০৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত উলেমা-ই-ইসলাম বাংলাদেশকে চার আসন ছাড়ল বিএনপি নোভোএয়ারের ডিজিটাল সাফল্য: এক্সেলেন্স ইন বিজনেস ২০২৫ পুরস্কার অর্জন দুবাইয়ে সোনার ঝলক, ইতিহাস গড়ে ২২ ক্যারেট ছুঁল ৫০০ দিরহাম বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা নিয়ে ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগ জানাল ঢাকা পদ্মা ব্যাংকের একশ তেত্রিশতম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত ঘরের মাটিতে যুদ্ধের প্রস্তুতি: ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা পুনর্গঠনে ধীরগতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ চিপের স্বনির্ভরতার স্বপ্নে আমেরিকার লাল ফিতার বাধা অর্গান সঙ্গীতে ধ্যানের আমন্ত্রণ এলেন আরকব্রো ম্যানহাটনে ফিরছে বামিয়ান বুদ্ধ, ধ্বংসের স্মৃতি থেকে মানবতার নতুন প্রতীক ক্যামেরায় ধরা পড়ল মেরু ভালুকের বিরল দত্তক গল্প, প্রকৃতিতে নজিরবিহীন ঘটনা

রূপের ডালি খেলা ( শেষ পর্ব )

  • Sarakhon Report
  • ০৪:০০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০২৪
  • 89

ইউ. ইয়াকভলেভ

স্কেটস, বগলে ছেলেটা-১৪

অন্ধকার হয়ে এসেছে শহরটা। বরফের চটার ওপর আর দেখা যাচ্ছে না চান্দ্র গহরগুলো। ফার গাছের কচি, নরম কাঁটাগুলোকে আর কড়া, খোঁচা-খোঁচা পুরনো কাঁটাগুলো থেকে তফাৎ করা যাচ্ছে না। পিচ্ছিল, রূপোলী যে বরফগুলো থেকে জল ঝরছিল, তা এখন দৃষ্টির অতীত। তবে সূর্যের দিকে পৃথিবী তার অন্য পিঠটা ঘোরালেও শহরটা তখনো গরম, অদৃশ্য বরফগুলো থেকে জল করেই যাচ্ছে।

স্কেটস্ বগলে ছেলেটা যাচ্ছে শহরের রাস্তা দিয়ে।

অন্ধকারে চোখে পড়ে না যে তার একটা বোতাম খানিকটা কাপড় সমেত ছোঁড়া, মাফলারে বেগুনী কালির দাগ। দেখা যায় না যে তার ওভারকোট আর স্কী করার ট্রাউজারটার চেয়ে বড়ো হয়ে উঠেছে সে। সবই ওর খাটো, কিছুই মাপসই নয়। কিন্তু কাকে দুষব, যদি অত তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে ওঠে বাচ্চারা?

টুপিটায় এখন কোন কানটা ঢাকা? কী এসে যায় তাতে! মুখে এসে যখন লাগে বসন্তের উষ্ণ সজল নিশ্বাস, তখন ওটা কিছুই নয়, কান জমে যাবে না। শুধু সারা দিন জল ভেঙে ছুটোছুটি করায় জুতো জোড়া উঠেছে ভিজে, ঠান্ডা লাগছে পায়ে। লম্বা দশাসই একটা লোকের কথা ভাবছে ছেলেটা, গায়ে তার কালো জানোয়ারের ছাল দিয়ে তৈরি কোর্তা, আছে তার যুদ্ধের অর্ডার, তামাক খাওয়া পুরনো পাইপ, ফিল্ড ডাকঘরের নম্বর মারা স্যানিটারি ইউনিটের দেওয়া প্রেসক্রিপ্শন। একটা লোকের কথা ভাবছে সে, সারা জীবনেও যা তার জোটে নি। এখন তাকে পাওয়া গেল, কিন্তু সে তো তার নয়…

সেগেইয়ের বদলে সে হলে সবকিছু ফেলে রেখে সে ছুটে আসত বাপের কাছে… উ’হ’, বাবাকে ছেড়ে কোনো দিদিমার কাছে, কোনো সাপোজকেই সে যেত

না। সর্বদাই সে থাকত তার সঙ্গে সঙ্গে, ফলে যখনই দরকার সাহায্য করতে পারত। ছেলেটার খেয়ালই নেই যে তার ডানদিকে দেখা দিয়েছে স্টেডিয়মের রেলিঙ। স্কেটিং রিঙ্কে বাজনা বাজছে না, জ্বলছে না ঝলমলে আলোগুলো, বরফ কেটে যাওয়া স্কেট থেকে ওঠা সেই চনমনে সড়-সড় শব্দও শোনা যাচ্ছে না।

গেটের একমাত্র বাতিটির নিচে বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে:

‘গরম আবহাওয়ার জন্যে রিঙ্ক বন্ধ’।

ছেলেটা মুঠো চাপতেই হাতে যন্ত্রণা করে উঠল। মুঠোর মধ্যে ছিল সেই টুকরোটা, যা বিধিতে পারত বাতিউকভের হার্টে। আরো জোরে মুঠো চাপল ছেলেটা, আরো ব্যথা করে উঠল।

হঠাৎ খুশি হয়ে উঠল ছেলেটা। যন্ত্রণা সইতে পারে সে, রিঙ্ক বন্ধ তাতে তার বয়েই গেল। সৌভাগ্যবান সের্গেইকেও সে হেসে উড়িয়ে দিতে পারে, যদিও বাবা আছে তার। আর যে-লোকটা তাকে ‘খোকা রে’ বলে ডেকেছে, সে বে’চে থাকবে, সবুজ পাতা ফুটতেই সেরে উঠবে। আর পা জমে যাচ্ছে, সেও তো ভালো কথাই: তার মানে অনেক বরফ-গলা জল জমেছে শহরে, এসে যাচ্ছে বসন্ত, শিগগিরই ফুটে উঠবে সেই সবুজ পাতাগুলো।

খাটো ওভারকোটটার বোতাম খুলে ফেললে ছেলেটা, স্কেটস্ জোড়া অন্য হাতে নিয়ে পা বাড়ালে বাড়ির দিকে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত উলেমা-ই-ইসলাম বাংলাদেশকে চার আসন ছাড়ল বিএনপি

রূপের ডালি খেলা ( শেষ পর্ব )

০৪:০০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০২৪

ইউ. ইয়াকভলেভ

স্কেটস, বগলে ছেলেটা-১৪

অন্ধকার হয়ে এসেছে শহরটা। বরফের চটার ওপর আর দেখা যাচ্ছে না চান্দ্র গহরগুলো। ফার গাছের কচি, নরম কাঁটাগুলোকে আর কড়া, খোঁচা-খোঁচা পুরনো কাঁটাগুলো থেকে তফাৎ করা যাচ্ছে না। পিচ্ছিল, রূপোলী যে বরফগুলো থেকে জল ঝরছিল, তা এখন দৃষ্টির অতীত। তবে সূর্যের দিকে পৃথিবী তার অন্য পিঠটা ঘোরালেও শহরটা তখনো গরম, অদৃশ্য বরফগুলো থেকে জল করেই যাচ্ছে।

স্কেটস্ বগলে ছেলেটা যাচ্ছে শহরের রাস্তা দিয়ে।

অন্ধকারে চোখে পড়ে না যে তার একটা বোতাম খানিকটা কাপড় সমেত ছোঁড়া, মাফলারে বেগুনী কালির দাগ। দেখা যায় না যে তার ওভারকোট আর স্কী করার ট্রাউজারটার চেয়ে বড়ো হয়ে উঠেছে সে। সবই ওর খাটো, কিছুই মাপসই নয়। কিন্তু কাকে দুষব, যদি অত তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে ওঠে বাচ্চারা?

টুপিটায় এখন কোন কানটা ঢাকা? কী এসে যায় তাতে! মুখে এসে যখন লাগে বসন্তের উষ্ণ সজল নিশ্বাস, তখন ওটা কিছুই নয়, কান জমে যাবে না। শুধু সারা দিন জল ভেঙে ছুটোছুটি করায় জুতো জোড়া উঠেছে ভিজে, ঠান্ডা লাগছে পায়ে। লম্বা দশাসই একটা লোকের কথা ভাবছে ছেলেটা, গায়ে তার কালো জানোয়ারের ছাল দিয়ে তৈরি কোর্তা, আছে তার যুদ্ধের অর্ডার, তামাক খাওয়া পুরনো পাইপ, ফিল্ড ডাকঘরের নম্বর মারা স্যানিটারি ইউনিটের দেওয়া প্রেসক্রিপ্শন। একটা লোকের কথা ভাবছে সে, সারা জীবনেও যা তার জোটে নি। এখন তাকে পাওয়া গেল, কিন্তু সে তো তার নয়…

সেগেইয়ের বদলে সে হলে সবকিছু ফেলে রেখে সে ছুটে আসত বাপের কাছে… উ’হ’, বাবাকে ছেড়ে কোনো দিদিমার কাছে, কোনো সাপোজকেই সে যেত

না। সর্বদাই সে থাকত তার সঙ্গে সঙ্গে, ফলে যখনই দরকার সাহায্য করতে পারত। ছেলেটার খেয়ালই নেই যে তার ডানদিকে দেখা দিয়েছে স্টেডিয়মের রেলিঙ। স্কেটিং রিঙ্কে বাজনা বাজছে না, জ্বলছে না ঝলমলে আলোগুলো, বরফ কেটে যাওয়া স্কেট থেকে ওঠা সেই চনমনে সড়-সড় শব্দও শোনা যাচ্ছে না।

গেটের একমাত্র বাতিটির নিচে বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে:

‘গরম আবহাওয়ার জন্যে রিঙ্ক বন্ধ’।

ছেলেটা মুঠো চাপতেই হাতে যন্ত্রণা করে উঠল। মুঠোর মধ্যে ছিল সেই টুকরোটা, যা বিধিতে পারত বাতিউকভের হার্টে। আরো জোরে মুঠো চাপল ছেলেটা, আরো ব্যথা করে উঠল।

হঠাৎ খুশি হয়ে উঠল ছেলেটা। যন্ত্রণা সইতে পারে সে, রিঙ্ক বন্ধ তাতে তার বয়েই গেল। সৌভাগ্যবান সের্গেইকেও সে হেসে উড়িয়ে দিতে পারে, যদিও বাবা আছে তার। আর যে-লোকটা তাকে ‘খোকা রে’ বলে ডেকেছে, সে বে’চে থাকবে, সবুজ পাতা ফুটতেই সেরে উঠবে। আর পা জমে যাচ্ছে, সেও তো ভালো কথাই: তার মানে অনেক বরফ-গলা জল জমেছে শহরে, এসে যাচ্ছে বসন্ত, শিগগিরই ফুটে উঠবে সেই সবুজ পাতাগুলো।

খাটো ওভারকোটটার বোতাম খুলে ফেললে ছেলেটা, স্কেটস্ জোড়া অন্য হাতে নিয়ে পা বাড়ালে বাড়ির দিকে।