০৩:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

রাঙামাটি শহরে সংঘাতের ক্ষত, ভয় কাটেনি

  • Sarakhon Report
  • ০৮:৪৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 26

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “রাঙামাটি শহরে সংঘাতের ক্ষত, ভয় কাটেনি”

ঠিক এক যুগের ব্যবধানে বড় ধরনের সংঘাত দেখল রাঙামাটি শহর। গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) পাহাড়ি ও বাঙালিদের সংঘর্ষ হয়। এদিন অনিক কুমার চাকমা নামের ওই তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দক্ষিণ কালিন্দীপুর সড়কে।

ঘটনাক্রমে ২০১২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এ শহরেই পাহাড়ি–বাঙালির সংঘাত হয়েছিল। শহরের বনরূপা বাজারের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবার হামলা হয়েছিল, ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। এবার ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শেভরনের একাংশ।

শেভরনের নিচতলায় প্রতিটি কক্ষে পোড়া দাগ। যত্রতত্র পড়ে আছে ল্যাবের যন্ত্রাংশ। সংঘর্ষের পর গত মঙ্গলবার খুলেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। মঙ্গলবার দুপুরে একটি কক্ষে বসে কথা হচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটির মালিক পরশ খীসার সঙ্গে। বলছিলেন, ‘এবার যে হামলা দেখলাম, তা নজিরবিহীন। অন্তত আমি দেখিনি। আগের কোনো সংঘাতে এত দোকান ও প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’

 

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “কক্সবাজার রেল প্রকল্পের ব্যয় কমছে ৬,৬৭০ কোটি টাকা”

দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১০ সালে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। সরকারের ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত এ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা আছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অংশে রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আর প্রকল্পের রামু-কক্সবাজার অংশ আপাতত বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

 

 

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ সংস্কারে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক”

আর্থিকখাত সংস্কারে বাংলাদেশকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।

অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা বলেন, অন্তত দুই বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ দেওয়া হবে এবং বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে আরও দেড় বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করা হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ডিজিটালাইজেশন, তারল্য, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহণে সংস্কারে সহায়তা করবে।

বৈঠকে ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকার যে ব্যাপক পরিসরে সংস্কার শুরু করেছে তার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চান এবং বিশ্বব্যাংককে তার ঋণদান কর্মসূচি সম্পর্কে সৃজনশীল হতে বলেন।

এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই। আধঘণ্টা বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ায় ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।

 

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম“প্রতি মিনিটের অডিও ভিডিও খরচ ২০ হাজার, আপত্তি পরিকল্পনা কমিশনের”

দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করতে ‘ই-জুডিশিয়ারি’- নামের একটি প্রকল্প প্রস্তুত করে আইন ও বিচার বিভাগ। দুই হাজার ৬২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার প্রকল্পটির কিছু খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা হয়। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় কিছু খাত যুক্ত করা হয়। এ সব নিয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। সূত্র বলছে, প্রকল্পটিতে প্রতি মিনিট অডিও-ভিডিও বা চিত্রতথ্য নির্মাণের জন্য ২০ হাজার টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। মাত্র ২০ মিনিটের একটি অডিও বা ভিডিও নির্মাণে ব্যয় হবে ৪ লাখ টাকা। এই খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্পের উপদেষ্টার জন্য চার কোটি টাকা ব্যয়ে জিপ গাড়ি কেনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এটি বাদ দিতে বলা হলেও পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় তা বাদ দেয়া হয়নি। অন্যদিকে অফিস স্টেশনারি, অফিস ভাড়া, পরামর্শক সেবা, পেট্রোল, গ্যাস ও জ্বালানি, কম্পিউটার সামগ্রী, কম্পিউটার মেরামত, যানবাহন সংরক্ষণ ও মেরামত ইত্যাদি ব্যয় আরও পর্যালোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ ও বছরভিত্তিক বিভাজন দেখানোর কথা বলা হয়েছিল আইন ও বিচার বিভাগকে। কিন্তু পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় সেই প্রস্তাবও মানা হয়নি।

এদিকে সেমিনারের ব্যয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ধরা হয়নি বলেও জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র। এছাড়া ইলেকট্রিক আর্চওয়ে, এক্স-রে ব্যাগেজ স্ক্যানার ও নিরাপত্তা অঙ্গে ১০০ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এসব যন্ত্রপাতির কারিগরি বৈশিষ্ট্য ডিপিপিতে সংযুক্ত করা হয়নি। এসব সরঞ্জাম ই-জুডিশিয়ারি কার্যক্রমের সঙ্গে কতটুকু সম্পর্কিত, প্রশ্ন উঠেছে সেটি নিয়েও।
ই-কোর্ট রুমের সম্পূর্ণ বিচারিক কার্যক্রম সিসি ক্যামেরা ও ভিডিও রেকর্ডিং এর আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ বলেছে, বিচারিক কার্যক্রমে বাদী-বিবাদীর বক্তব্য, জেরা তাদের ছবির প্রাইভেসি রাখার ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা ও অডিও-ভিডিও অন্তরায় হতে পারে। ফলে প্রাইভেসি বিবেচনায় এগুলো রাখা ঠিক হবে কিনা আলোচনা হতে পারে।
প্রকল্পের পরামর্শক সেবা খাতেই ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। পরামর্শক সেবা, টেকনিক্যাল পরামর্শক সেবা ও আইনি পরামর্শক সেবা নামের তিনটি অঙ্গে যথাক্রমে ১৭ কোটি ৩১ লাখ, ৬ কোটি ৩৩ লাখ ও ৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চতর প্রশিক্ষণ খাতে ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ই-জুডিশিয়ারি অনেক বড় একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির বিভিন্ন খাতের ব্যয় নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কিছু অঙ্গের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যয় নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি। অহেতুক ব্যয়ের কোনো সুযোগ নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্প অগ্রাধিকার দিচ্ছে জানিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কিছু কর্মকর্তা বলেন, ই-জুডিশিয়ারি সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নের প্রকল্প। সেক্ষেত্রে প্রকল্পটি এখনই একনেকে অনুমোদন নাও হতে পারে।
আইন ও বিচার বিভাগ বলছে, নাগরিকদের আইনি অধিকার নিশ্চিতকরণে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন ও সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। কিন্তু সীমিতসংখ্যক বিচারক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী, গতানুগতিক পদ্ধতির বিচার কার্যক্রম ইত্যাদি কারণে যথাসময়ে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন ও রায় প্রদান করা সম্ভব হয় না। এমন অবস্থায় মামলার জট বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচার কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার জন্য এবং বিচার প্রাপ্তিতে জনগণের প্রবেশাধিকার সহজলভ্য করার জন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশন করা জরুরি। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, বিচার ব্যবস্থার জন্য প্রশাসনিক এবং বিচার কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় করা, ই-আদালত কক্ষ প্রতিষ্ঠা করা এবং আইসিটি’র জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা বিচারক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

রাঙামাটি শহরে সংঘাতের ক্ষত, ভয় কাটেনি

০৮:৪৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “রাঙামাটি শহরে সংঘাতের ক্ষত, ভয় কাটেনি”

ঠিক এক যুগের ব্যবধানে বড় ধরনের সংঘাত দেখল রাঙামাটি শহর। গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) পাহাড়ি ও বাঙালিদের সংঘর্ষ হয়। এদিন অনিক কুমার চাকমা নামের ওই তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দক্ষিণ কালিন্দীপুর সড়কে।

ঘটনাক্রমে ২০১২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এ শহরেই পাহাড়ি–বাঙালির সংঘাত হয়েছিল। শহরের বনরূপা বাজারের শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবার হামলা হয়েছিল, ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। এবার ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শেভরনের একাংশ।

শেভরনের নিচতলায় প্রতিটি কক্ষে পোড়া দাগ। যত্রতত্র পড়ে আছে ল্যাবের যন্ত্রাংশ। সংঘর্ষের পর গত মঙ্গলবার খুলেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। মঙ্গলবার দুপুরে একটি কক্ষে বসে কথা হচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটির মালিক পরশ খীসার সঙ্গে। বলছিলেন, ‘এবার যে হামলা দেখলাম, তা নজিরবিহীন। অন্তত আমি দেখিনি। আগের কোনো সংঘাতে এত দোকান ও প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’

 

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “কক্সবাজার রেল প্রকল্পের ব্যয় কমছে ৬,৬৭০ কোটি টাকা”

দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১০ সালে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। সরকারের ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত এ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা আছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অংশে রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আর প্রকল্পের রামু-কক্সবাজার অংশ আপাতত বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

 

 

ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ সংস্কারে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক”

আর্থিকখাত সংস্কারে বাংলাদেশকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুরে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।

অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা বলেন, অন্তত দুই বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ দেওয়া হবে এবং বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে আরও দেড় বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করা হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ডিজিটালাইজেশন, তারল্য, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহণে সংস্কারে সহায়তা করবে।

বৈঠকে ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকার যে ব্যাপক পরিসরে সংস্কার শুরু করেছে তার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চান এবং বিশ্বব্যাংককে তার ঋণদান কর্মসূচি সম্পর্কে সৃজনশীল হতে বলেন।

এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই। আধঘণ্টা বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ায় ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।

 

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম“প্রতি মিনিটের অডিও ভিডিও খরচ ২০ হাজার, আপত্তি পরিকল্পনা কমিশনের”

দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করতে ‘ই-জুডিশিয়ারি’- নামের একটি প্রকল্প প্রস্তুত করে আইন ও বিচার বিভাগ। দুই হাজার ৬২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার প্রকল্পটির কিছু খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা হয়। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় কিছু খাত যুক্ত করা হয়। এ সব নিয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। সূত্র বলছে, প্রকল্পটিতে প্রতি মিনিট অডিও-ভিডিও বা চিত্রতথ্য নির্মাণের জন্য ২০ হাজার টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। মাত্র ২০ মিনিটের একটি অডিও বা ভিডিও নির্মাণে ব্যয় হবে ৪ লাখ টাকা। এই খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্পের উপদেষ্টার জন্য চার কোটি টাকা ব্যয়ে জিপ গাড়ি কেনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এটি বাদ দিতে বলা হলেও পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় তা বাদ দেয়া হয়নি। অন্যদিকে অফিস স্টেশনারি, অফিস ভাড়া, পরামর্শক সেবা, পেট্রোল, গ্যাস ও জ্বালানি, কম্পিউটার সামগ্রী, কম্পিউটার মেরামত, যানবাহন সংরক্ষণ ও মেরামত ইত্যাদি ব্যয় আরও পর্যালোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ ও বছরভিত্তিক বিভাজন দেখানোর কথা বলা হয়েছিল আইন ও বিচার বিভাগকে। কিন্তু পুনর্গঠিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় সেই প্রস্তাবও মানা হয়নি।

এদিকে সেমিনারের ব্যয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ধরা হয়নি বলেও জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র। এছাড়া ইলেকট্রিক আর্চওয়ে, এক্স-রে ব্যাগেজ স্ক্যানার ও নিরাপত্তা অঙ্গে ১০০ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এসব যন্ত্রপাতির কারিগরি বৈশিষ্ট্য ডিপিপিতে সংযুক্ত করা হয়নি। এসব সরঞ্জাম ই-জুডিশিয়ারি কার্যক্রমের সঙ্গে কতটুকু সম্পর্কিত, প্রশ্ন উঠেছে সেটি নিয়েও।
ই-কোর্ট রুমের সম্পূর্ণ বিচারিক কার্যক্রম সিসি ক্যামেরা ও ভিডিও রেকর্ডিং এর আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ বলেছে, বিচারিক কার্যক্রমে বাদী-বিবাদীর বক্তব্য, জেরা তাদের ছবির প্রাইভেসি রাখার ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা ও অডিও-ভিডিও অন্তরায় হতে পারে। ফলে প্রাইভেসি বিবেচনায় এগুলো রাখা ঠিক হবে কিনা আলোচনা হতে পারে।
প্রকল্পের পরামর্শক সেবা খাতেই ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। পরামর্শক সেবা, টেকনিক্যাল পরামর্শক সেবা ও আইনি পরামর্শক সেবা নামের তিনটি অঙ্গে যথাক্রমে ১৭ কোটি ৩১ লাখ, ৬ কোটি ৩৩ লাখ ও ৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চতর প্রশিক্ষণ খাতে ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ই-জুডিশিয়ারি অনেক বড় একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির বিভিন্ন খাতের ব্যয় নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কিছু অঙ্গের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যয় নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি। অহেতুক ব্যয়ের কোনো সুযোগ নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্প অগ্রাধিকার দিচ্ছে জানিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কিছু কর্মকর্তা বলেন, ই-জুডিশিয়ারি সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নের প্রকল্প। সেক্ষেত্রে প্রকল্পটি এখনই একনেকে অনুমোদন নাও হতে পারে।
আইন ও বিচার বিভাগ বলছে, নাগরিকদের আইনি অধিকার নিশ্চিতকরণে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন ও সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। কিন্তু সীমিতসংখ্যক বিচারক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী, গতানুগতিক পদ্ধতির বিচার কার্যক্রম ইত্যাদি কারণে যথাসময়ে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন ও রায় প্রদান করা সম্ভব হয় না। এমন অবস্থায় মামলার জট বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচার কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার জন্য এবং বিচার প্রাপ্তিতে জনগণের প্রবেশাধিকার সহজলভ্য করার জন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশন করা জরুরি। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, বিচার ব্যবস্থার জন্য প্রশাসনিক এবং বিচার কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় করা, ই-আদালত কক্ষ প্রতিষ্ঠা করা এবং আইসিটি’র জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা বিচারক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।