০৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিলম্বে সামান্য উন্নতি চীনা কারখানা কার্যক্রমে, তবে সংকোচন অব্যাহত জন্ডিস রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি রোধে সতর্কতা কীর্তনখোলা নদী: বরিশালের প্রাণ, দুই শতকের ইতিহাস ও বর্তমান বাস্তবতা বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমোদন, প্রকারভেদ ও নিয়মভঙ্গের শাস্তি আলোচনা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন হামলার চিন্তা বাদ দিতে হবে: বিবিসিকে ইরানি মন্ত্রী প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-২২) পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের স্মৃতিকথা (পর্ব-২০৮) ধর্ষিতা বা ভুক্তভোগী কেন আদালত বা প্রশাসনের কাছে যেতে চান না? আমি দুটি শিশুসন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৩)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৭৬)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
  • 7

শ্রী নিখিলনাথ রায়

রাজরাজেশ্বরীভবনের পূর্ব্ব-দক্ষিণ দিকে মদনগোপালের মন্দির। মদনগোপালের মূর্তি দারুময়ী। মদনগোপাল রাজসাহীর প্রসিদ্ধ জমীদার রাজা উদয়নারায়ণের বিগ্রহ বলিয়া কথিত। উদয়নারায়ণের সমস্ত জমীদারী রাজা রামজীবনের হস্তে আসায় নাটোরবংশীয়েরা তাঁহার স্থাপিত মদনগোপালের। যথারীতি সেবা করিয়া থাকেন। রাজা বিশ্বনাথ বৈষ্ণবধৰ্ম্ম গ্রহণ করায় মদনগোপালের সেবার সুবন্দোবস্ত করিয়া দেন। মদনগোপালমন্দিরে মহালক্ষ্মী ও হয়গ্রীব আছেন। হয়গ্রীব কুসুমখোলার কুসুমেশ্বরের বিগ্রহ বলিয়া কথিত।
• মদনগোপালের মন্দিরের পূর্ব্ব-দক্ষিণে চারি বাঙ্গলার মন্দির। এই চারি বাঙ্গলার শিল্পকাৰ্য্য অতীব প্রশংসনীয়। বড়নগরসমাগত প্রত্যেক লোকই ইহার শিল্পকার্য্য দেখিয়া চমৎকৃত হইয়া থাকেন। ইহার প্রত্যেক ইষ্টক কারুকার্য্যময়, নানাবিধ দেবদেবীর মূর্তিখোদিত ছাঁচে মৃত্তিকাবিন্যাস করিয়া এই সকল ইষ্টক নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। এই সকল ইষ্টকে কোন স্থানে দশাবতার, কোন স্থানে দশমহাবিদ্ধা, কোথাও রামরাবণের যুদ্ধ, কোথাও শুন্তনিশুন্তের যুদ্ধ, এতদ্ভিন্ন রাধাকৃষ্ণ, অসংখ্য শিব ও দেবমূর্তি চতুদ্দিকে অঙ্কিত রহিয়াছে।
এই সকল মন্দির দেখিলে, পুরাতন শিল্পের ও তৎ- কালীন লোকদিগেরও স্বধর্ম্মভক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। মুশিদাবাদের মধ্যে ইহা একটি দর্শনীয় পদার্থ। চারিদিকে চারিখানি বাঙ্গলা বা মন্দির অবস্থিত। প্রত্যেক মন্দিরে তিনটি করিয়া শিব আছেন। বলা বাহুল্য, এই মন্দিরও রাণী ভবানীরই প্রতিষ্ঠিত।।
চারি বাঙ্গলার সম্মুখে ভাগীরথীতীরে কতিপয় অশ্বত্থ ও বট বৃক্ষ শাখা- প্রসারণ করিয়া একটি ছায়া-নিকেতনের সৃষ্টি করিয়াছে। তাহাদের ছায়াদ্বারা অর্দ্ধভাগীরথী আবৃতা। ইহাদের ছায়াতলে উপবেশন করিলে, মনে পরম শান্তভাবের অভ্যুদয় হইয়া থাকে। এইখানে বসিয়া ভারী- রখীর সলিলোচ্ছ্বাসদর্শনে ও রাণী ভবানীর পুণ্যকীর্তিস্মরণে যখন মন পবিত্র ভাবে ভরিয়া যায়, তখন দর্শকমাত্রেরই বড়নগরকে প্রকৃত তীর্থস্থান বলিয়াই বোধ হয়।
চারি বাঙ্গলার উত্তরে রাজা বিশ্বনাথের অসম্পূর্ণ হপ্তপরগণার কাছারি। রাজা সাতটি পরগণার জমিদারী কার্য্য নির্ব্বাহের জন্ম কাছারিটি নির্মাণ করিতেছিলেন; কিন্তু তাহা সম্পূর্ণ করিতে পারেন নাই। এক্ষণে তাহা অরণ্যানীসমাবৃত হইয়া ভগ্নদশায় পতিত হইয়াছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিলম্বে সামান্য উন্নতি চীনা কারখানা কার্যক্রমে, তবে সংকোচন অব্যাহত

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৭৬)

১১:০০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

রাজরাজেশ্বরীভবনের পূর্ব্ব-দক্ষিণ দিকে মদনগোপালের মন্দির। মদনগোপালের মূর্তি দারুময়ী। মদনগোপাল রাজসাহীর প্রসিদ্ধ জমীদার রাজা উদয়নারায়ণের বিগ্রহ বলিয়া কথিত। উদয়নারায়ণের সমস্ত জমীদারী রাজা রামজীবনের হস্তে আসায় নাটোরবংশীয়েরা তাঁহার স্থাপিত মদনগোপালের। যথারীতি সেবা করিয়া থাকেন। রাজা বিশ্বনাথ বৈষ্ণবধৰ্ম্ম গ্রহণ করায় মদনগোপালের সেবার সুবন্দোবস্ত করিয়া দেন। মদনগোপালমন্দিরে মহালক্ষ্মী ও হয়গ্রীব আছেন। হয়গ্রীব কুসুমখোলার কুসুমেশ্বরের বিগ্রহ বলিয়া কথিত।
• মদনগোপালের মন্দিরের পূর্ব্ব-দক্ষিণে চারি বাঙ্গলার মন্দির। এই চারি বাঙ্গলার শিল্পকাৰ্য্য অতীব প্রশংসনীয়। বড়নগরসমাগত প্রত্যেক লোকই ইহার শিল্পকার্য্য দেখিয়া চমৎকৃত হইয়া থাকেন। ইহার প্রত্যেক ইষ্টক কারুকার্য্যময়, নানাবিধ দেবদেবীর মূর্তিখোদিত ছাঁচে মৃত্তিকাবিন্যাস করিয়া এই সকল ইষ্টক নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। এই সকল ইষ্টকে কোন স্থানে দশাবতার, কোন স্থানে দশমহাবিদ্ধা, কোথাও রামরাবণের যুদ্ধ, কোথাও শুন্তনিশুন্তের যুদ্ধ, এতদ্ভিন্ন রাধাকৃষ্ণ, অসংখ্য শিব ও দেবমূর্তি চতুদ্দিকে অঙ্কিত রহিয়াছে।
এই সকল মন্দির দেখিলে, পুরাতন শিল্পের ও তৎ- কালীন লোকদিগেরও স্বধর্ম্মভক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। মুশিদাবাদের মধ্যে ইহা একটি দর্শনীয় পদার্থ। চারিদিকে চারিখানি বাঙ্গলা বা মন্দির অবস্থিত। প্রত্যেক মন্দিরে তিনটি করিয়া শিব আছেন। বলা বাহুল্য, এই মন্দিরও রাণী ভবানীরই প্রতিষ্ঠিত।।
চারি বাঙ্গলার সম্মুখে ভাগীরথীতীরে কতিপয় অশ্বত্থ ও বট বৃক্ষ শাখা- প্রসারণ করিয়া একটি ছায়া-নিকেতনের সৃষ্টি করিয়াছে। তাহাদের ছায়াদ্বারা অর্দ্ধভাগীরথী আবৃতা। ইহাদের ছায়াতলে উপবেশন করিলে, মনে পরম শান্তভাবের অভ্যুদয় হইয়া থাকে। এইখানে বসিয়া ভারী- রখীর সলিলোচ্ছ্বাসদর্শনে ও রাণী ভবানীর পুণ্যকীর্তিস্মরণে যখন মন পবিত্র ভাবে ভরিয়া যায়, তখন দর্শকমাত্রেরই বড়নগরকে প্রকৃত তীর্থস্থান বলিয়াই বোধ হয়।
চারি বাঙ্গলার উত্তরে রাজা বিশ্বনাথের অসম্পূর্ণ হপ্তপরগণার কাছারি। রাজা সাতটি পরগণার জমিদারী কার্য্য নির্ব্বাহের জন্ম কাছারিটি নির্মাণ করিতেছিলেন; কিন্তু তাহা সম্পূর্ণ করিতে পারেন নাই। এক্ষণে তাহা অরণ্যানীসমাবৃত হইয়া ভগ্নদশায় পতিত হইয়াছে।