হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় সংখ্যালঘু একটি পরিবারের পৈতৃক জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বারবার জমিতে মাটি ভরাট ও বাঁশের বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্টা চলছে।

অভিযোগের বিবরণ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও ১০ নম্বর ছাতিয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী কাসেদ এবং সাবেক ইউপি সদস্য মাসুক আহমদের নেতৃত্বে একটি ভূমিখেকো চক্র ছাতিয়াইন গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অলক সরকারের পরিবারের প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের পৈতৃক কৃষিজমি দখলের চেষ্টা করছে। অভিযোগ রয়েছে, আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও একাধিকবার সেখানে মাটি ভরাট ও বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে।

হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতা
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, তারা দখলের কাজে বাধা দিলে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি ও দেশত্যাগে বাধ্য করার ভয় দেখানো হচ্ছে। এসব হুমকির কারণে এলাকায় ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে এবং অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

পুলিশে অভিযোগ, আইনি সহায়তার অভাব
দুই দফা জমিতে মাটি ভরাট ও বেড়া দেওয়ার ঘটনায় মাধবপুর থানা এবং ছাতিয়াইন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর আইনি সহায়তা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছে পরিবারটি। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এখনো কোনো মামলা গ্রহণ বা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

অভিযুক্তের বক্তব্য
ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী কাসেদ জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, পুলিশ ফাঁড়ির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেখানে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে তাদের জানাতে বলা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনের উদ্বেগ
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দ্য হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস সিলেট বিভাগীয় চ্যাপ্টারের কো-অর্ডিনেটর রাকেশ রায়। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আদালতে মামলা চলাকালীন কোনো জমি দখল বা কৃষিজমিতে মাটি ভরাট করা আইনত অপরাধ। অথচ পুলিশ এসব অপরাধ আমলে নিচ্ছে না এবং মামলা গ্রহণ করছে না। এর সুযোগে সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, জমি দখল, ফসল ও গাছ কাটা, বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর এবং কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নির্যাতনের প্রবণতা বাড়ছে।

অতীতের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা
তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি ও জামায়াত জোটের সময় সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছিল, তা আবারও ফিরে আসার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। জোর যার মুলুক তার নীতির কাছে হার মানার কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।




সারাক্ষণ রিপোর্ট 

















