১২:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
পুতিনের ভারত সফর: যুদ্ধবিমান থেকে বাণিজ্যপথ—বৃহৎ চুক্তির সম্ভাবনা সুপ বানানোর সহজ উপায়: কোনো রেসিপি ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আফগান শরণার্থী সম্প্রদায়ের উদ্বেগ: ওয়াশিংটন ডিসিতে গুলি চালানোর পর সঙ্কট চীনের ওষুধ উদ্ভাবন শিল্প কীভাবে দ্রুত বিকাশ পেল চীনের দ্রুত অ্যান্টি-সাবমেরিন ড্রোন অগ্রগতি কি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে? নিউরোসায়েন্টিস্ট জেইন উ-র মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের মামলা খারিজের আবেদন করেছে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে চীনা লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডগুলো খেলনা, চা ও নতুন ট্রেন্ড দিয়ে বিদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে চীনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন জোরদার করে বৈশ্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান ঢাকায় নাশকতা, অগ্নিসংযোগ ও রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করে ডিবি হঠাৎ ১৫০টি ফ্লাইট বাতিল: নতুন রোস্টার নীতিতে ইন্ডিগো পরিচালনায় তীব্র অস্থিরতা

ভারত: পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান যুবককে ওড়িশায় ‘বাংলাদেশি রোহিঙ্গা’ আখ্যা দিয়ে মারধর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর অভিযোগ

(এই প্রতিবেদনে সহিংসতার কিছু ছবি এবং বর্ণনা পাঠকদের বিচলিত করতে পারে)

পশ্চিমবঙ্গের এক মুসলমান যুবককে ওড়িশা রাজ্যের একটি গ্রামে মারধর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কথিত ঘটনাটির কিছু অংশের ভিডিও বিবিসির হাতে এসেছে। রাহুল ইসলাম নামের ওই যুবক পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরপাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ, ওড়িশার গঞ্জাম জেলার একটি গ্রামে কিছু হিন্দুত্ববাদী মি. ইসলামকে তার পরিচয়পত্র যাচাই করেন এবং তা দেখানোর পরে তারা সেগুলি ভুয়া বলে অভিহিত করে এবং তিনি একজন ‘বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গা’ – এই কথাও বলা হয়।

এরপরেই তাকে মারধর করে ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলানো হয়।

‘জয় শ্রীরাম’ নির্দিষ্টভাবে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির স্লোগান। ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগানটিকে কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মনে করে যে সেটি ভারত রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের প্রমাণ। বিশেষ করে ভারতীয় মুসলমানরা দেশের প্রতি অনুগত কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য এই স্লোগানটি অনেক সময়েই ব্যবহার করে থাকে কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

ঘটনাটি জানিয়ে ওড়িশা পুলিশ, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে ই-মেইল করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি সংগঠন।

ওড়িশা সরকার এ বছরের মার্চ মাসে রাজ্য বিধানসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিল যে সে রাজ্যে ৩৭৪০ জন বাংলাদেশিকে খুঁজে পেয়েছে, যারা বৈধ নথি ছাড়া বসবাস করছিলেন।

গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে ওড়িশায় ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।

এর আগে ভারতের নানা রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিচয় যাচাইয়ের নাম করে যেভাবে আটক রাখা হচ্ছিল, এবার ওড়িশা রাজ্যেও তা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংগঠনগুলি।

তারা বলছে, গত দিন দশেকে অন্তত তিনশ জন পরিযায়ী শ্রমিক এবং ফেরিওয়ালাকে আটক করে রাখা হয়েছিল। কাউকে তিনদিন, কাউকে পাঁচদিন পর্যন্ত আটক রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

ওড়িশা থেকে বিবিসির সংবাদদাতা সুব্রত পতি জানাচ্ছেন যে ‘অবৈধভাবে কোনও বাংলাদেশি’ ওড়িশায় থাকছেন কিনা, তা খুঁজতে জেলা স্তরে এ ধরনের পুলিশি অভিযান চলছে। পরিচয়পত্র যাচাই করার পরে ভারতীয় বলে নিশ্চিত হওয়ার পরে ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক বিবিসি বাংলার কাছে অভিযোগ করেছেন যে, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওড়িশা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।

এরকমই একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস দলের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। মিজ. মৈত্র ওই ঘটনায় ওড়িশা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন।

রাহুল ইসলামকে যেভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো হল

বছর ২৪ এর রাহুল ইসলাম সেদিন গিয়েছিলেন ওড়িশার গঞ্জাম জেলার রানীপাড়া গ্রামে।

ওড়িশায় তিনি বিছানার চাদর, শীতের পোশাক – এসব ফেরি করেন।

হঠাৎই তার কাছে একজন স্থানীয় গ্রামবাসী পরিচয় জানতে চান। মি. ইসলামের সঙ্গীরা অভিযোগ করছেন যে, তিনি ওই গ্রামবাসীকে আধার কার্ড দেখালে বলা হয় সেটি ফেলে দেওয়া হয়। তাকে বলা হয় যে সেটি নকল, মি. ইসলাম আসলে ‘বাংলাদেশি’, ‘রোহিঙ্গা’।

“কিছুক্ষণের মধ্যেই জড়ো হয়ে যায় প্রায় ২৫-৩০ জন। সবাই মিলে ঘিরে ধরে ওকে মারতে থাকে। কেউ চড়-থাপ্পড় মারে, তো কেউ লাথি মারে। কয়েকজন লাঠি দিয়েও ওকে মারছিল। ভারতমাতা কি জয় আর জয় শ্রীরাম বলেছিল রাহুল, তবুও মার বন্ধ হয়নি,” বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মি. ইসলামের সঙ্গে একই ঘরে ভাড়া থাকা মাইনুল সরকার।

তিনিও মুর্শিদাবাদে মি. ইসলামের গ্রাম চক হরেকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা এবং একই সঙ্গে ওড়িশায় শীতবস্ত্র ফেরি করেন।

ওই ঘটনার কিছু অংশের ভিডিও বিবিসি বাংলার হাতে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তাকে মারধর করার সঙ্গেই ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলতে বলা হচ্ছে। রাহুল ইসলাম, সেটা বলছেনও, তবুও মারধর আর লাথি মারা থামছে না।

মাইনুল ইসলাম বলছিলেন, “পরের দিন সকালে আমরা স্থানীয় থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে। কিন্তু পুলিশ আমাদের বলে যে তারা এই অভিযোগ নিতে পারবে না।”

তবে কোদালা থানার ওসি সুবাস বেহেরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে তার কাছে ওই ঘটনার কোনও খবর নেই।

“রাহুলকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন, ইনজেকশনও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওর সারা গায়ে এখনও কালশিটে আছে, শরীরে খুব ব্যথা। পেটে লাঠি দিয়ে মেরেছিল, সেই ক্ষতটা রয়ে গেছে। এই অবস্থায় আমরা যে চারজন একসঙ্গে থাকতাম, সবাই মুর্শিদাবাদে নিজের গ্রামে ফিরে এসেছি,” জানাচ্ছিলেন মাইনুল সরকার।

এই পলিটেকনিক কলেজে পাঁচ দিন আটক রাখা হয় ১৬ জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাকে

পরিচয় যাচাইয়ের নামে আটক

ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন টুটুল চৌধুরী। তাকে সহ মোট ১৬ জনকে ১৭ই নভেম্বর পাঁচদিন আটক রাখার পরে ছেড়েছে পুলিশ।

মি. চৌধুরি বলছিলেন, “সেদিন রাত ১০টা নাগাদ আমাদের ঘরে পুলিশ আসে। তারা বলে যে, আমরা যেন আধার কার্ড নিয়ে থানায় দেখা করতে যাই ওই রাতেই। আমরা সেখানে যাওয়ার পরে পুলিশ বলে তোমাদের ছাড়া যাবে না, আটক থাকতে হবে। থানা থেকে আমাদের পলিটেকনিক কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে খাবার দিত ঠিকই, কিন্তু বেরোতে পারতাম না আমরা। মাঝে মাঝেই এসে আমাদের পরিচয় জানতে চাইত, বাবার নাম, গ্রামের নাম – এসব বারবার জিজ্ঞাসা করত।”

“আজ ছাড়বে কাল ছাড়বে এই করে পাঁচদিন আমাদের আটক থাকতে হল। এর মধ্যে কোনও আদালতে তোলা হয়নি আমাদের,” বলছিলেন টুটুল চৌধুরি।

কেন্দ্রপাড়া জেলার পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ কাটারিয়া বিবিসির সংবাদদাতা সুব্রত পতিকে বলেছেন, “এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। সন্দেহভাজনদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য ডাকছি। জুন মাসে আমরা ৫০ জনেরও বেশি মানুষের পরিচয় যাচাই করেছি। কয়েকদিন আগে ১৬ জনকে ডাকা হয়েছিল, এখন আবার চারজনকে ডাকা হয়েছে। তবে কাউকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা হয়নি।”

ওড়িশার আরেকটি জেলা জগৎসিংপুরের পুলিশ সুপার অঙ্কিত কুমার ভার্মা বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, তার জেলাতেও কয়েকজন “সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে” আটক করা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্র এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভদ্রক জেলায় এমন নয়জনকে আটক করা হয়েছিল, যাদের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলার পরিচয়পত্র আছে। তাদেরও পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে বলে ওই সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছিল জেলা পুলিশ।

তবে রাজ্য জুড়ে কতজনকে আটক করা হচ্ছে বাংলাদেশি বলে, সেই হিসাব কেন্দ্রীয়ভাবে ওড়িশা পুলিশ দেয়নি।

পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ বলছে যে, তাদের কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে তিনশরও বেশি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাকে গত দিন দশেকে আটক করা হয়েছিল।

সংগঠনটির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক বলছিলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে যারা শ্রমিক হিসাবে বা ফেরি করতে যান, এরকম তিনশরও বেশি মানুষকে আটক করার খবর পেয়েছি আমরা। আদালতে পেশ না করে এভাবে আটক করে রাখা তো অসাংবিধানিক।”

”অনেক জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকদের রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে, অথচ এরা সকলেই ভারতের নাগরিক। আমরা ওড়িশা পুলিশের কাছে ই-মেইল করে অভিযোগ জানিয়েছি, কোনও উত্তর আসেনি। এরপর আমরা জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশনেও অভিযোগ করেছি,” তিনি বলেন।

“এইভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তা করা অন্য রাজ্যেও হয়েছে, তবে ওড়িশায় একটা নতুন বিষয় চোখে পড়ছে,” বলছিলেন আসিফ ফারুক।

তার কথায়, “এখানে দেখছি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির সদস্যরাও পরিযায়ীদের পরিচয় যাচাই করতে শুরু করেছে। তারাই আবার গণপ্রহারে অংশ নিচ্ছে। ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি রোহিঙ্গা তকমা দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই বিপজ্জনক।”

সাহেব শেখ (ডান দিক থেকে প্রথম) সহ যে চারজনকে এলাকা ছাড়ার 'নির্দেশ' দিয়েছে পুলিশ

ওড়িশা ছাড়ার ‘নির্দেশ’

পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে ওড়িশায় ব্যবসা করতে যান সাহেব শেখ। অন্য অনেকের মতো তাদেরও পরিচয় যাচাইয়ের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল নয়াগড় জেলার ওদাগাঁও থানার পুলিশ।

“গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দুটো নাগাদ আমাদের ঘরে দুই গাড়ি পুলিশ আসে। থানার একেবারে কাছেই থাকি আমরা, ওদের সঙ্গে চা খাই, কথা বলি। কিন্তু সেদিন এসে আমাদের বলে যে সবাই যেন আধার কার্ড নিয়ে থানায় যাই। আমরা চারজন একসঙ্গে ভাড়া নিয়ে থাকি। আমি বাকি তিনজনদের ফোন করে ঘরে ডেকে নিই। চারটের সময়ে আমরা যখন থানার দিকে রওনা হচ্ছি, তখন আবারও পুলিশ এসে বলে যে আমরা কেন থানায় যাইনি?”

সাহেব শেখের সঙ্গেই বাসা ভাড়া নেওয়া আব্দুস সালাম শেখকেও পুলিশ সেদিন থানায় ডেকেছিল।

তিনি জানাচ্ছিলেন, “পরিচয় যাচাই করে কিছুই পায়নি, তবুও পুলিশ বলে আমরা নাকি রোহিঙ্গা। আমরা বলেছিলাম যে আমরা কী করে রোহিঙ্গা হলাম, সব নথি তো আপনারা দেখলেন! তখন বলছে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলাম, তার মধ্যে নিজের গ্রামে ফিরে যাবি, এখানে তোদের জায়গা নেই। আমাদের আর কিছু বলার সুযোগও দেয়নি।”

সাহেব শেখ জানাচ্ছিলেন, “পুলিশ আমাদের বাড়ির মালিককে চাপ দিয়েছে যাতে ঘর ছেড়ে দিই আমরা। প্রথমে একদিন সময় দিয়েছিল, তারপরে তিন দিন সময় দেয় এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। আমরা প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটা জায়গায় চলে এসেছি। ওদের কথা না শুনে উপায় ছিল না! ব্যবসার মালপত্র অন্য লোকেদের দিয়ে চলে আসতে হলো। বড়ো ক্ষতি হয়ে গেল আমাদের।”

ওই ওদাগাঁও থানা থেকেই মুর্শিদাবাদের চারজন পরিযায়ীকে এলাকা ছাড়ার ‘নির্দেশ’ দেওয়ার ঘটনা মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। তবে তার উল্লেখ করা ঘটনাটি সাহেব শেখ সহ চারজনের, নাকি পৃথক কোনও ঘটনা, সেটা উল্লেখ করেননি মিজ. মৈত্র।

তিনি ওড়িশার নয়াগড় জেলার পুলিশ সুপার এস সুশ্রীকে ট্যাগ করে লিখেছেন “সব নথি রয়েছে এবং মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার নথি যাচাই করার পরেও চারজন বৈধ ভারতীয় নাগরিককে চলে যেতে বলেছে ওদাগাঁও থানার পুলিশ। নাহলে গ্রেফতারির হুমকি দেওয়া হয়েছে। বাড়ির মালিককে চাপ দেওয়া হয়েছে যাতে তাদের ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

“এটা বেআইনি এবং আমাদের সংবিধানের পরিপন্থি। আমি আপনাদের আদালতে নিয়ে যাব, তৈরি থাকুন,” লিখেছেন মহুয়া মৈত্র।

BBC News বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

পুতিনের ভারত সফর: যুদ্ধবিমান থেকে বাণিজ্যপথ—বৃহৎ চুক্তির সম্ভাবনা

ভারত: পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান যুবককে ওড়িশায় ‘বাংলাদেশি রোহিঙ্গা’ আখ্যা দিয়ে মারধর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর অভিযোগ

১১:১৭:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

(এই প্রতিবেদনে সহিংসতার কিছু ছবি এবং বর্ণনা পাঠকদের বিচলিত করতে পারে)

পশ্চিমবঙ্গের এক মুসলমান যুবককে ওড়িশা রাজ্যের একটি গ্রামে মারধর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কথিত ঘটনাটির কিছু অংশের ভিডিও বিবিসির হাতে এসেছে। রাহুল ইসলাম নামের ওই যুবক পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরপাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ, ওড়িশার গঞ্জাম জেলার একটি গ্রামে কিছু হিন্দুত্ববাদী মি. ইসলামকে তার পরিচয়পত্র যাচাই করেন এবং তা দেখানোর পরে তারা সেগুলি ভুয়া বলে অভিহিত করে এবং তিনি একজন ‘বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গা’ – এই কথাও বলা হয়।

এরপরেই তাকে মারধর করে ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলানো হয়।

‘জয় শ্রীরাম’ নির্দিষ্টভাবে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির স্লোগান। ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগানটিকে কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মনে করে যে সেটি ভারত রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের প্রমাণ। বিশেষ করে ভারতীয় মুসলমানরা দেশের প্রতি অনুগত কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য এই স্লোগানটি অনেক সময়েই ব্যবহার করে থাকে কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

ঘটনাটি জানিয়ে ওড়িশা পুলিশ, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে ই-মেইল করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি সংগঠন।

ওড়িশা সরকার এ বছরের মার্চ মাসে রাজ্য বিধানসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিল যে সে রাজ্যে ৩৭৪০ জন বাংলাদেশিকে খুঁজে পেয়েছে, যারা বৈধ নথি ছাড়া বসবাস করছিলেন।

গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে ওড়িশায় ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।

এর আগে ভারতের নানা রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিচয় যাচাইয়ের নাম করে যেভাবে আটক রাখা হচ্ছিল, এবার ওড়িশা রাজ্যেও তা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংগঠনগুলি।

তারা বলছে, গত দিন দশেকে অন্তত তিনশ জন পরিযায়ী শ্রমিক এবং ফেরিওয়ালাকে আটক করে রাখা হয়েছিল। কাউকে তিনদিন, কাউকে পাঁচদিন পর্যন্ত আটক রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

ওড়িশা থেকে বিবিসির সংবাদদাতা সুব্রত পতি জানাচ্ছেন যে ‘অবৈধভাবে কোনও বাংলাদেশি’ ওড়িশায় থাকছেন কিনা, তা খুঁজতে জেলা স্তরে এ ধরনের পুলিশি অভিযান চলছে। পরিচয়পত্র যাচাই করার পরে ভারতীয় বলে নিশ্চিত হওয়ার পরে ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক বিবিসি বাংলার কাছে অভিযোগ করেছেন যে, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওড়িশা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।

এরকমই একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস দলের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। মিজ. মৈত্র ওই ঘটনায় ওড়িশা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন।

রাহুল ইসলামকে যেভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো হল

বছর ২৪ এর রাহুল ইসলাম সেদিন গিয়েছিলেন ওড়িশার গঞ্জাম জেলার রানীপাড়া গ্রামে।

ওড়িশায় তিনি বিছানার চাদর, শীতের পোশাক – এসব ফেরি করেন।

হঠাৎই তার কাছে একজন স্থানীয় গ্রামবাসী পরিচয় জানতে চান। মি. ইসলামের সঙ্গীরা অভিযোগ করছেন যে, তিনি ওই গ্রামবাসীকে আধার কার্ড দেখালে বলা হয় সেটি ফেলে দেওয়া হয়। তাকে বলা হয় যে সেটি নকল, মি. ইসলাম আসলে ‘বাংলাদেশি’, ‘রোহিঙ্গা’।

“কিছুক্ষণের মধ্যেই জড়ো হয়ে যায় প্রায় ২৫-৩০ জন। সবাই মিলে ঘিরে ধরে ওকে মারতে থাকে। কেউ চড়-থাপ্পড় মারে, তো কেউ লাথি মারে। কয়েকজন লাঠি দিয়েও ওকে মারছিল। ভারতমাতা কি জয় আর জয় শ্রীরাম বলেছিল রাহুল, তবুও মার বন্ধ হয়নি,” বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মি. ইসলামের সঙ্গে একই ঘরে ভাড়া থাকা মাইনুল সরকার।

তিনিও মুর্শিদাবাদে মি. ইসলামের গ্রাম চক হরেকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা এবং একই সঙ্গে ওড়িশায় শীতবস্ত্র ফেরি করেন।

ওই ঘটনার কিছু অংশের ভিডিও বিবিসি বাংলার হাতে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তাকে মারধর করার সঙ্গেই ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলতে বলা হচ্ছে। রাহুল ইসলাম, সেটা বলছেনও, তবুও মারধর আর লাথি মারা থামছে না।

মাইনুল ইসলাম বলছিলেন, “পরের দিন সকালে আমরা স্থানীয় থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে। কিন্তু পুলিশ আমাদের বলে যে তারা এই অভিযোগ নিতে পারবে না।”

তবে কোদালা থানার ওসি সুবাস বেহেরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে তার কাছে ওই ঘটনার কোনও খবর নেই।

“রাহুলকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন, ইনজেকশনও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওর সারা গায়ে এখনও কালশিটে আছে, শরীরে খুব ব্যথা। পেটে লাঠি দিয়ে মেরেছিল, সেই ক্ষতটা রয়ে গেছে। এই অবস্থায় আমরা যে চারজন একসঙ্গে থাকতাম, সবাই মুর্শিদাবাদে নিজের গ্রামে ফিরে এসেছি,” জানাচ্ছিলেন মাইনুল সরকার।

এই পলিটেকনিক কলেজে পাঁচ দিন আটক রাখা হয় ১৬ জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাকে

পরিচয় যাচাইয়ের নামে আটক

ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন টুটুল চৌধুরী। তাকে সহ মোট ১৬ জনকে ১৭ই নভেম্বর পাঁচদিন আটক রাখার পরে ছেড়েছে পুলিশ।

মি. চৌধুরি বলছিলেন, “সেদিন রাত ১০টা নাগাদ আমাদের ঘরে পুলিশ আসে। তারা বলে যে, আমরা যেন আধার কার্ড নিয়ে থানায় দেখা করতে যাই ওই রাতেই। আমরা সেখানে যাওয়ার পরে পুলিশ বলে তোমাদের ছাড়া যাবে না, আটক থাকতে হবে। থানা থেকে আমাদের পলিটেকনিক কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে খাবার দিত ঠিকই, কিন্তু বেরোতে পারতাম না আমরা। মাঝে মাঝেই এসে আমাদের পরিচয় জানতে চাইত, বাবার নাম, গ্রামের নাম – এসব বারবার জিজ্ঞাসা করত।”

“আজ ছাড়বে কাল ছাড়বে এই করে পাঁচদিন আমাদের আটক থাকতে হল। এর মধ্যে কোনও আদালতে তোলা হয়নি আমাদের,” বলছিলেন টুটুল চৌধুরি।

কেন্দ্রপাড়া জেলার পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ কাটারিয়া বিবিসির সংবাদদাতা সুব্রত পতিকে বলেছেন, “এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। সন্দেহভাজনদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য ডাকছি। জুন মাসে আমরা ৫০ জনেরও বেশি মানুষের পরিচয় যাচাই করেছি। কয়েকদিন আগে ১৬ জনকে ডাকা হয়েছিল, এখন আবার চারজনকে ডাকা হয়েছে। তবে কাউকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা হয়নি।”

ওড়িশার আরেকটি জেলা জগৎসিংপুরের পুলিশ সুপার অঙ্কিত কুমার ভার্মা বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, তার জেলাতেও কয়েকজন “সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে” আটক করা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্র এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভদ্রক জেলায় এমন নয়জনকে আটক করা হয়েছিল, যাদের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলার পরিচয়পত্র আছে। তাদেরও পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে বলে ওই সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছিল জেলা পুলিশ।

তবে রাজ্য জুড়ে কতজনকে আটক করা হচ্ছে বাংলাদেশি বলে, সেই হিসাব কেন্দ্রীয়ভাবে ওড়িশা পুলিশ দেয়নি।

পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ বলছে যে, তাদের কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে তিনশরও বেশি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাকে গত দিন দশেকে আটক করা হয়েছিল।

সংগঠনটির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক বলছিলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে যারা শ্রমিক হিসাবে বা ফেরি করতে যান, এরকম তিনশরও বেশি মানুষকে আটক করার খবর পেয়েছি আমরা। আদালতে পেশ না করে এভাবে আটক করে রাখা তো অসাংবিধানিক।”

”অনেক জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকদের রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে, অথচ এরা সকলেই ভারতের নাগরিক। আমরা ওড়িশা পুলিশের কাছে ই-মেইল করে অভিযোগ জানিয়েছি, কোনও উত্তর আসেনি। এরপর আমরা জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশনেও অভিযোগ করেছি,” তিনি বলেন।

“এইভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তা করা অন্য রাজ্যেও হয়েছে, তবে ওড়িশায় একটা নতুন বিষয় চোখে পড়ছে,” বলছিলেন আসিফ ফারুক।

তার কথায়, “এখানে দেখছি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির সদস্যরাও পরিযায়ীদের পরিচয় যাচাই করতে শুরু করেছে। তারাই আবার গণপ্রহারে অংশ নিচ্ছে। ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি রোহিঙ্গা তকমা দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই বিপজ্জনক।”

সাহেব শেখ (ডান দিক থেকে প্রথম) সহ যে চারজনকে এলাকা ছাড়ার 'নির্দেশ' দিয়েছে পুলিশ

ওড়িশা ছাড়ার ‘নির্দেশ’

পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে ওড়িশায় ব্যবসা করতে যান সাহেব শেখ। অন্য অনেকের মতো তাদেরও পরিচয় যাচাইয়ের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল নয়াগড় জেলার ওদাগাঁও থানার পুলিশ।

“গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দুটো নাগাদ আমাদের ঘরে দুই গাড়ি পুলিশ আসে। থানার একেবারে কাছেই থাকি আমরা, ওদের সঙ্গে চা খাই, কথা বলি। কিন্তু সেদিন এসে আমাদের বলে যে সবাই যেন আধার কার্ড নিয়ে থানায় যাই। আমরা চারজন একসঙ্গে ভাড়া নিয়ে থাকি। আমি বাকি তিনজনদের ফোন করে ঘরে ডেকে নিই। চারটের সময়ে আমরা যখন থানার দিকে রওনা হচ্ছি, তখন আবারও পুলিশ এসে বলে যে আমরা কেন থানায় যাইনি?”

সাহেব শেখের সঙ্গেই বাসা ভাড়া নেওয়া আব্দুস সালাম শেখকেও পুলিশ সেদিন থানায় ডেকেছিল।

তিনি জানাচ্ছিলেন, “পরিচয় যাচাই করে কিছুই পায়নি, তবুও পুলিশ বলে আমরা নাকি রোহিঙ্গা। আমরা বলেছিলাম যে আমরা কী করে রোহিঙ্গা হলাম, সব নথি তো আপনারা দেখলেন! তখন বলছে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলাম, তার মধ্যে নিজের গ্রামে ফিরে যাবি, এখানে তোদের জায়গা নেই। আমাদের আর কিছু বলার সুযোগও দেয়নি।”

সাহেব শেখ জানাচ্ছিলেন, “পুলিশ আমাদের বাড়ির মালিককে চাপ দিয়েছে যাতে ঘর ছেড়ে দিই আমরা। প্রথমে একদিন সময় দিয়েছিল, তারপরে তিন দিন সময় দেয় এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। আমরা প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটা জায়গায় চলে এসেছি। ওদের কথা না শুনে উপায় ছিল না! ব্যবসার মালপত্র অন্য লোকেদের দিয়ে চলে আসতে হলো। বড়ো ক্ষতি হয়ে গেল আমাদের।”

ওই ওদাগাঁও থানা থেকেই মুর্শিদাবাদের চারজন পরিযায়ীকে এলাকা ছাড়ার ‘নির্দেশ’ দেওয়ার ঘটনা মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র। তবে তার উল্লেখ করা ঘটনাটি সাহেব শেখ সহ চারজনের, নাকি পৃথক কোনও ঘটনা, সেটা উল্লেখ করেননি মিজ. মৈত্র।

তিনি ওড়িশার নয়াগড় জেলার পুলিশ সুপার এস সুশ্রীকে ট্যাগ করে লিখেছেন “সব নথি রয়েছে এবং মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার নথি যাচাই করার পরেও চারজন বৈধ ভারতীয় নাগরিককে চলে যেতে বলেছে ওদাগাঁও থানার পুলিশ। নাহলে গ্রেফতারির হুমকি দেওয়া হয়েছে। বাড়ির মালিককে চাপ দেওয়া হয়েছে যাতে তাদের ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

“এটা বেআইনি এবং আমাদের সংবিধানের পরিপন্থি। আমি আপনাদের আদালতে নিয়ে যাব, তৈরি থাকুন,” লিখেছেন মহুয়া মৈত্র।

BBC News বাংলা