কুয়েত শহরের আকাশজুড়ে নেমে এসেছে ঘন ও নিচু মেঘের চাদর। শীতকালীন আবহাওয়ার স্বাভাবিক ধারায় বড় বড় মেঘগুচ্ছ ভবন আর টাওয়ারের খুব কাছ দিয়ে ভেসে যেতে দেখা গেছে, যেন শহরের গায়ে গায়ে লেগে আছে আকাশ। এই দৃশ্য কুয়েত শহরকে দিয়েছে এক ধরনের নীরব, শান্ত কিন্তু গভীর উপস্থিতি, যা মুহূর্তেই নগরীর চেনা চেহারাকে বদলে দিয়েছে।
বর্তমান আবহাওয়ার চিত্র
দেশজুড়ে এখন মেঘলা আবহাওয়ার সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের পর কিছু এলাকায় বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে। একই সঙ্গে কুয়াশা ও দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কুয়েতের আবহাওয়া বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ধারার আল আলি জানান, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ ধীরে ধীরে শক্তিশালী হচ্ছে, যার সঙ্গে ওপরের স্তরের নিম্নচাপ ও ঠান্ডা আর্দ্র বায়ু মিলিত হয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর ফলে নিচু ও মাঝারি স্তরের মেঘের পরিমাণ বাড়ছে এবং কোথাও কোথাও বজ্রমেঘও তৈরি হচ্ছে।
বৃষ্টি ও দৃশ্যমানতার সতর্কতা
আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃষ্টি হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার হলেও কোথাও কোথাও বজ্রসহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে দক্ষিণ ও উপকূলীয় এলাকায়। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে। বৃষ্টির সময় এবং ভোর ও সন্ধ্যায় কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। বাতাস দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে হালকা থেকে মাঝারি বেগে বইতে পারে এবং মাঝে মাঝে শক্তিশালী হয়ে সমুদ্রের ঢেউ বাড়াতে পারে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পনেরো থেকে উনিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সাত থেকে এগারো ডিগ্রির মধ্যে থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলের পর ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে।

ক্যাম্পিংয়ে অগ্নি নিরাপত্তার আহ্বান
এদিকে শীতের ক্যাম্পিং মৌসুমে মরুভূমিতে অবস্থানকারীদের জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছে কুয়েত ফায়ার ফোর্স। সংস্থাটির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ আল ঘারিব জানান, নিরাপদ ক্যাম্পিং স্থান নির্বাচনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বন্যার প্রবাহপথ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং আলোক ও উষ্ণতার সরঞ্জাম ব্যবহারে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। তিনি বলেন, নির্ধারিত স্থান ছাড়া আগুন জ্বালানো উচিত নয় এবং ঘুমানোর আগে বা ক্যাম্প ছাড়ার সময় আগুন সম্পূর্ণভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে। তাঁবুর ভেতরে বা বন্ধ জায়গায় চুলা ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে কার্বন মনোক্সাইড জমে শ্বাসরোধ ও মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
ফায়ার ফোর্স আরও জানায়, শিশুদের আগুনের কাছাকাছি একা না রাখা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, শুকনো ঘাস সরিয়ে ফেলা এবং বিদ্যুৎ টাওয়ারের পাশে ক্যাম্প না করার বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, দুই হাজার চব্বিশ সালের ক্যাম্পিং মৌসুমে একষট্টিটি ক্যাম্পে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই নিরাপত্তা নির্দেশনা না মানার কারণে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফায়ার ফোর্স তাদের নিরাপদ ক্যাম্পিং সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জরুরি প্রয়োজনে নির্দিষ্ট নম্বরে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে।
#কুয়েত #কুয়েতশহর #আবহাওয়া #বৃষ্টি #শীত #মেঘলা #কুয়েতআকাশ #ক্যাম্পিং #অগ্নিনিরাপত্তা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















