সারাক্ষণ ডেস্ক
“সাডেন ফ্যান্টাসি” নামে পরিচিত এক চীনা পুরুষ ডৌইনে (চীনা টিকটক) এক মাসে এক মিলিয়নেরও বেশি অনুগামী সংগ্রহ করেছেন। নিজের ‘রক্ষিত পুরুষ’ হিসেবে জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে,তিনি জানান কীভাবে তার জাপানি স্ত্রী তাকে আর্থিকভাবে সমর্থন করেন,আর তিনি তার স্ত্রীকে মানসিকভাবে এবং ঘরের কাজে সহায়তা করে থাকেন।
সাডেন ফ্যান্টাসির অনন্য প্রেমের গল্প
সাডেন ফ্যান্টাসি, বেইজিংয়ের একজন সাধারণ ব্যক্তি, গত আট বছর ধরে জাপানে বসবাস করছেন। তার স্ত্রী, ফেংহুয়া, একজন উচ্চশিক্ষিত নারী এবং জাপানের ধনী পরিবারের মেয়ে। প্রথমে, আর্থিক সমস্যার কারণে তিনি ফেংহুয়ার সাথে সম্পর্ক গড়তে দ্বিধাবোধ করেন। তবে, জীবনের এক কঠিন সময়ে ফেংহুয়া তাকে খাবার এবং এমনকি তার শিক্ষার খরচও বহন করে সমর্থন দেন। দুই বছর ছয় মাস ডেট করার পর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
জাপানের ঐতিহ্যবাহী সমাজে পুরুষরাই সাধারণত উপার্জনকারী হয়, যেখানে নারীরা গৃহস্থালির দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সাডেন ফ্যান্টাসি এই ধারাকে পুরোপুরি উল্টে দিয়েছেন এবং এ বছরের শুরুতে ‘রক্ষিত পুরুষ’ হিসেবে নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তার স্ত্রীর সমর্থনে, তিনি তার চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন এবং এখন দিনের অধিকাংশ সময় ভিডিও গেম খেলে কাটান, আর তার স্ত্রী সমস্ত পরিবারের খরচ বহন করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তার জনপ্রিয়তার উত্থান
সাডেন ফ্যান্টাসির জনপ্রিয়তার কারণ হলো, তিনি খোলামেলা ভাবে ‘রক্ষিত পুরুষ’ হিসেবে জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। তার একটি ভাইরাল ভিডিওতে তিনি শেয়ার করেন কীভাবে তিনি তার স্ত্রীকে সকালবেলা আরামদায়ক রাখতে বিছানায় থাকেন, যাতে তার স্ত্রীর ওপর তাড়াতাড়ি উঠার চাপ না থাকে। তার স্ত্রী তার দৈনন্দিন খরচের জন্য ২ লাখ ৬০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১,৭৪০ মার্কিন ডলার) বরাদ্দ রেখেছেন, যা তাদের বিশেষ সম্পর্কের আরও একটি উদাহরণ।
তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, একটি সত্যিকারের সম্পর্ক শুধু দায়িত্ব পালন করা নয়—এটি একে অপরের জীবনের উন্নতি করা। “মানুষের ইচ্ছাশক্তি সীমিত। একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে উভয়ের জন্য সমানভাবে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হয়। আমি যা করি তা শুধু তার জন্য নয়, আমার নিজের জন্যও,” সাডেন ফ্যান্টাসি শেয়ার করেন।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
সাডেন ফ্যান্টাসির ভিডিওগুলো প্রশংসা এবং কৌতূহল উভয়ই উস্কে দিয়েছে। অনেক দর্শক তার মানসিক বুদ্ধিমত্তা এবং তার স্ত্রীর প্রতি মানসিক সমর্থনের প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছেন। মন্তব্যগুলো ছিল হাস্যকর পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে গভীর শ্রদ্ধার প্রকাশ পর্যন্ত।
একজন দর্শক উল্লেখ করেন, “এটা শুধু রক্ষিত পুরুষ হওয়ার বিষয় নয়; এটা একে অপরকে সম্মান ও সমর্থন করার বিষয়।” অন্য একজন মজারভাবে যোগ করেন, “এটা যেন এক ব্যক্তির খাবারের জন্য টাকা দেওয়া, কিন্তু বিনিময়ে একটি ‘ন্যানি’ এবং একজন সঙ্গী পাওয়া—আসলে মন্দ না!”সাডেন ফ্যান্টাসির গল্পটি ঐতিহ্যগত লিঙ্গভূমিকার ধারণা চ্যালেঞ্জ করেছে এবং ভালোবাসা, সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সম্মান নিয়ে মূল্যবান শিক্ষা দিয়েছে।