রাধিকা আপ্টের নতুন মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার ‘সালি মহব্বত’ দর্শকের চেনা নায়ক ও খলনায়কের ধারণাকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ছবিটি ধীরগতির, শান্ত অথচ গভীর অস্বস্তি তৈরি করা এক গল্প, যেখানে চরিত্রদের আচরণ সহজ কোনো নৈতিক কাঠামোয় বাঁধা যায় না। রাধিকার ভাষায়, এই ছবির চরিত্রদের আপনি পছন্দ করবেন কি করবেন না, তাদের পক্ষে থাকবেন কি থাকবেন না, তা নিয়েই দর্শকের ভেতরে চলতে থাকে টানাপোড়েন ।
নৈতিক ধূসরতার গল্প
রাধিকা আপ্টে বলছেন, ছবিটির মূল শক্তি এর নীরবতা ও সংযমে। সাধারণ অপরাধভিত্তিক থ্রিলারের মতো দ্রুত গতি, রক্তপাত বা চমক এখানে নেই। বরং দর্শককে বসে বসে চরিত্রগুলোর মানসিক অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে হয়। এই পর্যবেক্ষণই ধীরে ধীরে অস্বস্তি তৈরি করে, যা সিনেমা শেষ হওয়ার পরও মাথার ভেতরে ঘুরপাক খায়।

চরিত্র স্মিতার দ্বন্দ্ব
ছবিতে রাধিকার অভিনীত চরিত্র স্মিতা একদিকে শান্ত ও সংযত, অন্যদিকে ভেতরে ভেতরে জটিল ও কখনো ভয়ংকর। তিনি নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চান, কিন্তু সেই চেষ্টার পথও প্রশ্নহীন নয়। রাধিকার মতে, স্মিতা কখনো কেবল ভুক্তভোগী নন, আবার পুরোপুরি ক্ষমতাবানও নন। এই দ্বন্দ্বই চরিত্রটিকে বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে।
নারী ক্ষমতা ও প্রশ্ন
ছবিতে একাধিক নারী চরিত্রের উপস্থিতি গল্পকে আরও জটিল করে তোলে। বাহ্যিকভাবে শক্তিশালী মনে হওয়া এক নারী চরিত্রও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও চাপের শিকার। রাধিকার ভাষায়, ক্ষমতা মানেই সব সময় গ্রহণযোগ্য বা পছন্দনীয় হওয়া নয়। একজন নারী ভুল করতে পারেন, অন্যকে আঘাত করতে পারেন, তবু তার গল্প গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

সহঅভিনেতা ও কাজের অভিজ্ঞতা
এই ছবিতে দিব্যেন্দু ও অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাও রাধিকার কাছে বিশেষ। দিব্যেন্দুর অভিনয় তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে বলে জানান তিনি। অনেক দৃশ্যে সংলাপ কম থাকলেও সহঅভিনেতার উপস্থিতি ও শুনে যাওয়াটাই হয়ে উঠেছে অভিনয়ের মূল চাবিকাঠি।
বাস্তব জীবনের মতোই অসম্পূর্ণ
রাধিকা আপ্টের মতে, বাস্তব জীবন কখনো সরল রেখায় চলে না। এই ছবিও তাই কোনো সহজ সিদ্ধান্ত বা নৈতিক উপসংহার দেয় না। দর্শককে নিজ নিজ অভিজ্ঞতা ও মূল্যবোধ দিয়ে গল্পের অর্থ খুঁজে নিতে হয়। চরিত্রদের কাজ ঠিক না ভুল, সেই বিচারভারও দর্শকের হাতেই ছেড়ে দেয় ‘সালি মহব্বত’।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















