০৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিলম্বে সামান্য উন্নতি চীনা কারখানা কার্যক্রমে, তবে সংকোচন অব্যাহত জন্ডিস রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি রোধে সতর্কতা কীর্তনখোলা নদী: বরিশালের প্রাণ, দুই শতকের ইতিহাস ও বর্তমান বাস্তবতা বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমোদন, প্রকারভেদ ও নিয়মভঙ্গের শাস্তি আলোচনা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন হামলার চিন্তা বাদ দিতে হবে: বিবিসিকে ইরানি মন্ত্রী প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-২২) পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের স্মৃতিকথা (পর্ব-২০৮) ধর্ষিতা বা ভুক্তভোগী কেন আদালত বা প্রশাসনের কাছে যেতে চান না? আমি দুটি শিশুসন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ২৩)

ইশকুল (পর্ব-৫৭)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 4

আর্কাদি গাইদার

সপ্তম পরিচ্ছেদ

‘আমার যাবার সময় হয়েছে,’ বাবা একটু চঞ্চল হয়ে বললেন। ‘পৌঁছতে দেরি না করাই ভালো।’

‘কিন্তু বাপি, ওরা বোধহয় অনেক রাত্তির পর্যন্ত ওখানে থাকবে। আজ শনিবার কিনা, তাই।’

বাবা ভুরু কোঁচকালেন।

‘আচ্ছা জালাতন তো। বেড়া ডিঙিয়ে কিংবা কারো বাগানের মধ্যে দিয়ে অন্য কোনো দিক থেকে বেরোনো যায় না? একটু মাথা খাটাও দেখি, বরিস। তোমার তো এখানকার সব অন্ধিসন্ধি জানা থাকার কথা।’

‘অন্য কোনো দিক দিয়ে বেরোনো সম্ভব না,’ আমি বললুম। ‘বাঁয়ে আগ্লাকভদের পাঁচিলটা ভীষণ উচু। তার ওপর, পাঁচিলের মাথায় আবার পেরেক পোঁতা। ডানদিকের বাড়ির বাগান দিয়ে অবিশ্যি বেরনো যায়। কিন্তু ও-বাগানে একটা সাংঘাতিক কুকুর আছে। একেবারে নেকড়ে বাঘের মতো। শোনো, আমি বলি কী, আমি তোমায় পথ দেখিয়ে পুকুরঘাটে নিয়ে যাই, কেমন? ওখানে আমার একখানা নৌকো আছে। আমি তোমায় নৌকো করে সব বাড়ির পেছন দিক দিয়ে সোজা একেবারে নালায় নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দেব। এখন তো অন্ধকার, জায়গাটা একদম ফাঁকা হয়ে গেছে এতক্ষণে। কেউ আমাদের দেখতে পাবে না।’

বাবার মতো ভারি ওজনের লোক নৌকোয় উঠতেই নৌকোয় জল উঠে পড়ল। আমাদের বুটজুতো গেল ভিজে। না-নড়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন বাবা। কালো জল ভেদ করে নৌকোটা নিঃশব্দে এগিয়ে চলল। আমার হাতের লগি প্রায়ই পুকুরের তলার কাদায় পাঁকে বেধে যেতে লাগল। প্রত্যেক বারই লগি টেনে তুলতে বেশ বেগ পেতে হল।

দু-দুবার পাড়ে নৌকো ভেড়ানোর চেষ্টা করলুম। কিন্তু খোয়াইয়ের ওই জায়গায় পুকুরের পাড়টা নিচু আর ভিজে থাকায় সুবিধে হল না। তাই আরও খানিকটা ডান দিকে এগিয়ে গিয়ে পুকুরের একেবারে শেষপ্রান্তের বাগানটায় নৌকো বাঁধলুম।

বাগান ছিল এককালে, এখন পোড়ো জমি। পাহারাও নেই, বেড়াও আগাগোড়া ভাঙা।

সামনেই বেড়ায় যে ফাঁক ছিল সেই পর্যন্ত পৌঁছে দিলুম বাবাকে। ওই ফাঁক দিয়ে নালা ছাড়িয়ে চলে যাওয়া সম্ভব। ওইখান থেকেই বাবার কাছে বিদায় নিলুম।

আরও মিনিট কয়েক অপেক্ষা করলুম ওখানে। বাবার ভারি পায়ের নিচে ডালপালা ভাঙার শব্দ আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেলে পর তবে ফিরলুম।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিলম্বে সামান্য উন্নতি চীনা কারখানা কার্যক্রমে, তবে সংকোচন অব্যাহত

ইশকুল (পর্ব-৫৭)

০৮:০০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

সপ্তম পরিচ্ছেদ

‘আমার যাবার সময় হয়েছে,’ বাবা একটু চঞ্চল হয়ে বললেন। ‘পৌঁছতে দেরি না করাই ভালো।’

‘কিন্তু বাপি, ওরা বোধহয় অনেক রাত্তির পর্যন্ত ওখানে থাকবে। আজ শনিবার কিনা, তাই।’

বাবা ভুরু কোঁচকালেন।

‘আচ্ছা জালাতন তো। বেড়া ডিঙিয়ে কিংবা কারো বাগানের মধ্যে দিয়ে অন্য কোনো দিক থেকে বেরোনো যায় না? একটু মাথা খাটাও দেখি, বরিস। তোমার তো এখানকার সব অন্ধিসন্ধি জানা থাকার কথা।’

‘অন্য কোনো দিক দিয়ে বেরোনো সম্ভব না,’ আমি বললুম। ‘বাঁয়ে আগ্লাকভদের পাঁচিলটা ভীষণ উচু। তার ওপর, পাঁচিলের মাথায় আবার পেরেক পোঁতা। ডানদিকের বাড়ির বাগান দিয়ে অবিশ্যি বেরনো যায়। কিন্তু ও-বাগানে একটা সাংঘাতিক কুকুর আছে। একেবারে নেকড়ে বাঘের মতো। শোনো, আমি বলি কী, আমি তোমায় পথ দেখিয়ে পুকুরঘাটে নিয়ে যাই, কেমন? ওখানে আমার একখানা নৌকো আছে। আমি তোমায় নৌকো করে সব বাড়ির পেছন দিক দিয়ে সোজা একেবারে নালায় নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দেব। এখন তো অন্ধকার, জায়গাটা একদম ফাঁকা হয়ে গেছে এতক্ষণে। কেউ আমাদের দেখতে পাবে না।’

বাবার মতো ভারি ওজনের লোক নৌকোয় উঠতেই নৌকোয় জল উঠে পড়ল। আমাদের বুটজুতো গেল ভিজে। না-নড়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন বাবা। কালো জল ভেদ করে নৌকোটা নিঃশব্দে এগিয়ে চলল। আমার হাতের লগি প্রায়ই পুকুরের তলার কাদায় পাঁকে বেধে যেতে লাগল। প্রত্যেক বারই লগি টেনে তুলতে বেশ বেগ পেতে হল।

দু-দুবার পাড়ে নৌকো ভেড়ানোর চেষ্টা করলুম। কিন্তু খোয়াইয়ের ওই জায়গায় পুকুরের পাড়টা নিচু আর ভিজে থাকায় সুবিধে হল না। তাই আরও খানিকটা ডান দিকে এগিয়ে গিয়ে পুকুরের একেবারে শেষপ্রান্তের বাগানটায় নৌকো বাঁধলুম।

বাগান ছিল এককালে, এখন পোড়ো জমি। পাহারাও নেই, বেড়াও আগাগোড়া ভাঙা।

সামনেই বেড়ায় যে ফাঁক ছিল সেই পর্যন্ত পৌঁছে দিলুম বাবাকে। ওই ফাঁক দিয়ে নালা ছাড়িয়ে চলে যাওয়া সম্ভব। ওইখান থেকেই বাবার কাছে বিদায় নিলুম।

আরও মিনিট কয়েক অপেক্ষা করলুম ওখানে। বাবার ভারি পায়ের নিচে ডালপালা ভাঙার শব্দ আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেলে পর তবে ফিরলুম।