০৪:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে শুক্রবার নিউ অরলিন্স এলাকায় সীমান্তরক্ষা অভিযান ‘কাটাহুলা ক্রাঞ্চ’ শুরু, শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্ণায়ক গ্রেপ্তার ও উদ্বেগ পুতিনের ভারত সফর: কোন বিষয়গুলোতে জোর দিচ্ছে দুই দেশ পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ভোরে বাংলাদেশি যুবক নিহত চুয়াডাঙ্গায় ১২.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম কাপড়ের অভাব, চরম দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ সোনার লড়াইয়ে মালয়েশিয়ার ভরসা লিয়ং জুন হাও চলচ্চিত্রকারের নীল দিনের গল্প বিশ্বে প্লাস্টিক দূষণের সংকট ২০৪০ সালে আরও ভয়াবহ হতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন ঘোষণার এক বছর: ন্যায়বিচারের দাবিতে প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং চীন–জাপান উত্তেজনায় নতুন অধ্যায়

পুতিনের ভারত সফর: কোন বিষয়গুলোতে জোর দিচ্ছে দুই দেশ

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিল্লি সফর দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, মহাকাশ গবেষণা, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং বাণিজ্য ভারসাম্য পুনর্গঠনের ওপর কেন্দ্রিত। যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই এ সফর দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন গতিতে এগিয়ে দিচ্ছে।


ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন অধ্যায়
৪ ডিসেম্বর পুতিনের সফরটি ২০২১ সালের পর তার প্রথম ভারত সফর। ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা ৫০ শতাংশ শুল্কের চাপের মধ্যে ভারত এখন আরও বৈচিত্র্যময় বাণিজ্যিক অংশীদার খুঁজছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, রুশ তেল আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়ন কমাতে সহায়ক। কিন্তু ভারত বলছে, তেল কেনা হচ্ছে সম্পূর্ণ জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে।
এদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশ জ্বালানি কোম্পানিগুলোও ক্রমাগত চাপে রয়েছে।

পুতিনের সফরে প্রধান চারটি ইস্যুতে জোর দেওয়া হচ্ছে—প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ১০০ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য লক্ষ্য অর্জন।


প্রতিরক্ষা সহযোগিতা: যৌথ উৎপাদন ও প্রযুক্তি স্থানান্তর
সামরিক সহযোগিতা সফরের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা। বিশেষত পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান সুখোই সু-৫৭ যৌথভাবে উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি ভূ-অভিযান, নৌ-অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি স্থানান্তরের বিষয়গুলোও আলোচনায় থাকবে।

রাশিয়ার পার্লামেন্ট স্টেট দুমা ইতিমধ্যেই ভারত-রাশিয়া সামরিক সহযোগিতা চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে যৌথ মহড়া, উদ্ধার ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুই দেশের মাটিতে সেনা ও সরঞ্জাম মোতায়েনের ক্ষেত্রে আরও আইনি সুবিধা তৈরি হবে।

‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের আওতায় ভারত দেশীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদনে বিদেশি অংশীদারদের উৎসাহিত করছে। সেই ধারাবাহিকতায় রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত অস্ত্র রফতানিকারক রোসোবোরোনএক্সপোর্ট দুবাই এয়ারশোতে ভারতীয় গণমাধ্যমের সামনে যৌথ উদ্যোগের সক্ষমতা তুলে ধরে। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি আলিপভও সু-৫৭ যৌথ উৎপাদন আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


মহাকাশ সহযোগিতা: নতুন যুগে অংশীদারিত্ব
রসকসমসের প্রধান জানিয়েছেন, ভারত-রাশিয়া মহাকাশ সহযোগিতায় রকেট জ্বালানি, ইঞ্জিন নির্মাণ, মানব মহাকাশযাত্রা এবং নিজস্ব কক্ষপথ স্টেশন উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ষাটের দশক থেকে দু’দেশ মহাকাশ গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করছে। ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মা সোভিয়েত সয়ুজে ভ্রমণ করে প্রথম ভারতীয় নভোচারী হন। ভারতের গগনযান মানব মহাকাশ মিশনেও রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।


অর্থনীতি ও ডি-ডলারাইজেশন: রুপি-রুবল লেনদেনে গতি
সফরের আগে পুতিন ঘোষণা করেছেন, দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে। দুই দেশ নিজেদের জাতীয় পেমেন্ট সিস্টেম—রাশিয়ার “Mir” এবং ভারতের “RuPay” —পারস্পরিক স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এরপর ধাপে ধাপে রাশিয়ার দ্রুত পেমেন্ট ব্যবস্থা SBP ও ভারতের UPI যুক্ত করার কাজ এগোচ্ছে।

বর্তমানে দুই দেশের ৯০ শতাংশ বাণিজ্য জাতীয় মুদ্রায় নিষ্পত্তি হচ্ছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “ভারতের সঙ্গে যা ভাগ করা সম্ভব, তা ভাগ করা হবে।”


বাণিজ্য সম্প্রসারণ: বেসরকারি খাতের নতুন সম্ভাবনা
পুতিন-মোদির বৈঠকের পাশাপাশি ভারত-রাশিয়া আন্তঃসরকারি কমিশনের বৈঠকেও বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতিগত সহযোগিতা পর্যালোচনা করা হবে।
উপকরণ, কাঁচামাল এবং খাদ্যপণ্যসহ ভারতীয় রফতানি রাশিয়ায় বাড়াতে নতুন পথ খোঁজার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে। বর্তমানে ভারতের রাশিয়ায় রফতানি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আমদানি ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
এ কারণে বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে রাশিয়া বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে।


কূটনৈতিক বার্তা: সম্পর্কের উষ্ণতা ও কৌশলগত স্থায়িত্ব
মোদির সঙ্গে পুতিনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, যা দুই দেশের কূটনৈতিক সেতুবন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে। দুই নেতা শেষবার সেপ্টেম্বর মাসে শিয়ানে এসসিও সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এবার সফরের মাধ্যমে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার হচ্ছে।

রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী দেনিস মানতুরভ বলেছেন, সফরের এজেন্ডা দুই পক্ষ অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে প্রস্তুত করেছে—যা সম্পর্কের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে।
ভারত সম্প্রতি কাজান ও ইকাতেরিনবার্গে নতুন কনস্যুলেট খুলেছে, যা ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সহযোগিতা আরও বাড়ার ইঙ্গিত।

ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে ভারতের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানকে রাশিয়া বিশেষভাবে মূল্যায়ন করে। পেসকভ বলেন, “ভারত মস্কোর অবস্থান মনোযোগ দিয়ে শোনে—এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”


সফরের তাৎপর্য
২০২২ সালের ইউক্রেন যুদ্ধের পর এটি পুতিনের প্রথম ভারত সফর। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা, রুশ তেল কেনায় ভারতের ওপর মার্কিন শুল্কের চাপ এবং বাণিজ্য বৈষম্যের মধ্যেও এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি কমে গেলেও দেশটি ভারতের বৃহত্তম রফতানি বাজার হিসেবে রয়েছে। ভারত শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায় রয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়া বাণিজ্য বৈষম্য কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে সফর দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রায় উন্নীত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।


#পুতিনভারতসফর #ভারতরাশিয়াসম্পর্ক #বাণিজ্যওপ্রতিরক্ষা #মহাকাশসহযোগিতা #সারাক্ষণরিপোর্ট


জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে শুক্রবার

পুতিনের ভারত সফর: কোন বিষয়গুলোতে জোর দিচ্ছে দুই দেশ

০৩:২১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিল্লি সফর দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, মহাকাশ গবেষণা, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং বাণিজ্য ভারসাম্য পুনর্গঠনের ওপর কেন্দ্রিত। যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই এ সফর দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন গতিতে এগিয়ে দিচ্ছে।


ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন অধ্যায়
৪ ডিসেম্বর পুতিনের সফরটি ২০২১ সালের পর তার প্রথম ভারত সফর। ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা ৫০ শতাংশ শুল্কের চাপের মধ্যে ভারত এখন আরও বৈচিত্র্যময় বাণিজ্যিক অংশীদার খুঁজছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, রুশ তেল আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়ন কমাতে সহায়ক। কিন্তু ভারত বলছে, তেল কেনা হচ্ছে সম্পূর্ণ জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে।
এদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশ জ্বালানি কোম্পানিগুলোও ক্রমাগত চাপে রয়েছে।

পুতিনের সফরে প্রধান চারটি ইস্যুতে জোর দেওয়া হচ্ছে—প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ১০০ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য লক্ষ্য অর্জন।


প্রতিরক্ষা সহযোগিতা: যৌথ উৎপাদন ও প্রযুক্তি স্থানান্তর
সামরিক সহযোগিতা সফরের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা। বিশেষত পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান সুখোই সু-৫৭ যৌথভাবে উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি ভূ-অভিযান, নৌ-অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি স্থানান্তরের বিষয়গুলোও আলোচনায় থাকবে।

রাশিয়ার পার্লামেন্ট স্টেট দুমা ইতিমধ্যেই ভারত-রাশিয়া সামরিক সহযোগিতা চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে যৌথ মহড়া, উদ্ধার ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুই দেশের মাটিতে সেনা ও সরঞ্জাম মোতায়েনের ক্ষেত্রে আরও আইনি সুবিধা তৈরি হবে।

‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের আওতায় ভারত দেশীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদনে বিদেশি অংশীদারদের উৎসাহিত করছে। সেই ধারাবাহিকতায় রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত অস্ত্র রফতানিকারক রোসোবোরোনএক্সপোর্ট দুবাই এয়ারশোতে ভারতীয় গণমাধ্যমের সামনে যৌথ উদ্যোগের সক্ষমতা তুলে ধরে। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি আলিপভও সু-৫৭ যৌথ উৎপাদন আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


মহাকাশ সহযোগিতা: নতুন যুগে অংশীদারিত্ব
রসকসমসের প্রধান জানিয়েছেন, ভারত-রাশিয়া মহাকাশ সহযোগিতায় রকেট জ্বালানি, ইঞ্জিন নির্মাণ, মানব মহাকাশযাত্রা এবং নিজস্ব কক্ষপথ স্টেশন উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ষাটের দশক থেকে দু’দেশ মহাকাশ গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করছে। ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মা সোভিয়েত সয়ুজে ভ্রমণ করে প্রথম ভারতীয় নভোচারী হন। ভারতের গগনযান মানব মহাকাশ মিশনেও রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।


অর্থনীতি ও ডি-ডলারাইজেশন: রুপি-রুবল লেনদেনে গতি
সফরের আগে পুতিন ঘোষণা করেছেন, দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো হবে। দুই দেশ নিজেদের জাতীয় পেমেন্ট সিস্টেম—রাশিয়ার “Mir” এবং ভারতের “RuPay” —পারস্পরিক স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এরপর ধাপে ধাপে রাশিয়ার দ্রুত পেমেন্ট ব্যবস্থা SBP ও ভারতের UPI যুক্ত করার কাজ এগোচ্ছে।

বর্তমানে দুই দেশের ৯০ শতাংশ বাণিজ্য জাতীয় মুদ্রায় নিষ্পত্তি হচ্ছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “ভারতের সঙ্গে যা ভাগ করা সম্ভব, তা ভাগ করা হবে।”


বাণিজ্য সম্প্রসারণ: বেসরকারি খাতের নতুন সম্ভাবনা
পুতিন-মোদির বৈঠকের পাশাপাশি ভারত-রাশিয়া আন্তঃসরকারি কমিশনের বৈঠকেও বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতিগত সহযোগিতা পর্যালোচনা করা হবে।
উপকরণ, কাঁচামাল এবং খাদ্যপণ্যসহ ভারতীয় রফতানি রাশিয়ায় বাড়াতে নতুন পথ খোঁজার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে। বর্তমানে ভারতের রাশিয়ায় রফতানি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আমদানি ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
এ কারণে বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে রাশিয়া বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে।


কূটনৈতিক বার্তা: সম্পর্কের উষ্ণতা ও কৌশলগত স্থায়িত্ব
মোদির সঙ্গে পুতিনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, যা দুই দেশের কূটনৈতিক সেতুবন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে। দুই নেতা শেষবার সেপ্টেম্বর মাসে শিয়ানে এসসিও সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এবার সফরের মাধ্যমে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার হচ্ছে।

রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী দেনিস মানতুরভ বলেছেন, সফরের এজেন্ডা দুই পক্ষ অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে প্রস্তুত করেছে—যা সম্পর্কের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে।
ভারত সম্প্রতি কাজান ও ইকাতেরিনবার্গে নতুন কনস্যুলেট খুলেছে, যা ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সহযোগিতা আরও বাড়ার ইঙ্গিত।

ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে ভারতের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানকে রাশিয়া বিশেষভাবে মূল্যায়ন করে। পেসকভ বলেন, “ভারত মস্কোর অবস্থান মনোযোগ দিয়ে শোনে—এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”


সফরের তাৎপর্য
২০২২ সালের ইউক্রেন যুদ্ধের পর এটি পুতিনের প্রথম ভারত সফর। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা, রুশ তেল কেনায় ভারতের ওপর মার্কিন শুল্কের চাপ এবং বাণিজ্য বৈষম্যের মধ্যেও এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি কমে গেলেও দেশটি ভারতের বৃহত্তম রফতানি বাজার হিসেবে রয়েছে। ভারত শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায় রয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়া বাণিজ্য বৈষম্য কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে সফর দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রায় উন্নীত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।


#পুতিনভারতসফর #ভারতরাশিয়াসম্পর্ক #বাণিজ্যওপ্রতিরক্ষা #মহাকাশসহযোগিতা #সারাক্ষণরিপোর্ট