০১:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
দক্ষিণ ব্রাজিলে ভয়াবহ টর্নেডোতে অন্তত ৬ জন নিহত, আহত শতাধিক ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন ‘ফুং-ওয়ং’-এর আঘাত: কালমাগি’র ধ্বংসের পর নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত মার্ক উড আশ্বাস দিলেন, অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ার কটাক্ষ সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসী ইংল্যান্ড দল তাপ থেরাপিতে রক্তচাপ কমানোর আশার আলো: নতুন গবেষণায় চমকপ্রদ ফলাফল জাকার্তার মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: আতঙ্কে শহর, আহত ৫৫ জন গাজায় বর্জ্য সংকট: দূষণে ডুবে স্বাস্থ্য বিপর্যয় তানজানিয়ায় রক্তে রাঙানো দমন-পীড়ন: এক ভয়াবহ নতুন বাস্তবতা ভারতের অদ্ভুত স্থিতিশীলতা একক জীবন: বৈশ্বিক এককতা বৃদ্ধির কারণ এবং প্রভাব

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২০৪)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
  • 60
শ্রী নিখিলনাথ রায়

ল সাহেব তৎকালে বিহারে ছিলেন। বলা বাহুল্য, তাঁহারা সকলেই বাদশাহের পক্ষ হইয়া, ইংরেজদিগকে দমন করিতে চেষ্টা করেন। সেই পত্র নন্দকুমারের লিখিত বিবেচনা করিয়া, ইংরেজেরা পুনর্ব্বার তাঁহাকে প্রহরিবেষ্টিত অবস্থায় রাখেন। এইরূপ অবস্থায় নন্দকুমারকে প্রায় এক বৎসর কাটাইতে হইয়াছিল। তিনি বন্দী-অবস্থায় থাকিয়া গবর্ণর ভান্সিটার্টকে লিখিয়া পাঠান যে, আমার শত্রুপক্ষীয়েরা মিথ্যা অপবাদ দিয়া আমার এই রূপ অবস্থা করিয়াছে। যদি আমাকে বিশ্বাস না করেন, তাহা হইলে আমাকে নিষ্কৃতি প্রদান করুন, আমি সপরিবারে অন্যত্র বাস করিতেছি। কিন্তু গবর্ণর তাঁহার আবেদন গ্রাহ্য করেন নাই।

অতঃপর ইংরেজদিগের সহিত মীর কাশেমের ঘোরতর বিবাদ উপস্থিত হয় এবং ইংরেজেরা পুনর্ব্বার মীর জাফরকে নবাবী প্রদান করিতে ইচ্ছা করেন। মীর জাফর এবার নন্দকুমারকে ছাড়িতে চাহিলেন না; তিনি নন্দকুমারকে নিজের দেওয়ান করিবার জন্য কাউন্সিলের সভ্যদিগকে বারংবার পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন। সভ্যগণ প্রথমে কিছুতেই স্বীকৃত হন নাই; পরে মীর জাফর খাঁর অত্যন্ত অনুরোধে তাঁহারা নন্দ- কুমারকে মীর জাফরের দেওয়ান হইতে অনুমতি দিলেন। মীর জাফর ত।

হাকে খালসার দেওয়ানী পদে নিযুক্ত করিয়া, তাঁহাকে সঙ্গে লইয়া মীর কাশেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিলেন। পরে বাদশাহের সহিত তাঁহাদের সন্ধি স্থাপিত হইলে, নবাব তাঁহাকে বিশেষ অনুরোধ করিয়া, নন্দকুমারকে ‘মহারাজ’ উপাধি প্রদান করাইলেন এবং অবশেষে নিজেও সে উপাধি দৃঢ় করিয়া দিলেন। তদবধি দেওয়ান নন্দকুমার মহারাজ নন্দকুমার নামে অভিহিত হইয়া আসিতেছেন। পূর্ব্বে বলা হইয়াছে যে, নন্দকুমার ইংরেজদিগের হস্ত হইতে মীর জাফরকে উদ্ধার করিতে কৃতসঙ্কল্প হন।

মীর কাশেমকে পদচ্যুত করিয়া পুনর্ব্বার মীর জাফরকে নবাবী দেওয়ায়, ইংরেজদিগের প্রতি তাঁহার ঘৃণা আরও বর্দ্ধিত হয় এবং তাঁহাদের চাতুরী তিনি আরও স্পষ্টরূপে বুঝিতে পারেন। তিনি ক্রমাগত ইংরেজক্ষমতাহ্রাসের উপায় দেখিতে লাগিলেন। তাঁহারা বিহারে গমন করিলে, মীর কাশেম ইংরেজদিগের হস্তে সম্পূর্ণরূপে পরাদ্দিত হইয়া, বাদশাহ। শাহ আলম ও অযোধ্যার নবাব-উজীর সৃজা উদ্দৌলার শরণাপন্ন হন। কাশীর রাজা বলবন্ত সিংহ, সুজা উদ্দৌলার পক্ষীয় একজন প্রধান সেনাপতি ছিলেন। এই বলবন্ত সিংহ কাশীর উৎপীড়িত রাজা চেৎসিংহের পিতা।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

দক্ষিণ ব্রাজিলে ভয়াবহ টর্নেডোতে অন্তত ৬ জন নিহত, আহত শতাধিক

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২০৪)

১১:০০:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
শ্রী নিখিলনাথ রায়

ল সাহেব তৎকালে বিহারে ছিলেন। বলা বাহুল্য, তাঁহারা সকলেই বাদশাহের পক্ষ হইয়া, ইংরেজদিগকে দমন করিতে চেষ্টা করেন। সেই পত্র নন্দকুমারের লিখিত বিবেচনা করিয়া, ইংরেজেরা পুনর্ব্বার তাঁহাকে প্রহরিবেষ্টিত অবস্থায় রাখেন। এইরূপ অবস্থায় নন্দকুমারকে প্রায় এক বৎসর কাটাইতে হইয়াছিল। তিনি বন্দী-অবস্থায় থাকিয়া গবর্ণর ভান্সিটার্টকে লিখিয়া পাঠান যে, আমার শত্রুপক্ষীয়েরা মিথ্যা অপবাদ দিয়া আমার এই রূপ অবস্থা করিয়াছে। যদি আমাকে বিশ্বাস না করেন, তাহা হইলে আমাকে নিষ্কৃতি প্রদান করুন, আমি সপরিবারে অন্যত্র বাস করিতেছি। কিন্তু গবর্ণর তাঁহার আবেদন গ্রাহ্য করেন নাই।

অতঃপর ইংরেজদিগের সহিত মীর কাশেমের ঘোরতর বিবাদ উপস্থিত হয় এবং ইংরেজেরা পুনর্ব্বার মীর জাফরকে নবাবী প্রদান করিতে ইচ্ছা করেন। মীর জাফর এবার নন্দকুমারকে ছাড়িতে চাহিলেন না; তিনি নন্দকুমারকে নিজের দেওয়ান করিবার জন্য কাউন্সিলের সভ্যদিগকে বারংবার পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন। সভ্যগণ প্রথমে কিছুতেই স্বীকৃত হন নাই; পরে মীর জাফর খাঁর অত্যন্ত অনুরোধে তাঁহারা নন্দ- কুমারকে মীর জাফরের দেওয়ান হইতে অনুমতি দিলেন। মীর জাফর ত।

হাকে খালসার দেওয়ানী পদে নিযুক্ত করিয়া, তাঁহাকে সঙ্গে লইয়া মীর কাশেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিলেন। পরে বাদশাহের সহিত তাঁহাদের সন্ধি স্থাপিত হইলে, নবাব তাঁহাকে বিশেষ অনুরোধ করিয়া, নন্দকুমারকে ‘মহারাজ’ উপাধি প্রদান করাইলেন এবং অবশেষে নিজেও সে উপাধি দৃঢ় করিয়া দিলেন। তদবধি দেওয়ান নন্দকুমার মহারাজ নন্দকুমার নামে অভিহিত হইয়া আসিতেছেন। পূর্ব্বে বলা হইয়াছে যে, নন্দকুমার ইংরেজদিগের হস্ত হইতে মীর জাফরকে উদ্ধার করিতে কৃতসঙ্কল্প হন।

মীর কাশেমকে পদচ্যুত করিয়া পুনর্ব্বার মীর জাফরকে নবাবী দেওয়ায়, ইংরেজদিগের প্রতি তাঁহার ঘৃণা আরও বর্দ্ধিত হয় এবং তাঁহাদের চাতুরী তিনি আরও স্পষ্টরূপে বুঝিতে পারেন। তিনি ক্রমাগত ইংরেজক্ষমতাহ্রাসের উপায় দেখিতে লাগিলেন। তাঁহারা বিহারে গমন করিলে, মীর কাশেম ইংরেজদিগের হস্তে সম্পূর্ণরূপে পরাদ্দিত হইয়া, বাদশাহ। শাহ আলম ও অযোধ্যার নবাব-উজীর সৃজা উদ্দৌলার শরণাপন্ন হন। কাশীর রাজা বলবন্ত সিংহ, সুজা উদ্দৌলার পক্ষীয় একজন প্রধান সেনাপতি ছিলেন। এই বলবন্ত সিংহ কাশীর উৎপীড়িত রাজা চেৎসিংহের পিতা।