শ্রী নিখিলনাথ রায়
মন্দিরটি এক্ষণে অসংস্কৃত অবস্থায় বর্তমান। ভবানীশ্বর আজিও মন্দির- মধ্যে বিরাজ করিতেছেন। কিন্তু মন্দিরের চতুঃপার্শ্বস্থ বারাণ্ডায় পারাবত সকল বাস করিয়া তাহাকে অপরিষ্কৃত করিয়া রাখিয়াছে। ইহার প্রতি কোনই যত্ন লওয়া হয় না। ভবানীশ্বরমন্দিরের পশ্চিমে ভবানীর একমাত্র কন্যা তারার স্থাপিত গোপালমন্দির। এই মন্দিরমধ্যে কৃষ্ণ প্রস্তরনির্মিত গোপালমূর্তি বিরাজিত। গোপালমূর্তিটি মনোমুগ্ধকরী।
-গোপাল হস্তপ্রসারণপূর্ব্বক যেন কিছু প্রার্থনা করিতেছেন। মন্দিরের বারাণ্ডায় একটি ফোয়ারা রহিয়াছে; মন্দিরের শিলালিপিতে এইরূপ লিখিত আছে:-
“খশৃঞ্জমিত্রশকে শ্রীভবানীতনুসম্ভবা।
নির্ঘুমে শ্রীমতী তারা শ্রীমদেগাপালমন্দিরম্ ॥”
গোপালমন্দিরবাটীতে একটি শিব প্রতিষ্ঠিত আছেন। মন্দিরবার্টীতে প্রবেশ করিতে হইলে দ্বারের দুই পার্শ্বে তারেশ্বর নামে দুই শিব দৃষ্ট হন। মন্দিরের বাহিরে চত্বরে গোপালের একটি পর্ব্বনন্দির আছে। দোল প্রভৃতি পর্ব্বোপলক্ষে তথায় গোপালের আগমন হইয়া থাকে। গোপালের সেবারও বেশ সুবন্দোবস্ত আছে। গোপালমন্দিরের পশ্চাতে অর্থাৎ উত্তর দিকে একটি শুষ্ক বিশ্বতলায় রাজা রামকৃষ্ণের পঞ্চমুণ্ডীর আসন। বেদীর চিহ্ন আজিও দোখতে পাওয়া যায়। তাহারই নিকট গোপাল- পুষ্করিণী।
গোপালমন্দিরের দক্ষিণে রাজরাজেশ্বরীভবন। রাজরাজেশ্বরী- বাটীর তিন দিকের গৃহ ভগ্ন হইয়া গিয়াছে, পূর্ব্বে এই বাটী কিরূপ সমারোহময় ছিল, ইহার ভগ্নাবস্থ। হইতে তাহার কতক পরিচয় পাওয়া যায়। কেবল উত্তর দিকে মাতার মন্দিরটিমাত্র বর্তমান আছে। এই মন্দিরমধ্যে এক বিশাল বেদীর উপর দশভুজা সিংহবাহিনী রাজরাজেশ্বরী বিরাজ করিতেছেন। যাঁহার কৃপায় রাণী ভবানী রাজরাজেশ্বরী বলিয়া প্রসিদ্ধা হইয়াছিলেন, তিনি আজিও মন্দির উজ্জ্বল করিয়া অবস্থিতা আছেন। এই রাজরাজেশ্বরীমূর্তি স্বয়ং রাণী ভবানীকর্তৃক স্থাপিত।
রাজরাজেশ্বরীর বামে জয়দুর্গা ও করুণাময়ীমূর্তি আছেন; তাঁহারা ও দশভুজা। জয়দুর্গা রাজা রামজীবনের স্থাপিত এবং করুণাময়ী রাণী ভবানীর পিত্রালয়ে অবস্থিতি করিতেন’। রাজরাজেশ্বরী, জয়স্থর্গা, করুণা- এয়ী তিন মূর্তিই পিত্তলমন্ত্রী।