তাইওয়ান ঘিরে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। স্থল, নৌ ও আকাশপথে একযোগে পরিচালিত এই মহড়াকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত বলে উল্লেখ করছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। বেইজিং স্পষ্টভাবে দেখাতে চেয়েছে, সংকটের সময় দ্বীপটিকে বাইরের সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। তবে এই তৎপরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বেইজিংয়ের শক্তি প্রদর্শন
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, ‘ন্যায়বিচার মিশন’ নামের এই মহড়ায় সেনা, যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও গোলন্দাজ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে। মহড়ার অংশ হিসেবে সরাসরি গোলাবর্ষণ, স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুতে অনুশীলন এবং তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধের মহড়া চালানো হচ্ছে। নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের ঘোষিত একাধিক অঞ্চলে এই কার্যক্রম চলবে, যা আগের সব মহড়ার তুলনায় আয়তনে বড়।
তাইওয়ানের প্রতিক্রিয়া ও প্রস্তুতি
মহড়ার কড়া নিন্দা জানিয়েছে তাইওয়ান সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া মহড়া চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সক্ষমতা তুলে ধরে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে উপকূলীয় প্রতিরক্ষা শক্তির বার্তা স্পষ্ট হয়।

আকাশপথ ও নৌপথে প্রভাব
এই মহড়ার কারণে আকাশ ও নৌযাত্রায় বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। বহু আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল বা সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় চীনা ও তাইওয়ানি জাহাজের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হওয়ায় মাছ ধরা ও বাণিজ্যিক রুটে সতর্কতা জারি রয়েছে।
ওয়াশিংটনের বার্তা
ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, তাইওয়ান ঘিরে পরিস্থিতি তাকে উদ্বিগ্ন করছে না। তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, নৌ মহড়া এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখলেও তাইওয়ানের প্রতিরক্ষায় সহায়তা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আঞ্চলিক বার্তা ও বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকদের মতে, এই মহড়া শুধু তাইওয়ান নয়, বরং বাইরের শক্তির প্রতি স্পষ্ট সতর্কবার্তা। সাম্প্রতিক অস্ত্র বিক্রি ও কৌশলগত সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে বেইজিং দেখাতে চায় যে, প্রয়োজনে দ্রুত ও বিস্তৃত সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। একই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ যুদ্ধচিত্রের ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















