at Gampola, Sri Lanka, Monday, Dec.1, 2025. (AP Photo/Eranga Jayawardena)

People look at a building damaged by the floods in Peradeniya, Sri Lanka, Monday, Dec. 1,2025. (AP Photo/Eranga Jayawardena)