রাজনীতির পরিবর্তিত বাস্তবতায় বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টি জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। রোববার রাতের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেন।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সিদ্ধান্তের কারণ
নাহিদ ইসলাম জানান, আসন্ন নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেই অবস্থান বদলাতে বাধ্য করেছে। শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পর দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, আধিপত্যবাদী শক্তি এখনও সক্রিয় রয়েছে এবং তারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করে জুলাই যোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সুরক্ষা এবং বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থেই জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে।

জোটে যোগদানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ১০ দলীয় জোটে এনসিপির যুক্ত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে অবস্থান নেওয়াই এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে তিনি জানান, ঐকমত্য কমিশনে এনসিপি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে, যা দলের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক পরিকল্পনার অংশ।
মনোনয়ন ও নির্বাচনী কৌশল
নাহিদ ইসলাম বলেন, সোমবার মনোনয়ন সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সমঝোতার ভিত্তিতে যেসব প্রার্থী নির্ধারিত হবে, তারাই মনোনয়নপত্র জমা দেবে। সারা দেশে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, যেখানে এনসিপির নিজস্ব প্রার্থী থাকবে না, সেখানে জোটভুক্ত দলের প্রার্থীদের পক্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো প্রচারণা চালাবে। পাশাপাশি সারা দেশে গণভোটের পক্ষে প্রচার কার্যক্রম চালানো হবে।

গণভোট ও রাজনৈতিক অবস্থান
নাহিদ ইসলাম জানান, এনসিপি গণভোটের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি চায় এবং এ বিষয়ে বিএনপিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, জুলাই সনদের আলোকে দেশ গঠনের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে এনসিপি গণভোটে ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে প্রচারণা চালাবে।
আদর্শিক স্বাতন্ত্র্য বজায় থাকবে
সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট করেন, জোটে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী নিজ নিজ আদর্শ অনুযায়ী আলাদাভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















