০২:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রেমের গল্প নিয়ে বিতর্কে বন্ধ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা পাকিস্তানে সীমাহীন শ্রমিক শোষণ আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাসাদে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক: ক্লিওপেট্রা ও সিজারের কথোপকথন হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৯) বাংলাদেশে ইভ টিজিং- নারী মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক স্থিতিশীলতার সংকট এপি’র প্রতিবেদন: হাসিনা-বিরোধী বিদ্রোহের পরিণতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ মধুমতী নদী: দক্ষিনের যোগাযোগ পথ মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল ধ্বংস করা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর চিরসবুজ নায়িকা মৌসুমী: রূপালী পর্দার এক যুগের প্রতীক কাপ্তাই লেকের মাছের বৈচিত্র্য ও মাছ ধরার রীতি – পার্বত্য চট্টগ্রামের জলে জীবনের গল্প

ইউনূস–তারেক বৈঠক: “হাতে রইল পেনসিল”

মুহাম্মদ ইউনূসের গত দশ মাসের এগারোটি  বিদেশ সফরের মধ্যে একমাত্র বিমসটেকে যোগদান ছাড়া কোনোটিই সরকারি সফর ছিল না। তবে বিমসটেকে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যেভাবে দেখা করেছিলেন, তা খুব সম্মানজনক ছিল না। অবশ্য অপরাপর সরকারপ্রধানদের সঙ্গে যেভাবে দেখা করেছেন ও ছবি তুলেছেন, সে হিসেবে বিচার করলে মোদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকেও মেনে নেওয়া যায়।

তবে বাংলাদেশের সৃষ্টির গৌরব এবং দেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পূর্বেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বাংলাদেশের নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানিয়েছিলেন— এবং পরবর্তীকালে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী হিথ নিজে যেভাবে বঙ্গবন্ধুর গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে ব্রিটিশ ভদ্রতার প্রমাণ রেখেছিলেন— সে হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের ব্রিটেন সফর বাংলাদেশের মানুষের জন্য এতটা সম্মানহানির বিষয় হবে, এটা কারোর চিন্তায় ছিল না। তাছাড়া ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সারা কুক এখানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে আসার আগে থেকেই, যখন তিনি বাংলাদেশে চাকরি করতেন, তখন থেকেই তিনি ইউনূস সেন্টারের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ। তাই ইউনূস ব্রিটেন যাওয়ার পরে যখন খবরে দেখতে পেলাম, সারা কুক বলছেন, তিনি ইউনূসকে ব্রিটেনে স্বাগত জানাতে পেরে খুবই আনন্দিত, তখন ধরে নিয়েছিলাম সারা কুক যাই হোক একটা ব্যবস্থা হয়তো করতে পারবেন— একজন সিনিয়র কূটনীতিক হিসেবে। তাছাড়া যতটুকু তাঁকে দেখেছি, তাতে ভদ্রমহিলাকে অনেক কর্মতৎপর মনে হয়।

যাহোক, ব্রিটেন একটি প্রাচীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতন্ত্রের পিতৃভূমি। এ ধরনের রাষ্ট্রে বাস্তবে ব্যক্তি শেষাবধি কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। সিস্টেমই বড়। আর সেই সিস্টেম ইউনূসের অবস্থান জানিয়ে দিল তাঁর ব্রিটেন সফরের মধ্য দিয়ে, যার ভেতর দিয়ে নিচু হলো একটি সংগ্রামী জাতির উঁচু মাথা। ইতিহাসের পথপরিক্রমায় এমন অনেক কিছুই ঘটে। অনেক কিছুকে মেনে নিতে হয়। আবার ইতিহাস নিজস্ব পথপরিক্রমায় সবকিছু ঠিকঠাক করে নেয়।

যাহোক, মুহাম্মদ ইউনূসের সফর শেষাবধি বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে মিটিং ও যৌথ বিবৃতির সফর হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশের অত্যন্ত গুণী ও অনেক বড় মাপের সাংবাদিক ফরিদ হোসেন অবশ্য তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “It’s perhaps the shortest ever joint statement in our political history.” বাস্তবেও তাই। ইতিমধ্যে ওই যৌথ বিবৃতি নিয়ে দেশব্যাপী অনেক আলোচনা হয়েছে।

হয়তো ওই যৌথ বিবৃতির অন্তরালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকতে পারে। তবে ওই বিবৃতির ভাষা এবং যারা এটা পাঠ করেছেন, তাঁদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কিন্তু ইউনূস ও তারেক রহমানের আলোচনার শুরুর বিষয়টির মতোই। ইউনূস আলোচনা শুরু করেছিলেন আবহাওয়ার কথা বলে—আজ আবহাওয়া অনেক ভালো। তারেক রহমানও তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। লন্ডন শেক্‌সপিয়র থেকে ইয়েটস, এলিয়ট ও শেমাস হিনির পদভারে কম্পিত স্থান। তাই যদি ইউনূস আর তারেক রহমানের আলোচনার শুরুকে কেউ কবিতার শব্দের মতো গভীরে নিয়ে যেতে চান, তাহলে তাঁরা হয়তো ধরে নিতে পারেন, প্রথম বাক্য দিয়েই দুজনেই বুঝিয়ে দিলেন। তাঁদের দুজনের মিটিংটা একটা চমৎকার ঘটনা তাঁদের জন্য। আর যদি কেউ সাধারণভাবে এর অর্থ করতে চান, তাহলে ধরে নিতে হবে, দুজনের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এভাবে শুরু হওয়ার অর্থ হলো—দুজনের কাছেই বাংলাদেশে এ মুহূর্তে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি ইউনূস যে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা ছবি তোলার সুযোগ পেলেন না—সেটাও কোনো সমস্যা নয়।

তারেক রহমান ও ইউনূসের এই মিটিংয়ের পরে দেশের মিডিয়ায়, সোশ্যাল ফোরামে অনেক ঝড় দেখছি। নানান জনে নানানভাবে বিশ্লেষণ করছেন। তবে আমার মতো একজন ক্ষুদ্র সাংবাদিক, আমি আগেও বহু লেখায় লিখেছি, ৫ তারিখ শেখ হাসিনার সরকারের অবসানের পরে দেশের বাকি বড় দল হিসেবে বিএনপি দেশের রাজনীতির ড্রাইভিং সিটে বসতে না পারা দলটির জন্য অনেক বড় ব্যর্থতা। তেমনি একই প্রশ্ন আসে—বিএনপি কার্যত যাকে তাদের মূল নেতা মানছে, তাঁকে এত সহজে এভাবে সামনে আনা কতটা স্ট্র্যাটেজিকালি সঠিক রাজনীতি হয়েছে, তা ভবিষ্যতই বলে দেবে।

কারণ, তারেক রহমান ওই বৈঠকের পরে কোনো কথা বলেননি। শুধু যৌথ বিবৃতির অংশ তিনি। সেখানে বলা আছে, যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, সংস্কার ও বিচার সঠিকভাবে এগোয়— তাহলে ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচন করা সম্ভব। এর পরে কেবলই মনে পড়ে সুকুমার রায়ের হ য ব র ল-এর ওই অংশটুকু, “সাত দুগুণে কত হয়? তখন উপরে তাকিয়ে দেখি, একটা দাঁড়কাক স্লেট পেনসিল দিয়ে কী যেন লিখছে, আর একবার ঘাড় বাঁকিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি বললাম ‘সাত দুগুণে চৌদ্দ’। কাকটা মাথা নেড়ে বলল, ‘হয়নি, হয়নি, ফেল’। … কাকটা কিছুক্ষণ জবাব দিল না, খালি পেনসিল মুখে দিয়ে খানিকক্ষণ কী যেন ভাবল। তারপর বলল, ‘সাত দুগুণে চৌদ্দর নামে চার, হাতে রইল পেনসিল’।”

বাস্তবে চৌদ্দের চারই নেমেছে। হাতে পেনসিল। এখন কার হাতে এই পেনসিল, তা বোঝা কঠিন। তবে কাকের হাতে পেনসিল থাকলে তো সময়ের মূল্য ধরে সাত দুগুণে চৌদ্দ বাড়তেই থাকে। কারণ, কাকের দেশে সময়ের মূল্য অনেক বেশি। তাই সময় যত যায়, ধাঁ ধাঁ করে সাত দুগুণে চৌদ্দ বাড়তে বাড়তে অনেক দূর চলে যায়। কারণ, সুকুমার রায়ের কাকের দেশে সাত দুগুণে চৌদ্দ ধাঁ ধাঁ করে কুড়ি, একুশ, বাইশ—এভাবে শুধু বাড়তে থাকে। আবার কাকেরা হিসেব ঘুরিয়েও দিতে পারে, যেহেতু পেনসিল তাদের হাতে। তাই জনগণ যতক্ষণ পেনসিল হাতে না পাবে, ততক্ষণ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যদি দেশ সুকুমার রায়ের হ য ব র ল-এ অবস্থান করতে থাকে, তাহলে কাউকে দোষ দেওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্য তারেক রহমানের সঙ্গে মিটিংয়ের পরে—শেষ যে বক্তব্য সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া গেছে—তাতে বলা হয়েছে, এপ্রিলে নির্বাচিত সরকার হবে। দেখা যাক, সময়ের মূল্য মেপে, সংস্কারের ঝাঁপ খুলে, ধুলো বালি ঝেড়ে শেষ অবধি কোথায় যায় নির্বাচনের দিন। জনগণ কখন তারিখ লেখার পেনসিল হাতে পায়!

অবশ্য ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, মুহাম্মদ ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী হয়েও কেন দেশ চালাতে পারছেন না। কেন দেশের অর্থনীতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে? কেন দেশ আন্তর্জাতিকভাবে এত অসম্মানিত হচ্ছে?

মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব যেমন তাঁর ক্ষমতায় আহরণকে মেটিকিউলাস ডিজাইনের অংশ বলেছেন; আবার তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে, যা শুনেছি, সেখানে তিনি বলেছেন, তিনি নিজে থেকে ক্ষমতায় আসতে চাননি। তাঁকে জোর করে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি এ জগতের মানুষ নন। যারা এনেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন ২৪ বছরের তরুণ বলেছে, এটা তাঁদের ভাগ্য—মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল বিজয়ী। তিনি রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। একজন নব্বই বছরের বৃদ্ধও একই কথা বলেছিলেন—তাঁদের ভাগ্য, একজন নোবেল বিজয়ী দেশের ভার নিয়েছেন।

তাঁদের প্রতি অতি বিনয়ের সঙ্গে বলতে হয়, মালালা ইউসুফজাই নারী শিক্ষার জন্য কিশোরী হিসেবে জীবন পণ করার বিনিময়ে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, এনজিও কর্মী হিসেবে ভারতের কৈলাশ সত্যার্থীও নোবেল পেয়েছেন। মালালা কি আফগানিস্তান চালাতে পারবে? কৈলাশ কি ভারত চালাতে পারবে এক ঘণ্টার জন্য?

বাংলাদেশে নির্বাচিত ও অনির্বাচিত অনেক সরকার এসেছে। প্রথম সরকারপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সরকারপ্রধান হওয়ার আগে এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। সর্বোপরি দেশের সবচেয়ে বড় দলের প্রধান ছিলেন। তাঁর নামে যে সরকার চলতো, সেই সরকারের প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম সিএসপি হিসেবে সরকার চিনতেন ১৯৪৯ সাল থেকে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন বারবার আওয়ামী লীগের মতো বড় দলের। তাজউদ্দিন আহমদ ১৯৫৫-তে আতাউর রহমান খানের মতো মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব; বড় দল আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি। মুজিব সরকারের পতনের পরে জিয়া সরকার আসে। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান সামরিক বাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন, এবং তাঁর জন্যই বাংলাদেশে ওই উপপ্রধান পদটি তৈরি হয়েছিল। এরপর সাত্তার সাহেব আপিল বিভাগের বিচারপতি ও পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। জেনারেল এরশাদ সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন। খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় আসেন, তার আগে তিনি নয় বছর একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান; এর আগে তিন বছর ফার্স্ট লেডি। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় আসেন, তাঁর আগে তিনি শুধু বড় রাজনৈতিক দলের নেতা নন, দুইবার সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা। এছাড়া এ দেশে যে ক’বার তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছে, সব সময়ই একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি (অর্থাৎ যিনি রাষ্ট্রের একটি অঙ্গের প্রধান ছিলেন) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হন ফখরুদ্দিন আহমদ; তিনি ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকও চালিয়েছেন। এই হিসেবে ইউনূস সাহেব ছোট একটি ব্যাংকের প্রধান মাত্র। তিন মাস তিনি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, তবে ওই সরকারটি ছিল সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার। আর তাঁর এনজিও’র যে কনসেপ্ট, সেটা নতুন কিছু নয়। জামানত না রেখে ঋণ দেওয়া—এটা পৃথিবীর হাজার বছরের রীতি। এ নিয়ে লিখতে গেলে লেখা ভিন্ন দিকে চলে যাবে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ইউনূস সাহেব নিজেও বলেছেন, এটা তাঁর অচেনা জগত। আর গত দশ মাসে প্রমাণ হয়ে গেছে—এটা সত্যিই তাঁর অচেনা জগত।

তারপর তিনি তাঁর প্লেটে যে পরিমাণ খাবার নিয়েছেন, সেই খাবার শেষ করার মানে অনেক বড় যুদ্ধ করা। সেই যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে—সেটা সুকুমার রায়ের হ য ব র ল-এর কাকের পেনসিল দিয়েই হিসেব করতে হবে।

তবে সে হিসেবের আগে এ মুহূর্তে প্রয়োজন দেশের স্থিতিশীলতা এবং বর্তমানের এই জটিল পৃথিবীতে বাংলাদেশ যাতে বিশ্বের অংশ হতে পারে, কোথাও গিয়ে কারো সঙ্গে দেখা করতে পারে—এমন একটি স্থিতিশীল সরকার ও তার একজন প্রধান। যেমন ইরানের বিষয়ে কথা বলার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের সরকারপ্রধানকে না ডেকে সেনাপ্রধানের সঙ্গে লাঞ্চ করছেন। আমেরিকা হয়তো তার স্বার্থে পাকিস্তানে দ্বৈত সরকার রেখেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশকে কী করতে হবে, তা মনে হয় ইউনূসের ব্রিটেন সফরের পরে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এখন সুকুমার রায়ের হ য ব র ল কাব্য থেকে বেরিয়ে যিনি বা যারা দ্রুত দেশকে স্থিতিশীল ও সম্মানিত করতে পারবেন—পাঁচ তারিখের পর থেকে যে শক্তিটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, রাজনীতির স্বার্থে রাজনীতিবিদরা এখন সেটা ভাবলেই দেশের দ্রুত মঙ্গল হবে। এই দেশে জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ—সকলেই কিন্তু দেশকে স্থিতিশীল করে পরে নির্বাচন দিয়েছেন। আর স্থিতিশীলতা ছাড়া নির্বাচন হবে না। মুহাম্মদ ইউনূসের প্লেটে পুলিশের জন্য রয়েছে বিচারহীনতা। আর পুলিশ ছাড়া কি দেশ স্থিতিশীল হবে? যে বড় দল ক্ষমতায় যাবে, তারা অন্তর্বর্তী সরকার হবে না, তারা স্থায়ী সরকার হবে। আর পুলিশসহ রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ তাদের হবে। সুকুমার রায়ের কাকের পেনসিল দিয়ে হিসাব করার সুযোগ কি তাদের আছে?

লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক, সম্পাদক সারাক্ষণ ও The Present World.

শিক্ষার্থী-শিক্ষকের প্রেমের গল্প নিয়ে বিতর্কে বন্ধ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা

ইউনূস–তারেক বৈঠক: “হাতে রইল পেনসিল”

০৮:০০:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

মুহাম্মদ ইউনূসের গত দশ মাসের এগারোটি  বিদেশ সফরের মধ্যে একমাত্র বিমসটেকে যোগদান ছাড়া কোনোটিই সরকারি সফর ছিল না। তবে বিমসটেকে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যেভাবে দেখা করেছিলেন, তা খুব সম্মানজনক ছিল না। অবশ্য অপরাপর সরকারপ্রধানদের সঙ্গে যেভাবে দেখা করেছেন ও ছবি তুলেছেন, সে হিসেবে বিচার করলে মোদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকেও মেনে নেওয়া যায়।

তবে বাংলাদেশের সৃষ্টির গৌরব এবং দেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পূর্বেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বাংলাদেশের নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানিয়েছিলেন— এবং পরবর্তীকালে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী হিথ নিজে যেভাবে বঙ্গবন্ধুর গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে ব্রিটিশ ভদ্রতার প্রমাণ রেখেছিলেন— সে হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের ব্রিটেন সফর বাংলাদেশের মানুষের জন্য এতটা সম্মানহানির বিষয় হবে, এটা কারোর চিন্তায় ছিল না। তাছাড়া ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সারা কুক এখানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে আসার আগে থেকেই, যখন তিনি বাংলাদেশে চাকরি করতেন, তখন থেকেই তিনি ইউনূস সেন্টারের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ। তাই ইউনূস ব্রিটেন যাওয়ার পরে যখন খবরে দেখতে পেলাম, সারা কুক বলছেন, তিনি ইউনূসকে ব্রিটেনে স্বাগত জানাতে পেরে খুবই আনন্দিত, তখন ধরে নিয়েছিলাম সারা কুক যাই হোক একটা ব্যবস্থা হয়তো করতে পারবেন— একজন সিনিয়র কূটনীতিক হিসেবে। তাছাড়া যতটুকু তাঁকে দেখেছি, তাতে ভদ্রমহিলাকে অনেক কর্মতৎপর মনে হয়।

যাহোক, ব্রিটেন একটি প্রাচীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতন্ত্রের পিতৃভূমি। এ ধরনের রাষ্ট্রে বাস্তবে ব্যক্তি শেষাবধি কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। সিস্টেমই বড়। আর সেই সিস্টেম ইউনূসের অবস্থান জানিয়ে দিল তাঁর ব্রিটেন সফরের মধ্য দিয়ে, যার ভেতর দিয়ে নিচু হলো একটি সংগ্রামী জাতির উঁচু মাথা। ইতিহাসের পথপরিক্রমায় এমন অনেক কিছুই ঘটে। অনেক কিছুকে মেনে নিতে হয়। আবার ইতিহাস নিজস্ব পথপরিক্রমায় সবকিছু ঠিকঠাক করে নেয়।

যাহোক, মুহাম্মদ ইউনূসের সফর শেষাবধি বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে মিটিং ও যৌথ বিবৃতির সফর হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশের অত্যন্ত গুণী ও অনেক বড় মাপের সাংবাদিক ফরিদ হোসেন অবশ্য তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “It’s perhaps the shortest ever joint statement in our political history.” বাস্তবেও তাই। ইতিমধ্যে ওই যৌথ বিবৃতি নিয়ে দেশব্যাপী অনেক আলোচনা হয়েছে।

হয়তো ওই যৌথ বিবৃতির অন্তরালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকতে পারে। তবে ওই বিবৃতির ভাষা এবং যারা এটা পাঠ করেছেন, তাঁদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কিন্তু ইউনূস ও তারেক রহমানের আলোচনার শুরুর বিষয়টির মতোই। ইউনূস আলোচনা শুরু করেছিলেন আবহাওয়ার কথা বলে—আজ আবহাওয়া অনেক ভালো। তারেক রহমানও তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। লন্ডন শেক্‌সপিয়র থেকে ইয়েটস, এলিয়ট ও শেমাস হিনির পদভারে কম্পিত স্থান। তাই যদি ইউনূস আর তারেক রহমানের আলোচনার শুরুকে কেউ কবিতার শব্দের মতো গভীরে নিয়ে যেতে চান, তাহলে তাঁরা হয়তো ধরে নিতে পারেন, প্রথম বাক্য দিয়েই দুজনেই বুঝিয়ে দিলেন। তাঁদের দুজনের মিটিংটা একটা চমৎকার ঘটনা তাঁদের জন্য। আর যদি কেউ সাধারণভাবে এর অর্থ করতে চান, তাহলে ধরে নিতে হবে, দুজনের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এভাবে শুরু হওয়ার অর্থ হলো—দুজনের কাছেই বাংলাদেশে এ মুহূর্তে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি ইউনূস যে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা ছবি তোলার সুযোগ পেলেন না—সেটাও কোনো সমস্যা নয়।

তারেক রহমান ও ইউনূসের এই মিটিংয়ের পরে দেশের মিডিয়ায়, সোশ্যাল ফোরামে অনেক ঝড় দেখছি। নানান জনে নানানভাবে বিশ্লেষণ করছেন। তবে আমার মতো একজন ক্ষুদ্র সাংবাদিক, আমি আগেও বহু লেখায় লিখেছি, ৫ তারিখ শেখ হাসিনার সরকারের অবসানের পরে দেশের বাকি বড় দল হিসেবে বিএনপি দেশের রাজনীতির ড্রাইভিং সিটে বসতে না পারা দলটির জন্য অনেক বড় ব্যর্থতা। তেমনি একই প্রশ্ন আসে—বিএনপি কার্যত যাকে তাদের মূল নেতা মানছে, তাঁকে এত সহজে এভাবে সামনে আনা কতটা স্ট্র্যাটেজিকালি সঠিক রাজনীতি হয়েছে, তা ভবিষ্যতই বলে দেবে।

কারণ, তারেক রহমান ওই বৈঠকের পরে কোনো কথা বলেননি। শুধু যৌথ বিবৃতির অংশ তিনি। সেখানে বলা আছে, যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, সংস্কার ও বিচার সঠিকভাবে এগোয়— তাহলে ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচন করা সম্ভব। এর পরে কেবলই মনে পড়ে সুকুমার রায়ের হ য ব র ল-এর ওই অংশটুকু, “সাত দুগুণে কত হয়? তখন উপরে তাকিয়ে দেখি, একটা দাঁড়কাক স্লেট পেনসিল দিয়ে কী যেন লিখছে, আর একবার ঘাড় বাঁকিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি বললাম ‘সাত দুগুণে চৌদ্দ’। কাকটা মাথা নেড়ে বলল, ‘হয়নি, হয়নি, ফেল’। … কাকটা কিছুক্ষণ জবাব দিল না, খালি পেনসিল মুখে দিয়ে খানিকক্ষণ কী যেন ভাবল। তারপর বলল, ‘সাত দুগুণে চৌদ্দর নামে চার, হাতে রইল পেনসিল’।”

বাস্তবে চৌদ্দের চারই নেমেছে। হাতে পেনসিল। এখন কার হাতে এই পেনসিল, তা বোঝা কঠিন। তবে কাকের হাতে পেনসিল থাকলে তো সময়ের মূল্য ধরে সাত দুগুণে চৌদ্দ বাড়তেই থাকে। কারণ, কাকের দেশে সময়ের মূল্য অনেক বেশি। তাই সময় যত যায়, ধাঁ ধাঁ করে সাত দুগুণে চৌদ্দ বাড়তে বাড়তে অনেক দূর চলে যায়। কারণ, সুকুমার রায়ের কাকের দেশে সাত দুগুণে চৌদ্দ ধাঁ ধাঁ করে কুড়ি, একুশ, বাইশ—এভাবে শুধু বাড়তে থাকে। আবার কাকেরা হিসেব ঘুরিয়েও দিতে পারে, যেহেতু পেনসিল তাদের হাতে। তাই জনগণ যতক্ষণ পেনসিল হাতে না পাবে, ততক্ষণ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যদি দেশ সুকুমার রায়ের হ য ব র ল-এ অবস্থান করতে থাকে, তাহলে কাউকে দোষ দেওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্য তারেক রহমানের সঙ্গে মিটিংয়ের পরে—শেষ যে বক্তব্য সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া গেছে—তাতে বলা হয়েছে, এপ্রিলে নির্বাচিত সরকার হবে। দেখা যাক, সময়ের মূল্য মেপে, সংস্কারের ঝাঁপ খুলে, ধুলো বালি ঝেড়ে শেষ অবধি কোথায় যায় নির্বাচনের দিন। জনগণ কখন তারিখ লেখার পেনসিল হাতে পায়!

অবশ্য ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, মুহাম্মদ ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী হয়েও কেন দেশ চালাতে পারছেন না। কেন দেশের অর্থনীতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে? কেন দেশ আন্তর্জাতিকভাবে এত অসম্মানিত হচ্ছে?

মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব যেমন তাঁর ক্ষমতায় আহরণকে মেটিকিউলাস ডিজাইনের অংশ বলেছেন; আবার তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে, যা শুনেছি, সেখানে তিনি বলেছেন, তিনি নিজে থেকে ক্ষমতায় আসতে চাননি। তাঁকে জোর করে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি এ জগতের মানুষ নন। যারা এনেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন ২৪ বছরের তরুণ বলেছে, এটা তাঁদের ভাগ্য—মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল বিজয়ী। তিনি রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। একজন নব্বই বছরের বৃদ্ধও একই কথা বলেছিলেন—তাঁদের ভাগ্য, একজন নোবেল বিজয়ী দেশের ভার নিয়েছেন।

তাঁদের প্রতি অতি বিনয়ের সঙ্গে বলতে হয়, মালালা ইউসুফজাই নারী শিক্ষার জন্য কিশোরী হিসেবে জীবন পণ করার বিনিময়ে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, এনজিও কর্মী হিসেবে ভারতের কৈলাশ সত্যার্থীও নোবেল পেয়েছেন। মালালা কি আফগানিস্তান চালাতে পারবে? কৈলাশ কি ভারত চালাতে পারবে এক ঘণ্টার জন্য?

বাংলাদেশে নির্বাচিত ও অনির্বাচিত অনেক সরকার এসেছে। প্রথম সরকারপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সরকারপ্রধান হওয়ার আগে এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। সর্বোপরি দেশের সবচেয়ে বড় দলের প্রধান ছিলেন। তাঁর নামে যে সরকার চলতো, সেই সরকারের প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম সিএসপি হিসেবে সরকার চিনতেন ১৯৪৯ সাল থেকে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন বারবার আওয়ামী লীগের মতো বড় দলের। তাজউদ্দিন আহমদ ১৯৫৫-তে আতাউর রহমান খানের মতো মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব; বড় দল আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি। মুজিব সরকারের পতনের পরে জিয়া সরকার আসে। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান সামরিক বাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন, এবং তাঁর জন্যই বাংলাদেশে ওই উপপ্রধান পদটি তৈরি হয়েছিল। এরপর সাত্তার সাহেব আপিল বিভাগের বিচারপতি ও পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। জেনারেল এরশাদ সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন। খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় আসেন, তার আগে তিনি নয় বছর একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান; এর আগে তিন বছর ফার্স্ট লেডি। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় আসেন, তাঁর আগে তিনি শুধু বড় রাজনৈতিক দলের নেতা নন, দুইবার সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা। এছাড়া এ দেশে যে ক’বার তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছে, সব সময়ই একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি (অর্থাৎ যিনি রাষ্ট্রের একটি অঙ্গের প্রধান ছিলেন) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হন ফখরুদ্দিন আহমদ; তিনি ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকও চালিয়েছেন। এই হিসেবে ইউনূস সাহেব ছোট একটি ব্যাংকের প্রধান মাত্র। তিন মাস তিনি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, তবে ওই সরকারটি ছিল সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার। আর তাঁর এনজিও’র যে কনসেপ্ট, সেটা নতুন কিছু নয়। জামানত না রেখে ঋণ দেওয়া—এটা পৃথিবীর হাজার বছরের রীতি। এ নিয়ে লিখতে গেলে লেখা ভিন্ন দিকে চলে যাবে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ইউনূস সাহেব নিজেও বলেছেন, এটা তাঁর অচেনা জগত। আর গত দশ মাসে প্রমাণ হয়ে গেছে—এটা সত্যিই তাঁর অচেনা জগত।

তারপর তিনি তাঁর প্লেটে যে পরিমাণ খাবার নিয়েছেন, সেই খাবার শেষ করার মানে অনেক বড় যুদ্ধ করা। সেই যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে—সেটা সুকুমার রায়ের হ য ব র ল-এর কাকের পেনসিল দিয়েই হিসেব করতে হবে।

তবে সে হিসেবের আগে এ মুহূর্তে প্রয়োজন দেশের স্থিতিশীলতা এবং বর্তমানের এই জটিল পৃথিবীতে বাংলাদেশ যাতে বিশ্বের অংশ হতে পারে, কোথাও গিয়ে কারো সঙ্গে দেখা করতে পারে—এমন একটি স্থিতিশীল সরকার ও তার একজন প্রধান। যেমন ইরানের বিষয়ে কথা বলার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের সরকারপ্রধানকে না ডেকে সেনাপ্রধানের সঙ্গে লাঞ্চ করছেন। আমেরিকা হয়তো তার স্বার্থে পাকিস্তানে দ্বৈত সরকার রেখেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশকে কী করতে হবে, তা মনে হয় ইউনূসের ব্রিটেন সফরের পরে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এখন সুকুমার রায়ের হ য ব র ল কাব্য থেকে বেরিয়ে যিনি বা যারা দ্রুত দেশকে স্থিতিশীল ও সম্মানিত করতে পারবেন—পাঁচ তারিখের পর থেকে যে শক্তিটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, রাজনীতির স্বার্থে রাজনীতিবিদরা এখন সেটা ভাবলেই দেশের দ্রুত মঙ্গল হবে। এই দেশে জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ—সকলেই কিন্তু দেশকে স্থিতিশীল করে পরে নির্বাচন দিয়েছেন। আর স্থিতিশীলতা ছাড়া নির্বাচন হবে না। মুহাম্মদ ইউনূসের প্লেটে পুলিশের জন্য রয়েছে বিচারহীনতা। আর পুলিশ ছাড়া কি দেশ স্থিতিশীল হবে? যে বড় দল ক্ষমতায় যাবে, তারা অন্তর্বর্তী সরকার হবে না, তারা স্থায়ী সরকার হবে। আর পুলিশসহ রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ তাদের হবে। সুকুমার রায়ের কাকের পেনসিল দিয়ে হিসাব করার সুযোগ কি তাদের আছে?

লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক, সম্পাদক সারাক্ষণ ও The Present World.