জাপানের নোবেলজয়ী গবেষক শিমন সাকাগুচি আশা করছেন, তার আবিষ্কৃত নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেল প্রযুক্তি ভবিষ্যতে ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা এবং মেটাস্টেসিস কমানো—এই দুটি লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন তিনি।
ইমিউনোথেরাপির নতুন স্বপ্ন
স্টকহোমে নোবেল প্রদান অনুষ্ঠানের আগে এক সাক্ষাৎকারে সাকাগুচি জানান, নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেলের ক্লিনিক্যাল ব্যবহার এগোচ্ছে ঠিকই, তবে ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে আরও শক্ত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেন মেটাস্টেসিসের ঝুঁকি কমানো যায়, সেদিকেই তাদের লক্ষ্য।
যুক্তরাষ্ট্রে স্টার্টআপ, নতুন ওষুধের পরিকল্পনা

ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক যুক্তরাষ্ট্রে রেজসেল নামে একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেল ব্যবহার করে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উন্নয়ন করছে। আগামী বছর শুরু হতে যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধব্যাধির বিরুদ্ধে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা। সাকাগুচি এমন একটি মুখে খাওয়ার ওষুধ তৈরি করতে চান, যা নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেলের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হবে।
মেটাস্টেসিস কমাতে সার্বজনীন ওষুধের লক্ষ্য
তিনি উল্লেখ করেন, ক্যান্সারে মৃত্যুর ৯০ শতাংশই মেটাস্টেসিসের কারণে। তাই এমন একটি ওষুধ তৈরি করাই তার লক্ষ্য, যা সব ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই মেটাস্টেসিসের হার কমাতে পারবে। তিনি হাম রোগের উদাহরণ দিয়ে বলেন, একবার আক্রান্ত হলে যেমন পুনরায় আক্রান্ত হওয়া কঠিন, তেমনই ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও দীর্ঘমেয়াদি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ।

নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেলই হতে পারে ভবিষ্যতের সমাধান
তিনি জানান, ক্যান্সার কোষ আক্রমণকারী লিম্ফোসাইটকে শক্তিশালী করার জন্য নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেল নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছেন। বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধ ব্যাধির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলো পুরো রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তার লক্ষ্য এমন প্রযুক্তি তৈরি করা, যা শুধু নির্দিষ্ট অবস্থা দমন করতে সক্ষম হবে এবং কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত নিয়ন্ত্রণকারী টি-সেল এর সমাধান দিতে পারে।
জাপানের গবেষণা সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ
সাকাগুচি বলেন, জাপানে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা অনুদানের ঘাটতি রয়েছে। তিনি জানান, আশির দশকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর দীর্ঘ আট বছর তিনি বৃত্তি পেয়েছিলেন। তার মতে, অলিম্পিকের মতো গবেষণাক্ষেত্রেও যদি আগেভাগে বিনিয়োগ করা যায়, তবে ফলও ততটাই শক্তিশালী হবে। সরকার ও সমাজের কাছে তিনি এ ধরনের গবেষণা সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















