নিউইয়র্ক থিয়েটার ওয়ার্কশপে মঞ্চস্থ মলিয়েরের ক্লাসিক ব্যঙ্গনাটক ‘টার্টুফ’-এর নতুন সংস্করণটি দর্শকের সামনে হাজির হয়েছে পরিচিত কাঠামো ও সংযত অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। সমকালীন ভাষা ব্যবহার করা হলেও মূল কাহিনি ও পরিণতিতে বড় কোনো চমক নেই। নাট্যকার লুকাস হ্নাথের কাছ থেকে যে সৃজনশীল ঝুঁকি প্রত্যাশিত ছিল, সেটি এখানে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে
মূল কাহিনিতে পরিবর্তন নেই
নাটকটি মূলত মলিয়েরের সপ্তদশ শতকের কাহিনি কে অনুসরণ করেছে। ভণ্ড ধার্মিক টার্টুফ ধনী গৃহকর্তা অর্গঁর বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ধীরে ধীরে পরিবারের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। অর্গঁ তার প্রতি এতটা মোহগ্রস্ত যে কন্যার বিয়ে ভেঙে তাকে টার্টুফের সঙ্গে জুড়ে দিতে প্রস্তুত হয়। শেষ পর্যন্ত রাজকীয় হস্তক্ষেপে সত্য উদঘাটিত হয় এবং ভণ্ডামি প্রকাশ্যে আসে।
ম্যাথিউ ব্রডেরিকের সংযত টার্টুফ
শিরোনাম চরিত্রে ম্যাথিউ ব্রডেরিকের অভিনয় শান্ত ও সংযত। কণ্ঠস্বর ও ভঙ্গিতে তিনি ভণ্ড সাধুর ভেতরের ছলনাকে খুব জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারেননি। ফলে প্রশ্ন থেকেই যায়, এই নিরীহ উপস্থিতি কীভাবে অর্গঁ ও তার মায়ের মতো চরিত্রদের এতটা প্রভাবিত করে।

সহশিল্পীদের উজ্জ্বল উপস্থিতি
নাটকের প্রাণ হয়ে উঠেছেন মাদাম পারনেলের চরিত্রে বিয়াঙ্কা ডেল রিও। তার তীক্ষ্ণ সংলাপ ও দমদার মঞ্চচারণা শুরু থেকেই দর্শক ধরে রাখে। ডোরিন চরিত্রে লিসা ক্রনের ব্যঙ্গাত্মক উপস্থিতি, মারিয়ানের চরিত্রে এমিলি ডেভিসের কৌতুকপূর্ণ হতাশা এবং এলমির চরিত্রে অ্যাম্বার গ্রের সংযত দীপ্তি নাটকটিকে ভারসাম্য দিয়েছে।
দৃশ্যসজ্জা ও পোশাকে রঙিন আয়োজন
মঞ্চসজ্জা সরল হলেও চোখে পড়ার মতো। বেগুনি রঙের টেবিল, নরম সবুজ দেয়াল ও ফুলের অলংকরণ নাটকটিকে আভিজাত্যের আবহ দেয়। পোশাক পরিকল্পনায় উজ্জ্বল রং ও নকশা চরিত্রগুলোর স্বভাবকে আরও স্পষ্ট করেছে।
শেষাংশে আধুনিক ইঙ্গিত
নাটকের শেষে গানের মাধ্যমে সমকালীন ক্ষমতা ও নৈতিকতার প্রসঙ্গ টানার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এই অংশটি অনেকের কাছে অতিরিক্ত ও কিছুটা কৃত্রিম মনে হতে পারে, কারণ মূল গল্পে ভণ্ডামির পর্দাফাঁস স্পষ্ট ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
#মলিয়ের #টার্টুফ #নাট্যসমালোচনা #থিয়েটার #নিউইয়র্কনাটক #সংস্কৃতি #মঞ্চনাটক
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















