আর্জেন্টিনার দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শেষ দফার গম কাটার ব্যস্ততা। দীর্ঘদিন পর এমন এক মৌসুম দেখছেন দেশটির কৃষকরা, যেখানে প্রকৃতি প্রায় প্রতিটি ধাপে সহায়ক থেকেছে। ফলাফল হিসেবে আসছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ গম উৎপাদনের রেকর্ড।
বুয়েনোস আইরেস প্রদেশের দক্ষিণের শহর বেনিতো হুয়ারেজের কৃষক দিয়েগো উগ্রোতে তার খেতে দাঁড়িয়ে গমের শীষ দেখে সন্তুষ্টির কথা লুকাননি। পাঁচ দশকের বেশি বয়সী এই কৃষক বলছেন, ভালো ফলনের আশা ছিল, তবে শেষ পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তা কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
রেকর্ড ছুঁতে যাচ্ছে উৎপাদন
দেশটির প্রধান দুই শস্য বিনিময় কেন্দ্রের হিসাবে, চলতি গম মৌসুমে উৎপাদন হতে পারে প্রায় দুই কোটি সত্তর থেকে দুই কোটি সাতাত্তর লক্ষ টন। এটি আগের সর্বোচ্চ রেকর্ডের তুলনায় প্রায় এক চতুর্থাংশ বেশি। সরকারি তথ্য বলছে, সারা দেশে এখন মাত্র তেরো শতাংশ জমিতে গম কাটা বাকি।
উগ্রোতের খামারেও হাতে গোনা কয়েক হেক্টর জমি পড়ে আছে। ছোটবেলা থেকেই কৃষিকাজে যুক্ত এই কৃষক জানাচ্ছেন, এমন ধারাবাহিক ভালো আবহাওয়া খুব কমই দেখা যায়।

আবহাওয়ার নিখুঁত সমন্বয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মৌসুমের সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে আবহাওয়ার ভারসাম্য। শীতকালে কম তাপমাত্রা গাছের প্রাথমিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। পরে নিয়মিত বৃষ্টিতে শাখা-প্রশাখা ও শীষের গঠন হয়েছে ভালোভাবে। শেষ পর্যায়ে দানার ভরাটও হয়েছে চমৎকার।
দেশটির শস্য বিনিময় কেন্দ্র এই ফলন কে অভিহিত করেছে নজিরবিহীন। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে মাঠে যন্ত্রপাতি চলাচলও সহজ হয়েছে, দ্রুত শেষ হচ্ছে কাটাকাটি।
সয়াবিন ও ভুট্টার দিকেও আশা
গমের পাশাপাশি পাশের জমিতে সয়াবিন ও ভুট্টাও পরিপক্বতার পথে। উগ্রোতে জানাচ্ছেন, প্রধান ফসল গুলোর ক্ষেত্রেও এখন পর্যন্ত আবহাওয়া সহায়ক। তবে জানুয়ারির বৃষ্টির ওপর কিছুটা নির্ভর করছে চূড়ান্ত ফলাফল। তবু সামগ্রিক চিত্র ইতিবাচক।
রপ্তানি নির্ভর আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে কৃষিখাত বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান ভরসা। সেই হিসেবে এই রেকর্ড গম মৌসুম দেশটির অর্থনীতির জন্যও বড় স্বস্তির খবর।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















