০১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
সোনার লড়াইয়ে মালয়েশিয়ার ভরসা লিয়ং জুন হাও চলচ্চিত্রকারের নীল দিনের গল্প বিশ্বে প্লাস্টিক দূষণের সংকট ২০৪০ সালে আরও ভয়াবহ হতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন ঘোষণার এক বছর: ন্যায়বিচারের দাবিতে প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং চীন–জাপান উত্তেজনায় নতুন অধ্যায় সরাসরি সম্প্রচারে অসুস্থ হয়ে পড়লেন উপস্থাপক লরা উডস ২০২৫ সালের শেষে কীভাবে দেখবেন স্পটিফাই র‌্যাপড, ইউটিউব রিক্যাপ ও অন্যান্য বার্ষিক সংক্ষিপ্তসার হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনে নতুন ভোট: নবজাতক সুরক্ষা নীতিতে বড় পরিবর্তনের আভাস যুদ্ধ থেকে অর্থ তুলতে চাওয়া: রাশিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা কেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য ক্ষতিকর পুতিনের ভারত সফর: যুদ্ধবিমান থেকে বাণিজ্যপথ—বৃহৎ চুক্তির সম্ভাবনা

চীনের ওষুধ উদ্ভাবন শিল্প কীভাবে দ্রুত বিকাশ পেল

চীনের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প এখন বিশাল পরিবর্তন ও প্রবৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে। অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা সক্রিয় ওষুধ উপাদান (এপিআই) উৎপাদনকারী থেকে উন্নীত হয়ে নতুন ও আরও কার্যকর ওষুধ উদ্ভাবনের একটি প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

এখন যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ওষুধ উন্নয়নকারী দেশ হলো চীন। বৈশ্বিক ওষুধ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ২০১৩ সালে যেখানে তাদের অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৮ শতাংশ। এই উদ্ভাবনী ওষুধ তৈরি করা কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্যও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নাসডাক, হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সাংহাইয়ের স্টার মার্কেটে তালিকাভুক্ত চীনা উদ্ভাবনী ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত বাজারমূল্য ২০১৬ সালের ৩০০ কোটি ডলার থেকে ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সাম্প্রতিক কয়েকটি বছর চীনের ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্য সবচেয়ে উৎপাদনশীল সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মধ্যে চীনের গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয়ের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.৭ শতাংশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের ১.৭ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১.৬ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী স্পষ্ট—বিশ্বের বড় বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো এখন চীনের উদ্ভাবনী ওষুধের দিকে ঝুঁকছে, এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বও বাড়ছে।

বৈশ্বিক বিনিয়োগ ব্যাংক ARC Group–এর জুলাই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীনের উদ্ভাবনী ওষুধ শিল্প তার ‘ডিপসিক’ মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ৫০টির বেশি বড় সীমান্ত–পারাপার চুক্তি হয়েছে, যার মোট মূল্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার। কয়েকটি চীনা ওষুধ মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (FDA) থেকে অনুমোদন পেয়েছে বা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গুরুত্বপূর্ণ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।

মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ঘোষণা করে যে তারা চীনের বায়োটেক প্রতিষ্ঠান 3SBio–কে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করবে তাদের নতুন ক্যানসার ওষুধের উৎপাদন ও চীনের বাইরে বিক্রির একচেটিয়া অধিকার পাওয়ার জন্য। এটি চীনের জন্য রেকর্ড পরিমাণ লাইসেন্সিং চুক্তি। এর অল্প সময় পরেই ব্রিটিশ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন জিয়াংসু হেনগ্রুই ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে একটি চুক্তি করে, যেখানে তারা ফুসফুসের রোগের ওষুধের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করে এবং আরও ১২টি ওষুধ কেনার জন্য অতিরিক্ত ১২ বিলিয়ন ডলারের বিকল্প অধিকার রাখে।

এ সময়ের কাছাকাছি, যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেক কোম্পানি রিজেনেরন ফার্মাসিউটিক্যালস চীনা কোম্পানি হানসোহ ফার্মাসিউটিক্যালের কাছ থেকে স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের একটি পরীক্ষামূলক ওষুধের অধিকার পেতে ৮০ মিলিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করে, যার মোট চুক্তিমূল্য আনুমানিক ২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনার লড়াইয়ে মালয়েশিয়ার ভরসা লিয়ং জুন হাও

চীনের ওষুধ উদ্ভাবন শিল্প কীভাবে দ্রুত বিকাশ পেল

১২:১৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

চীনের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প এখন বিশাল পরিবর্তন ও প্রবৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে। অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা সক্রিয় ওষুধ উপাদান (এপিআই) উৎপাদনকারী থেকে উন্নীত হয়ে নতুন ও আরও কার্যকর ওষুধ উদ্ভাবনের একটি প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

এখন যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ওষুধ উন্নয়নকারী দেশ হলো চীন। বৈশ্বিক ওষুধ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ২০১৩ সালে যেখানে তাদের অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৮ শতাংশ। এই উদ্ভাবনী ওষুধ তৈরি করা কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্যও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নাসডাক, হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সাংহাইয়ের স্টার মার্কেটে তালিকাভুক্ত চীনা উদ্ভাবনী ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত বাজারমূল্য ২০১৬ সালের ৩০০ কোটি ডলার থেকে ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সাম্প্রতিক কয়েকটি বছর চীনের ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্য সবচেয়ে উৎপাদনশীল সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মধ্যে চীনের গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয়ের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.৭ শতাংশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের ১.৭ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১.৬ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী স্পষ্ট—বিশ্বের বড় বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো এখন চীনের উদ্ভাবনী ওষুধের দিকে ঝুঁকছে, এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বও বাড়ছে।

বৈশ্বিক বিনিয়োগ ব্যাংক ARC Group–এর জুলাই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীনের উদ্ভাবনী ওষুধ শিল্প তার ‘ডিপসিক’ মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ৫০টির বেশি বড় সীমান্ত–পারাপার চুক্তি হয়েছে, যার মোট মূল্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার। কয়েকটি চীনা ওষুধ মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (FDA) থেকে অনুমোদন পেয়েছে বা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গুরুত্বপূর্ণ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।

মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ঘোষণা করে যে তারা চীনের বায়োটেক প্রতিষ্ঠান 3SBio–কে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করবে তাদের নতুন ক্যানসার ওষুধের উৎপাদন ও চীনের বাইরে বিক্রির একচেটিয়া অধিকার পাওয়ার জন্য। এটি চীনের জন্য রেকর্ড পরিমাণ লাইসেন্সিং চুক্তি। এর অল্প সময় পরেই ব্রিটিশ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন জিয়াংসু হেনগ্রুই ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে একটি চুক্তি করে, যেখানে তারা ফুসফুসের রোগের ওষুধের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করে এবং আরও ১২টি ওষুধ কেনার জন্য অতিরিক্ত ১২ বিলিয়ন ডলারের বিকল্প অধিকার রাখে।

এ সময়ের কাছাকাছি, যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেক কোম্পানি রিজেনেরন ফার্মাসিউটিক্যালস চীনা কোম্পানি হানসোহ ফার্মাসিউটিক্যালের কাছ থেকে স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের একটি পরীক্ষামূলক ওষুধের অধিকার পেতে ৮০ মিলিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করে, যার মোট চুক্তিমূল্য আনুমানিক ২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।