নিউজিল্যান্ডে গ্যাং সদস্যদের পোশাকের প্রতীক নিষিদ্ধ করার এক বছর পেরিয়েছে। সরকার বলছে, এই সিদ্ধান্তে সহিংস অপরাধ কমেছে এবং সাধারণ মানুষের ভীতি হ্রাস পেয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বলছে, প্রতীক উধাও হলেও গ্যাংয়ের অস্তিত্ব ও কর্মকাণ্ড পুরোপুরি থামেনি।
প্রতীক নিষেধের শুরু
নতুন আইনে গ্যাংয়ের চিহ্ন, প্রতীক বা পরিচয় প্রকাশ করা নিষিদ্ধ করা হয়। পোশাক, যানবাহন কিংবা গয়নায় এমন প্রতীক দেখা গেলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। আইন কার্যকর হওয়ার পর প্রথম এক বছরে শতাধিক প্রতীক জব্দ করা হয় এবং বহু অভিযোগ দায়ের হয়। সরকারের দাবি, এর ফলে রাস্তায় গ্যাংয়ের দাপট দৃশ্যমানভাবে কমেছে।
সরকারের দাবি ও পরিসংখ্যান
সরকার ও পুলিশ জানাচ্ছে, আইন কার্যকরের পর সহিংস অপরাধে উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে। বিশেষ করে প্রকাশ্য স্থানে গ্যাং সদস্যদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় মানুষ আগের তুলনায় নিরাপদ বোধ করছে। কিছু এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন বলছে, মূল সড়ক ও জনসমাগমে গ্যাংয়ের ভয় দেখানো আচরণ আর চোখে পড়ছে না।
গ্যাং সদস্যদের পাল্টা বক্তব্য
গ্যাং সদস্যদের মতে, প্রতীক নিষেধ আসলে বাহ্যিক পরিবর্তন। তারা বলছে, অপরাধ কখনোই প্রতীক পরে করা হয় না। প্রতীক না থাকলেও সদস্যসংখ্যা কমেনি, বরং নতুন নিয়োগ অব্যাহত রয়েছে। তাদের ভাষায়, রাস্তায় দৃশ্যমানতা কমেছে, কিন্তু কার্যক্রম আগের মতোই চলছে।
পুলিশের স্বীকারোক্তি
পুলিশ কর্মকর্তারাও স্বীকার করছেন, প্রতীক জব্দ আর মাদক ব্যবসা বা গুরুতর অপরাধ কমার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক প্রমাণ করা কঠিন। অনেক অপরাধই গোপনে সংঘটিত হয়, যেখানে প্রতীক দৃশ্যমান না থাকলেও গ্যাংয়ের প্রভাব থাকে।
স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা
কিছু ছোট শহরে স্থানীয় নেতারা বলছেন, প্রতীক নিষেধের পর পরিবেশ কিছুটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। দর্শনার্থীরা আর আগের মতো ভয় পান না। তবে অপরাধের প্রকৃত হার নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারও মতে অপরাধ একই আছে, আবার পুলিশের মতে কিছুটা কমেছে।
সংস্কৃতি ও বাস্তবতা
নিউজিল্যান্ডে গ্যাং কেবল অপরাধী সংগঠন নয়, অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক ও প্রজন্মগত পরিচয়ের অংশ। তাই আইন করে প্রতীক নিষিদ্ধ করা সহজ হলেও এই সামাজিক বন্ধন ভাঙা কঠিন। গ্যাং সংস্কৃতি বদলাতে দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক উদ্যোগ প্রয়োজন বলে বিশ্লেষকদের মত।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















