০৯:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৪) মোদি দিল্লির বিধ্বংসী বিস্ফোরণকে ‘চক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করলেন সাংবিধানিক সংশোধনী বিল নিয়ে পাকিস্তান সংসদে ভোট, বিরোধীদের ওয়াকআউট ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি ১,১৩৯ জন এলএনজি আমদানিতে ঝুঁকির সতর্কতা: বাংলাদেশের অর্থনীতি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ আমদানি সুবিধা: রমজানের ১০ পণ্য সহজে আমদানির নির্দেশনা নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়: ব্রিটিশ এমপি বব ব্ল্যাকম্যান মিরপুরে শতাব্দী পরিবহনের বাসে আগুন লকডাউনে আতঙ্কের কিছু নেই: অর্থের বিনিময়ে স্লোগান দিচ্ছে রিকশাচালকরা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন যান্ত্রিক ত্রুটিই কারণেই ঘটেছে, বলছে ডিএমপি

জীবন আমার বোন (পর্ব-৯৮)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 64

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

রঞ্জ খোকার মুখের দিকে তাকিয়ে খুব নরোম ক’রে বললে, ‘তোর উপর যথেষ্ট দুর্বলতা আছে নীলাভাবীর, ভীষণ স্নেহ করেন তোকে। বাপরে বাপ, প্রশংসা শুনতে শুনতে কানমাথা ঝালাপালা হ’য়ে গিয়েছিলো আমার।’

খোকা তাচ্ছিল্যভরে বললে, ‘আরে বাদ দে, আমি এসব গায়েই মাখি না। আসলেই নীলাভাবীটা একটা জ্বালাতন, ঝঝাট। নীলাভাবীর সব ভালো, শুধু স্বভাবটা একটু গায়েপড়া। ছেলেপিলে হয়নি বুঝলি না, এখনো কিছু কিছু ছেলেমানুষি আছে, বুড়িখুকি আর কি!’

‘কি যাতা বলছিস, তোর মাথায় সত্যিই ছিট হয়েছে–‘ শাসনের সুরে রঞ্জু বললে, ‘সবকিছু খারাপভাবে দেখছিস কেন এরকম? মেয়েদের সম্পর্কে ফটাফট মুখে যা আসে তা বলবি না, কি এমন জানিস তুই! কতো স্নেহ করেন তোকে, অথচ যা মুখে আসছে তাই বলছিস, অবহেলার ভাব দেখাচ্ছিস, তুই একটা খেটেচাষা! এই জন্যে মাঝে মাঝে তোর উপর আমার রাগ হয়!’

খোকা অসহায়ের মতো ভেঙে প’ড়ে কাতরভাবে বললে, ‘রঞ্জু তুই আজকাল আমাকে বড় বকাঝকা করিস, সামান্য একটা খুঁত পেলেই হ’লো। আমি তোর দু’চোখের বিষ, দেখতে পারিস না তুই আমাকে–‘

রঞ্জু হেসে ফেললো। পোড়া পেটলের ঝাঁঝালো গন্ধ আসছিলো ব’লে নাকমুখ রুমাল দিয়ে ঢেকেছিলো সে। রুমালটা দিয়ে খোকাকে একটা বাড়ি মেরে বললে, ‘কচিকোকা, কোকাবাবু, কাঁদে না বাবু কাঁদে না–‘

আমার বোন-১১-

স্মার্ট লিখ সাকিরা-বিমাদন খালি থাকে- রাত-১২-

জয়াম ভদ্শন স্থাত কথা পরদিন খুব সকালে মুরাদ এলো, সঙ্গে ইয়াসিন। খোকা তখন বারান্দায়। ব’সে ব’সে সে পাখির ডাক শুনছিলো। এতো পাখির ডাক এর আগে সে আর কখনো শোনেনি। পাতার আড়ালে গা লুকিয়ে চোখগেল আর বউকথাকও ডাকছে এখন।

মুরাদকে কিছুটা বিষণ্ণ মনে হ’লো খোকার। টাকা-পয়সার টানাটানি কিংবা গাঁজাভাঙের নেশা, যেকোনো একটার ফেরে পড়েছে বেচারা, খোকা এই সিদ্ধান্তে এলো; সে জানে অনেকদিন দাওয়াই পড়েনি মুরাদের পেটে, ওর সমস্ত অন্তরাত্মা এখন সামসু সামসু ক’রে দাপাচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৪)

জীবন আমার বোন (পর্ব-৯৮)

১২:০০:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

রঞ্জ খোকার মুখের দিকে তাকিয়ে খুব নরোম ক’রে বললে, ‘তোর উপর যথেষ্ট দুর্বলতা আছে নীলাভাবীর, ভীষণ স্নেহ করেন তোকে। বাপরে বাপ, প্রশংসা শুনতে শুনতে কানমাথা ঝালাপালা হ’য়ে গিয়েছিলো আমার।’

খোকা তাচ্ছিল্যভরে বললে, ‘আরে বাদ দে, আমি এসব গায়েই মাখি না। আসলেই নীলাভাবীটা একটা জ্বালাতন, ঝঝাট। নীলাভাবীর সব ভালো, শুধু স্বভাবটা একটু গায়েপড়া। ছেলেপিলে হয়নি বুঝলি না, এখনো কিছু কিছু ছেলেমানুষি আছে, বুড়িখুকি আর কি!’

‘কি যাতা বলছিস, তোর মাথায় সত্যিই ছিট হয়েছে–‘ শাসনের সুরে রঞ্জু বললে, ‘সবকিছু খারাপভাবে দেখছিস কেন এরকম? মেয়েদের সম্পর্কে ফটাফট মুখে যা আসে তা বলবি না, কি এমন জানিস তুই! কতো স্নেহ করেন তোকে, অথচ যা মুখে আসছে তাই বলছিস, অবহেলার ভাব দেখাচ্ছিস, তুই একটা খেটেচাষা! এই জন্যে মাঝে মাঝে তোর উপর আমার রাগ হয়!’

খোকা অসহায়ের মতো ভেঙে প’ড়ে কাতরভাবে বললে, ‘রঞ্জু তুই আজকাল আমাকে বড় বকাঝকা করিস, সামান্য একটা খুঁত পেলেই হ’লো। আমি তোর দু’চোখের বিষ, দেখতে পারিস না তুই আমাকে–‘

রঞ্জু হেসে ফেললো। পোড়া পেটলের ঝাঁঝালো গন্ধ আসছিলো ব’লে নাকমুখ রুমাল দিয়ে ঢেকেছিলো সে। রুমালটা দিয়ে খোকাকে একটা বাড়ি মেরে বললে, ‘কচিকোকা, কোকাবাবু, কাঁদে না বাবু কাঁদে না–‘

আমার বোন-১১-

স্মার্ট লিখ সাকিরা-বিমাদন খালি থাকে- রাত-১২-

জয়াম ভদ্শন স্থাত কথা পরদিন খুব সকালে মুরাদ এলো, সঙ্গে ইয়াসিন। খোকা তখন বারান্দায়। ব’সে ব’সে সে পাখির ডাক শুনছিলো। এতো পাখির ডাক এর আগে সে আর কখনো শোনেনি। পাতার আড়ালে গা লুকিয়ে চোখগেল আর বউকথাকও ডাকছে এখন।

মুরাদকে কিছুটা বিষণ্ণ মনে হ’লো খোকার। টাকা-পয়সার টানাটানি কিংবা গাঁজাভাঙের নেশা, যেকোনো একটার ফেরে পড়েছে বেচারা, খোকা এই সিদ্ধান্তে এলো; সে জানে অনেকদিন দাওয়াই পড়েনি মুরাদের পেটে, ওর সমস্ত অন্তরাত্মা এখন সামসু সামসু ক’রে দাপাচ্ছে।