ম্যাকসিম গোর্কী
তেইশ
সকালে ফিওডোসিয়া থেকে টলস্টয়ের কাছে কয়েকজন “স্টান্ডিস্ট”* এসেছিল। তাই আজ সমস্তদিন ধ’রে উল্লাসের সংগে তিনি কৃষকদের সম্বন্ধে আলাপ করেন।
খাবার সময় বললেন, “দুজন চাষা বেশ সবল আর মাংসল ছিল; তাদের একজন বললো: ‘দেখো আমরা খেতে এলাম, কিন্তু আমাদের তো নেমন্তন্ন করে নি।’ অপর জন বললো ‘যাই হোক ভগবানের কৃপায় মার না খেয়েই বিদায় হ’তে পারবো।’ ব’লেই তিনি শিশুর মতো হো হো ক’রে হেসে উঠলেন, তাঁর সর্বাংগ হাসির উচ্ছ্বাসে কাঁপতে লাগলো।
খাবার পর চত্বরে ব’সে বললেন, “আমরা শীঘ্রই জনসাধারণের ভাষা বুঝতে সম্পূর্ণ অশক্ত হ’য়ে পড়বো। এখন আমরা বলি: ‘প্রগতির সূত্র’, ‘ইতিহাসে ব্যষ্টির ভূমিকা’, ‘বিজ্ঞানের বিবর্তন’, আর চাষারা বলে কিনা, -‘থলেয় প্যাঁচা লুকানো থাকে না’। ফলে সূত্রই বলো, ইতিহাসই বলো, বিজ্ঞানই বলো, সব কিছুই করুণ এবং হাস্যাস্পদ হ’য়ে উঠছে। কারণ, জন-সাধারণের কাছে এ সব অবোধ্য এবং অনাবশ্যক। কিন্তু কৃষকরা আমাদের অপেক্ষা অধিক শক্তিমান; জীবনকে তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি জোরে জড়িয়ে থাকতে পারে। সুতরাং আতজুর উপজাতির যা হ’য়ে ছিল, আমাদের পক্ষেও হ’তে পারে তা।
আতজুর জাতি সম্পর্কে একজন পণ্ডিত বলেন: আতজুর জাতির সকলেই মারা গেছে। মাত্র এখানে একটা কাকাতুয়া আছে, সে আতজুর জাতির ভাষার দু চারটা শব্দ এখনো বলতে পারে।”
চব্বিশ
“দেহের সম্বন্ধে পুরুষদের চেয়ে মেয়েরা অধিক অকপট। কিন্তু মনের বেলায় তারা মিছে কথা বলে। আর মেয়েরা যখন মিছে কথা বলে, তখন তারা নিজের কথায় বিশ্বাস করে না। কিন্তু রুশো, তিনি মিছে কথা ব’লে ছিলেন, এবং সেই সংগে তিনি বিশ্বাসও করেছিলেন সেই মিথ্যে কথাগুলোকে।”