শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৬)

  • Update Time : শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬.১৭ পিএম

ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

ধর্ম এবং ধর্মীয় আচারবিশ্বাস

ভাষার সঙ্গে আরেকটি মানবিক দিক হল ধর্ম, ধর্মীয় আচার-বিচার এবং বিশ্বাস। এ প্রসঙ্গে একথা বলা যায় মায়া জনজাতির মধ্যে মূলত একটি ধর্মই চালু ছিল। সেই ধর্ম আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মত প্রকৃতি (Nature)।এই বিশ্বাস প্রধানত গড়ে উঠেছিল প্রাকৃতিক শক্তিকে কেন্দ্র করে এবং এই ধর্মের সঙ্গে রীতি, আচার এবং পুরোহিততন্ত্রের বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। এবং এই ধরনের খোলামেলা ধর্মীয় বিশ্বাস চিয়াপাস প্রদেশের পূর্বদিকে অবস্থিত উসুমাসিন্তা উপত্যকা অঞ্চলে এখনো দেখা যায়।

মায়াদের এই গোষ্ঠীর নাম লাকানডান মায়া। অন্য একটি মত অনুসরণ করে বলা যায় মায়া-ধর্ম প্রাথমিকভাবে মিলপা (Milpa) চাষ থেকে গড়ে উঠেছিল। মায়া-ধর্মের অন্যতম প্রধান দিক হল তার মানবিক আবেদন। এই মতটি পৃথিবীর সারা মানবগোষ্ঠীর ভাল এবং সুন্দর মঙ্গলময় জীবনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।

মায়াদের ধর্ম একথাও বিশ্বাস করে যে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড চক্রাকারে এবং নিয়ম মেনে নিরবিচ্ছিন্ন গতিতে চলেছে। মানুষ এই চক্রাকারের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে চলে নিজেদের ভাল করতে পারে এবং এই চক্রাকার গতির সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ‘সময়’ (Time)। এবং সময়ের চক্রাকারে-এর সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষেত্রে মানুষকে সময়-এর অঙ্কটিকেও বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে ও সময়ের প্রতি সুতীক করতে হবে।

তবে এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে হিসাবের মধ্য দিয়েই জন্ম নিয়েছিল মায়া ক্যালেন্ডার। এবং এই সময়সীমা মোটামুটিভাবে ৩৫৩-২৩৫ খ্রিঃ পূর্ব। এই সময়ের মধ্যে ঈশ্বর, পুরোহিত এবং বেশ কার্যকরী রক্তি আচার গড়ে উঠেছিল। ধর্মীয় চিন্তার দ্বিতীয়পর্ব শুরু হয়েছিল উয়াক্যাতুন-এর মামন (Mamon) মৃৎশিল্পর সময়ে।

এবং এই কথাটি মনে রাখা দরকার যে মায়া ধর্মের উৎস ও প্রসারের ক্ষেত্রে তাদের জ্যোতির্বিদ্যার স্থান গুরুত্বপূর্ণ। বিশিষ্ট সমাজ ঐতিহাসিক মরলে (Morley) মনে করেন এই পরিবর্তন বা জ্যোতির্বিজ্ঞানের সূচনাকাল প্রধানন্ত খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে। তবে ধর্মীয়চিন্তার উৎস প্রচার, প্রসার এসব সম্পার ঐতিহাসিকদের মধ্যে কৌতূহল ও প্রশ্ন আছে।

কিন্তু ঐতিহাসিক মরলে (Morley) মনে করেন ধর্মের এই প্রভাব, গুরুত্বর মূলে এর বিবর্তন যতটা কাজ করেছে তার থেকে বেশি কাজ করেছে নানাভাবে ঘটে যাওয়া মিশ্রণ ও বৈচিত্র্য। এই দিক থেকে অনেকের মত হল মায়া-ধর্ম অন্যান্য সংস্কৃতি, পরিযায়ী ভাষা, লোকাচার-এর সঙ্গে মিশেছিল যা ভারতীয় সংস্কৃতিরও অন্যতম প্রমাণিত বৈশিষ্ট্য।

(চলবে)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৫)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৫)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024