১১:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’ হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে

রূপের ডালি খেলা (পর্ব-১৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৪:০১:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • 17

ইউ. ইয়াকভলেভ

স্কেটস, বগলে ছেলেটা-৩

সি’ড়িতে ওঠার সময় লোকটা ভয়ানক ভর দিলে ছেলেটার কাঁধে। অন্য হাতে জোরে আঁকড়ে ধরলে রেলিঙ, যেন ভয় পাচ্ছিল সি’ড়ির ধাপটা বুঝি পায়ের নিচে তলিয়ে যাবে। কষ্ট হচ্ছিল ওর। আর খুবই চাপ লাগছিল ছেলেটার। তবে দু’জনেই সহ্য করে গেল। লোকটার বুকের মধ্যে নড়ে-ওঠা টুকরোটার কথা ভাবছিল ছেলেটা, একবার তার কেমন মনে হল যেন সদ্য-ফাটা এক শেলে আহত কোনো যোদ্ধাকেই সে নিয়ে যাচ্ছে। আর লোকটা ভাবছিল তাড়াতাড়ি বিছানায় পৌঁছতে পারলে হয়। বাড়িতে এসে লোকটা ফারের কোর্তাটা খুলতে লাগল। এতই তাতে তার পরিশ্রম হচ্ছিল যেন ওটা কমসে কম দু’মন ভারি। অবশেষে খালাস হল সে বোঝা। নিচে দেখা গেল ফৌজী শার্ট আর নীল ট্রাউজার। শার্টের ডানদিকে পকেটের ওপর গ্যালুনের ব্যান্ড শেলাই করা। গুরুতর জখমের চিহ্নস্বরূপ এই ব্যান্ডটায় প্রমাণ হচ্ছিল লোকটা পুরনো ফৌজী রোগে ভুগছে।

লোকটা যখন পোষাক ছাড়ছিল, ছেলেটা তখন দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল তাকে। নিজে সে ওভারকোট খুললে না, যে-হাতের কনুই দিয়ে সে ‘ব্রিটিশ স্পোর্টস’ স্কেটস্ চেপে রেখেছিল সেটাকেও বার করলে না পকেট থেকে।

ধপ্ করে লোকটা বসল সোফায়, যেন প্রায় পড়েই গেল। সকাতরে ক্যাঁচকে চিয়ে উঠল পুরনো প্রীঙগুলো। পেছনে হেলান দিয়ে চোখ বুজলে লোকটা। ছেলেটা কিন্তু দাঁড়িয়েই রইল তার সামনে। হতভম্ব হয়ে সে ভেবে পাচ্ছিল না এ অবস্থায় কী করার কথা। সামনে তার রোগী। ঠান্ডা লাগা কী ইনফ্লুয়েঞ্জা নয় বুকে-টুকরো-বে’ধা প্রবীণ যোদ্ধা। সামনে যা-কিছুই পড়ুক অসঙ্কোচে তাকিয়ে দেখতে ছেলেটা অভ্যন্ত, এখন কিন্তু তার সবুজ চোখ থেকে মুছে গেল সেই বেপরোয়া আত্মবিশ্বাস। স্কেটিং রিঙ্কে যাবার পথে গলির মধ্যে ভাগ্যচক্রে যে-লোকটার সঙ্গে সে জড়িয়ে পড়েছে, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে রইল তার দিকে।

চোখ বুজে লোকটা কতক্ষণ পড়ে ছিল বলা কঠিন। যখন সে চোখ মেললে তখনো ছেলেটা তার সামনে দাঁড়িয়ে: বোতাম-ছেড়া খাটো ওভারকোট, এক কান ঢাকা টুপি, বগলে স্কেস্।

‘এখনো তুই এখানে?’ প্রায় ঠোঁট না নেড়েই বললে জখম লোকটা।

‘হ্যাঁ।’ ‘তুই যা এবার। আমি নিজেই দেখে নেব… সাহায্যের জন্যে ধন্যবাদ।’ এক

ঢোক বাতাস গিলে লোকটা শুধাল, ‘তাড়া আছে তোর, না?’

ছেলেটার বগলে স্কেটস্ জোড়া তার নজরে পড়ল কেবল এতক্ষণে। ‘হ্যাঁ, আছে।’ ছোট্ট এই দুটো শব্দ খসারই কথা ছিল ছেলেটার মুখ থেকে, কিন্তু

তার বদলে শোনা গেল একেবারে অন্য জবাব:

‘না-না, তাড়া নেই আমার… স্কেটিং করা আমার হয়ে গেছে।’

নিজেই তার অবাক লাগল যে সে ঠিক এই কথাই বলে ফেলেছে, এবং এমন প্রত্যয়ের সঙ্গে যেন ব্যাপারটা সত্যিই তাই। নিজেই এ কথা বলে ফেলায় দুঃখ হল

তার, কিন্তু ফেরা আর চলে না।

‘আপনার নিজের লোকেরা কেউ না আসা পর্যন্ত আমি থাকছি, তারপর যাব।’ ওর মনে হল এ সব কথা যেন ও বলছে না, ওর অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্য কেউ। নিজেরই আফসোস হল তার: বাড়ির লোকেরা কখন আসবে কে জানে। হয়ত তাড়াতাড়ি নয়। সন্ধ্যায়।

‘কেউ আসবে না,’ একটু চুপ করে থেকে বললে লোকটা, ‘ছেলেকে নিয়ে বৌ গেছে তার মায়ের কাছে। ইশকুলের ছুটি কাটাতে। সাপোজকে।’

‘কোন সাপোজকে? মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল ছেলেটার।

কষ্টে একটু হাসি ফুটল লোকটার, বুঝিয়ে বললে:

‘আরে, ওটা একটা শহর। ছোট্ট শহর, রিয়াজান এলাকায়।’

স্কেটস, জোড়া ছেলেটা চেয়ারে রাখলে। এতে করে সে যেন বুঝিয়ে দিলে কোথাও যাবার তার তাড়া নেই।

নবপরিচিতের দিকে গম্ভীরভাবে চেয়ে সে জিজ্ঞেস করলে:

‘কী করা যায় তাহলে?’

‘আরে, এটা কিছু না। শুয়ে থাকব, কেটে যাবে,’ বললে গৃহকর্তা, তারপর ঠিক যেন ছেলেটার কাছে কৈফিয়ৎ দেবার ভঙ্গিতে যোগ দিলে, ‘মানে, কারখানায় কাল রাতেই শরীরটা কেমন করছিল। কিন্তু অসুখে পড়ার ফুরসূত কোথায় সেখানে। চরকি-লেদ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ঠিক করতে হল… সকালে একেবারেই কাব, হয়ে পড়লাম। তবু ভাবলাম, যে করে হোক বাড়ি পৌঁছে যাব। তারপর তো এই…’

চোখ বন্ধ করে ও চুলে হাত বোলালে। বোঝা যায় একটু নরম পড়েছে যন্ত্রণাটা, তাই আলাপ চালিয়ে গেল:

‘এটা জানিস, ঝেড়েছিল ওরেল শহরের কাছে। পাঁচটা টুকরো বার করেছে, একটা থেকেই গেল।’

‘কিন্তু কে… ঝাড়লে?’ যোদ্ধার বুলির সঙ্গে তাল দিয়ে জিজ্ঞেস করলে ছেলেটা। “ফের্ডিনান্ড’, জার্মান ট্যাঙ্ক… এ.টি.সি কী জিনিস জানিস?’

মাথা নাড়লে ছেলেটা।

‘ট্যাঙ্কবিধ্বংসী কামান,’ বোঝালে প্রাক্তন যোদ্ধা, ‘পঞ্চান্ন মিলিমিটার বোর। ছুঁচোর মতো আমরা মাটিতে গর্তে সে’ধিয়ে আছি, ওদিকে ট্যাঙ্কগুলো আসছিল সোজা আমাদের দিকে। দুটোতে আমরা আগুন ধরিয়ে দিই, কিন্তু তিন নম্বরটা আমাদের ঝাড়লে… আমাদের টীমটা, কামানটার কোনো পাত্তাই রইল না… যাক গে, ঠিক হয়ে যাবে। শুয়ে থেকে সেরে যাব…’

হঠাৎ ফের ফ্যাকাশে হয়ে গেল সে, মুখের ভাঁজদুটো হয়ে উঠল আরো গভীর। ‘ডাক্তার ডেকে আনব?’ বললে ছেলেটা।

মাথা নাড়লে লোকটা। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। তাহলেও শেষ পর্যন্ত বললে: ‘ডাক্তার ডেকে লাভ নেই। বরং ওষুধ যদি আনতে পারিস… যদি তোর খুব

তাড়া না থাকে।’ ‘তাড়া নেই,’ বললে ছেলেটা, ‘কোথায় প্রেসক্রিপশন?’

‘টেবিলে। পাশের ঘরে। মাঝের দেরাজটা খুলবি। সেখানেই কোথাও গড়াচ্ছে। যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ।’

নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’

রূপের ডালি খেলা (পর্ব-১৪)

০৪:০১:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

ইউ. ইয়াকভলেভ

স্কেটস, বগলে ছেলেটা-৩

সি’ড়িতে ওঠার সময় লোকটা ভয়ানক ভর দিলে ছেলেটার কাঁধে। অন্য হাতে জোরে আঁকড়ে ধরলে রেলিঙ, যেন ভয় পাচ্ছিল সি’ড়ির ধাপটা বুঝি পায়ের নিচে তলিয়ে যাবে। কষ্ট হচ্ছিল ওর। আর খুবই চাপ লাগছিল ছেলেটার। তবে দু’জনেই সহ্য করে গেল। লোকটার বুকের মধ্যে নড়ে-ওঠা টুকরোটার কথা ভাবছিল ছেলেটা, একবার তার কেমন মনে হল যেন সদ্য-ফাটা এক শেলে আহত কোনো যোদ্ধাকেই সে নিয়ে যাচ্ছে। আর লোকটা ভাবছিল তাড়াতাড়ি বিছানায় পৌঁছতে পারলে হয়। বাড়িতে এসে লোকটা ফারের কোর্তাটা খুলতে লাগল। এতই তাতে তার পরিশ্রম হচ্ছিল যেন ওটা কমসে কম দু’মন ভারি। অবশেষে খালাস হল সে বোঝা। নিচে দেখা গেল ফৌজী শার্ট আর নীল ট্রাউজার। শার্টের ডানদিকে পকেটের ওপর গ্যালুনের ব্যান্ড শেলাই করা। গুরুতর জখমের চিহ্নস্বরূপ এই ব্যান্ডটায় প্রমাণ হচ্ছিল লোকটা পুরনো ফৌজী রোগে ভুগছে।

লোকটা যখন পোষাক ছাড়ছিল, ছেলেটা তখন দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল তাকে। নিজে সে ওভারকোট খুললে না, যে-হাতের কনুই দিয়ে সে ‘ব্রিটিশ স্পোর্টস’ স্কেটস্ চেপে রেখেছিল সেটাকেও বার করলে না পকেট থেকে।

ধপ্ করে লোকটা বসল সোফায়, যেন প্রায় পড়েই গেল। সকাতরে ক্যাঁচকে চিয়ে উঠল পুরনো প্রীঙগুলো। পেছনে হেলান দিয়ে চোখ বুজলে লোকটা। ছেলেটা কিন্তু দাঁড়িয়েই রইল তার সামনে। হতভম্ব হয়ে সে ভেবে পাচ্ছিল না এ অবস্থায় কী করার কথা। সামনে তার রোগী। ঠান্ডা লাগা কী ইনফ্লুয়েঞ্জা নয় বুকে-টুকরো-বে’ধা প্রবীণ যোদ্ধা। সামনে যা-কিছুই পড়ুক অসঙ্কোচে তাকিয়ে দেখতে ছেলেটা অভ্যন্ত, এখন কিন্তু তার সবুজ চোখ থেকে মুছে গেল সেই বেপরোয়া আত্মবিশ্বাস। স্কেটিং রিঙ্কে যাবার পথে গলির মধ্যে ভাগ্যচক্রে যে-লোকটার সঙ্গে সে জড়িয়ে পড়েছে, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে রইল তার দিকে।

চোখ বুজে লোকটা কতক্ষণ পড়ে ছিল বলা কঠিন। যখন সে চোখ মেললে তখনো ছেলেটা তার সামনে দাঁড়িয়ে: বোতাম-ছেড়া খাটো ওভারকোট, এক কান ঢাকা টুপি, বগলে স্কেস্।

‘এখনো তুই এখানে?’ প্রায় ঠোঁট না নেড়েই বললে জখম লোকটা।

‘হ্যাঁ।’ ‘তুই যা এবার। আমি নিজেই দেখে নেব… সাহায্যের জন্যে ধন্যবাদ।’ এক

ঢোক বাতাস গিলে লোকটা শুধাল, ‘তাড়া আছে তোর, না?’

ছেলেটার বগলে স্কেটস্ জোড়া তার নজরে পড়ল কেবল এতক্ষণে। ‘হ্যাঁ, আছে।’ ছোট্ট এই দুটো শব্দ খসারই কথা ছিল ছেলেটার মুখ থেকে, কিন্তু

তার বদলে শোনা গেল একেবারে অন্য জবাব:

‘না-না, তাড়া নেই আমার… স্কেটিং করা আমার হয়ে গেছে।’

নিজেই তার অবাক লাগল যে সে ঠিক এই কথাই বলে ফেলেছে, এবং এমন প্রত্যয়ের সঙ্গে যেন ব্যাপারটা সত্যিই তাই। নিজেই এ কথা বলে ফেলায় দুঃখ হল

তার, কিন্তু ফেরা আর চলে না।

‘আপনার নিজের লোকেরা কেউ না আসা পর্যন্ত আমি থাকছি, তারপর যাব।’ ওর মনে হল এ সব কথা যেন ও বলছে না, ওর অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্য কেউ। নিজেরই আফসোস হল তার: বাড়ির লোকেরা কখন আসবে কে জানে। হয়ত তাড়াতাড়ি নয়। সন্ধ্যায়।

‘কেউ আসবে না,’ একটু চুপ করে থেকে বললে লোকটা, ‘ছেলেকে নিয়ে বৌ গেছে তার মায়ের কাছে। ইশকুলের ছুটি কাটাতে। সাপোজকে।’

‘কোন সাপোজকে? মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল ছেলেটার।

কষ্টে একটু হাসি ফুটল লোকটার, বুঝিয়ে বললে:

‘আরে, ওটা একটা শহর। ছোট্ট শহর, রিয়াজান এলাকায়।’

স্কেটস, জোড়া ছেলেটা চেয়ারে রাখলে। এতে করে সে যেন বুঝিয়ে দিলে কোথাও যাবার তার তাড়া নেই।

নবপরিচিতের দিকে গম্ভীরভাবে চেয়ে সে জিজ্ঞেস করলে:

‘কী করা যায় তাহলে?’

‘আরে, এটা কিছু না। শুয়ে থাকব, কেটে যাবে,’ বললে গৃহকর্তা, তারপর ঠিক যেন ছেলেটার কাছে কৈফিয়ৎ দেবার ভঙ্গিতে যোগ দিলে, ‘মানে, কারখানায় কাল রাতেই শরীরটা কেমন করছিল। কিন্তু অসুখে পড়ার ফুরসূত কোথায় সেখানে। চরকি-লেদ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ঠিক করতে হল… সকালে একেবারেই কাব, হয়ে পড়লাম। তবু ভাবলাম, যে করে হোক বাড়ি পৌঁছে যাব। তারপর তো এই…’

চোখ বন্ধ করে ও চুলে হাত বোলালে। বোঝা যায় একটু নরম পড়েছে যন্ত্রণাটা, তাই আলাপ চালিয়ে গেল:

‘এটা জানিস, ঝেড়েছিল ওরেল শহরের কাছে। পাঁচটা টুকরো বার করেছে, একটা থেকেই গেল।’

‘কিন্তু কে… ঝাড়লে?’ যোদ্ধার বুলির সঙ্গে তাল দিয়ে জিজ্ঞেস করলে ছেলেটা। “ফের্ডিনান্ড’, জার্মান ট্যাঙ্ক… এ.টি.সি কী জিনিস জানিস?’

মাথা নাড়লে ছেলেটা।

‘ট্যাঙ্কবিধ্বংসী কামান,’ বোঝালে প্রাক্তন যোদ্ধা, ‘পঞ্চান্ন মিলিমিটার বোর। ছুঁচোর মতো আমরা মাটিতে গর্তে সে’ধিয়ে আছি, ওদিকে ট্যাঙ্কগুলো আসছিল সোজা আমাদের দিকে। দুটোতে আমরা আগুন ধরিয়ে দিই, কিন্তু তিন নম্বরটা আমাদের ঝাড়লে… আমাদের টীমটা, কামানটার কোনো পাত্তাই রইল না… যাক গে, ঠিক হয়ে যাবে। শুয়ে থেকে সেরে যাব…’

হঠাৎ ফের ফ্যাকাশে হয়ে গেল সে, মুখের ভাঁজদুটো হয়ে উঠল আরো গভীর। ‘ডাক্তার ডেকে আনব?’ বললে ছেলেটা।

মাথা নাড়লে লোকটা। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। তাহলেও শেষ পর্যন্ত বললে: ‘ডাক্তার ডেকে লাভ নেই। বরং ওষুধ যদি আনতে পারিস… যদি তোর খুব

তাড়া না থাকে।’ ‘তাড়া নেই,’ বললে ছেলেটা, ‘কোথায় প্রেসক্রিপশন?’

‘টেবিলে। পাশের ঘরে। মাঝের দেরাজটা খুলবি। সেখানেই কোথাও গড়াচ্ছে। যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ।’