১২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ ‘ইনল্যান্ড টাইপ্যান’: প্রাণঘাতী বিষ, শান্ত স্বভাবের এই সরীসৃপের অজানা বিস্ময় কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে পুলিশের মৃত্যু রবিবার থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা ভিয়েতনামী ঔপন্যাসিক ড. ফান কুয়ে মাই শারজাহ বইমেলায় পাঠকদের মুগ্ধ করলেন মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৩৪ জন পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের বছর? প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীদের আমরণ অনশন ৬৫ ঘণ্টা অতিক্রম, সরকারের নীরবতা অব্যাহত গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই: বিএনপি নেতা আমীর খসরু

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৪০)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • 67

শশাঙ্ক মণ্ডল

শিল্প-বাণিজ্য

তৃতীয় অধ্যায়

সরকারি রিপোর্টে লক্ষ করা যাচ্ছে ১৯১০-১১ খ্রীষ্টাব্দে, বর্ধমানের মত ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে বসিরহাটে তাঁতশিল্পের অগ্রগতি ঘটছে। অনেক তাঁতি পুরানো ব্যবসায় আবার ফিরে আসছে। ট্যাটরা, পিফা, সোলাদানা, পুঁড়া, বাদুড়িয়া, ভাঙর, রাজারহাট প্রভৃতি এলাকার তাঁতিরা আবার তাঁত শিল্পের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে। এরা সাধারণত মোটা সুতার (৩০…৬০ কাউন্টের) কাজ করত খটখটি তাঁতের সাহায্যে। এসব তাঁতে তাঁতিরা গামছা মশারি লুঙ্গি মোটা ধুতি ও শাড়ি তৈরি করত। পাকা রঙের কাজ এরা করত না।

অন্যদিবে ট্যাটরার তাঁতিরা সূক্ষ্ম সুতার কাজ জানত। ৬০-১০০ কাউন্টের কাপড় এরা তৈরি করত। নদীয়ার শান্তিপুর কুমারখালিতে তাঁতিরা নতুন উৎসাহে কাজে লেগেছে- সরকারি রিপোর্টে তা লক্ষ করা যাচ্ছে। সরকারি তথ্যে জানা যাচ্ছে যশোর জেলায় ৫০০০ নতুন তাঁতে কাজ শুরু হয়েছে। জেলার হিসাবে ২০-২৫ শতাংশ কাপড়ের উৎপাদন বেড়েছে। অনেকে জাত ব্যবসা ছেড়ে অন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিল। তারা তাঁতের ক্ষেত্রে এই তেজীভাব লক্ষ করে আবার পুরানো পেশায় ফিরে আসছে। (৯)

এ চিত্র পূর্ব বাংলার অনেক জেলায় লক্ষ করা যাচ্ছে। এরই পাশাপাশি বিদেশি কাপড় আমদানি কমছে। নোয়াখলিতে ১৯০৫/৬ এ ২৮৫২ বেল কাপড় আমদানি হয়েছিল আর ১৯০৭/৮ এ তা কমে গিয়ে দাঁড়াল ৯৪২ বেল। অপরদিকে ১৯০৫/৬ এ দেশীয় পণ্য ৪৫৩ বেল থেকে দাড়াল ১৯০৭/৮ এ ৪৬৫৩ বেল। উনিশ শতকের শেষে দেশি তাঁতগুলিকে সংস্কার করার একটা প্রচেষ্টা লক্ষ করা গেল। সরকারি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ হাভেল সাহেব প্রস্তাব দিলেন দেশীয় তাঁতগুলির কিছু সংস্কার করলে এরা বর্তমানের তুলনায় ১৫% উৎপাদন বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে (১১) এবং এই উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে বিলাতি বস্ত্রের দামের ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধি ঘটবে সুতরাং দেশীয় শিল্প বর্তমান প্রতিযোগিতায় সুবিধা করতে পারবে।

একথা মনে রেখে শ্রীরামপুরে সরকারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে Fly shuttle তৈরি করা হল। এই নতুন উন্নত তাঁত বাংলার তাঁতশিল্পকে নতুন করে উৎসাহিত করল। ১৮৯০ এর মধ্যে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে এই উন্নত তাঁত চালু করা হয়। ২০০ এর বেশি তাঁতি পরিবার এই নতুন যন্ত্র সংগ্রহ করেছে। বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার হস্তীসুন্দা গ্রামের তাঁতিরা এবং ঐ গ্রামেরই একজন মৌলভী এই তাঁত বিক্রয় করছে ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে-এই তথ্য G. N. Gupta-এর রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৪০)

১২:০০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

শশাঙ্ক মণ্ডল

শিল্প-বাণিজ্য

তৃতীয় অধ্যায়

সরকারি রিপোর্টে লক্ষ করা যাচ্ছে ১৯১০-১১ খ্রীষ্টাব্দে, বর্ধমানের মত ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে বসিরহাটে তাঁতশিল্পের অগ্রগতি ঘটছে। অনেক তাঁতি পুরানো ব্যবসায় আবার ফিরে আসছে। ট্যাটরা, পিফা, সোলাদানা, পুঁড়া, বাদুড়িয়া, ভাঙর, রাজারহাট প্রভৃতি এলাকার তাঁতিরা আবার তাঁত শিল্পের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে। এরা সাধারণত মোটা সুতার (৩০…৬০ কাউন্টের) কাজ করত খটখটি তাঁতের সাহায্যে। এসব তাঁতে তাঁতিরা গামছা মশারি লুঙ্গি মোটা ধুতি ও শাড়ি তৈরি করত। পাকা রঙের কাজ এরা করত না।

অন্যদিবে ট্যাটরার তাঁতিরা সূক্ষ্ম সুতার কাজ জানত। ৬০-১০০ কাউন্টের কাপড় এরা তৈরি করত। নদীয়ার শান্তিপুর কুমারখালিতে তাঁতিরা নতুন উৎসাহে কাজে লেগেছে- সরকারি রিপোর্টে তা লক্ষ করা যাচ্ছে। সরকারি তথ্যে জানা যাচ্ছে যশোর জেলায় ৫০০০ নতুন তাঁতে কাজ শুরু হয়েছে। জেলার হিসাবে ২০-২৫ শতাংশ কাপড়ের উৎপাদন বেড়েছে। অনেকে জাত ব্যবসা ছেড়ে অন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিল। তারা তাঁতের ক্ষেত্রে এই তেজীভাব লক্ষ করে আবার পুরানো পেশায় ফিরে আসছে। (৯)

এ চিত্র পূর্ব বাংলার অনেক জেলায় লক্ষ করা যাচ্ছে। এরই পাশাপাশি বিদেশি কাপড় আমদানি কমছে। নোয়াখলিতে ১৯০৫/৬ এ ২৮৫২ বেল কাপড় আমদানি হয়েছিল আর ১৯০৭/৮ এ তা কমে গিয়ে দাঁড়াল ৯৪২ বেল। অপরদিকে ১৯০৫/৬ এ দেশীয় পণ্য ৪৫৩ বেল থেকে দাড়াল ১৯০৭/৮ এ ৪৬৫৩ বেল। উনিশ শতকের শেষে দেশি তাঁতগুলিকে সংস্কার করার একটা প্রচেষ্টা লক্ষ করা গেল। সরকারি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ হাভেল সাহেব প্রস্তাব দিলেন দেশীয় তাঁতগুলির কিছু সংস্কার করলে এরা বর্তমানের তুলনায় ১৫% উৎপাদন বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে (১১) এবং এই উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে বিলাতি বস্ত্রের দামের ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধি ঘটবে সুতরাং দেশীয় শিল্প বর্তমান প্রতিযোগিতায় সুবিধা করতে পারবে।

একথা মনে রেখে শ্রীরামপুরে সরকারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে Fly shuttle তৈরি করা হল। এই নতুন উন্নত তাঁত বাংলার তাঁতশিল্পকে নতুন করে উৎসাহিত করল। ১৮৯০ এর মধ্যে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে এই উন্নত তাঁত চালু করা হয়। ২০০ এর বেশি তাঁতি পরিবার এই নতুন যন্ত্র সংগ্রহ করেছে। বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার হস্তীসুন্দা গ্রামের তাঁতিরা এবং ঐ গ্রামেরই একজন মৌলভী এই তাঁত বিক্রয় করছে ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে-এই তথ্য G. N. Gupta-এর রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে।