সারাক্ষণ ডেস্ক
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নীরবতা ভাঙলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তিকে দায়ী করেছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছেন। এই বার্তায় তিনি এ অভিযোগ করেছেন। বার্তাটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট দেখতে পেয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পতনে প্রতিবেশী ভারতে কূটনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে মোকাবিলা করতে এবং ইসলামঘেঁষা বিকল্পকে রোধ করতে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছিল নয়াদিল্লি।
শনিবার (১০ আগস্ট) বার্তা সংস্থা এএফপির বিশ্লেষণে এসব কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীনও ঢাকার নতুন কর্তৃপক্ষকে স্বাগত জানাতে তৎপর ছিল এবং বলেছে, বেইজিং সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়।
তবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক থমাস কিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশিদের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত কয়েক বছর ধরে ভুল পথে রয়েছে। ভারত সরকার ঢাকায় একেবারেই কোনো পরিবর্তন দেখতে চায়নি এবং বছরের পর বছর ধরে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছিল, তারা হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প দেখছে না।’
শেখ হাসিনা বেইজিংয়ের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেই নয়াদিল্লির সমর্থন পেয়েছেন এবং উভয় দেশের সঙ্গে সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করেছেন। বাংলাদেশের বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে সাধারণ হুমকি হিসেবে দেখেছিল নয়াদিল্লি। এই সুযোগে শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মমভাবে দমন করেছেন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ‘নয়াদিল্লি মনে করে, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিকল্প শক্তি ভারতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। নয়াদিল্লির দৃষ্টিতে বিএনপি এবং তার মিত্ররা বিপজ্জনক ইসলামী শক্তি, যা ভারতীয় স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’
শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এটা নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশ নিয়ে নয়াদিল্লি এখন ‘প্রবল কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের’ মুখোমুখি হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্র সতর্ক করে দিয়েছে, ‘নয়াদিল্লিকে অবশ্যই ক্ষয়ক্ষতি সীমিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং সম্পর্কের উচ্চ অংশীদারি নিশ্চিত করতে হবে। এতে কিছু স্বল্পমেয়াদি বিপত্তি দেখা দিতে পারে।’
তবে বাংলাদেশের নতুন নেতা ড. ইউনূস বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছেন। শপথ নেওয়ার আগে ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনে তিনি লিখেছেন, ‘যদিও কিছু দেশ, যেমন– ভারত, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেছে এবং এর ফলে বাংলাদেশি জনগণের শত্রুতা অর্জন করেছে। তবে এই ধরনের তিক্ততা সারানোর অনেক সুযোগ থাকবে।’
এদিকে বিবিসি বাংলার শুভজ্যোতি ঘোষ লিখেছেন, ৫ আগস্ট বিকালে ঢাকায় ভারতের সাবেক এক হাইকমিশনারের কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, শেখ হাসিনার ঢাকা ছাড়ার বিষয়ে তিনি জানেন কি না? ওই কূটনীতিক জবাব দেন, ‘তিনি যেখানে খুশি যান, ভারতে না এলেই হলো।’
শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় ও সুপ্রদীপ চাকমা। আজ রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গভবনে শপথ নিয়েছে তারা। একই সময়ে শপথ নিয়েছেন নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
ইসলামী ব্যাংক পিএলসির প্রধান কার্যালয় মতিঝিলের দিলকুশায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যাংকের চার কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ চার কর্মকর্তা হলেন-ইসলামী ব্যাংকের গোডাউন গার্ড (ডিজি) শফিউল্লাহ সরদার, অফিসার মামুন, আব্দুর রহমান ও বাকী বিল্লাহ। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।
ইসলামী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইসলামী ব্যাংকের কর্মীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ব্যাংকার সমাজ’ ব্যানারে ব্যাংক ডাকাত, লুটেরা ও তাঁবেদারদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও আন্দোলন করছিলেন। এ সময় আকস্মিকভাবে এস আলম গ্রুপের হয়ে কাজ করা কয়েকজন কর্মকর্তা প্রায় শতাধিক
অস্ত্রসহ লোক নিয়ে জোর করে ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় প্রবেশে বাধা দিলে কর্মকর্তাদের ওপরে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় তারা। এতে ৪ কর্মকর্তা আহত হন।
Leave a Reply