০৮:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে সরকারের স্বাগত, পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস গাজীপুরে জাসাস নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা টাকা-ডলার বিনিময় হারে বাড়ছে ফাঁক, বৈদেশিক প্রতিযোগিতায় ঝুঁকির সতর্কতা মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী আটক, কারাগারে প্রেরণ ঋণখেলাপির অভিযোগে নির্বাচনে অযোগ্য মান্না, রিট খারিজ হাইকোর্টে

পপি চাষে তালেবান নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

  • Sarakhon Report
  • ১১:০৩:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 79

আফিম চাষ বন্ধ হলেও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক চাষীই বিপদে পড়েছেন

পপি চাষে নিষেধাজ্ঞার ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে আফগান গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনে। তালেবান সরকার তাদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহায়তার জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।

চলতি সপ্তাহে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আফিম চাষের কারণে অন্তত ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তালেবান প্রশাসন।

ধর্মীয় কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই প্রদেশটিতে ২০২২ থেকে আফিমের চাষ নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক প্রতিরোধ অধিদপ্তরের ডেপুটি মিনিস্টার (প্রতিমন্ত্রী) আব্দুল হক আখুন্দ হামকার ডয়চে ভেলেকে জানান, “তাদের শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আফিমের উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে চান।”

আফিম থেকেই মূলত নেশাদ্রব্য হেরোইন ও মরফিন তৈরি করা হয়। ২০২২ এ নিষেধাজ্ঞার আগে বিশ্বে সর্ববৃহৎ আফিম উৎপাদনকারী দেশ ছিল আফগানিস্তান।

তবে আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদনে বাধা দেয়া ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেখানকার কৃষকরা। ২০ বছর ধরে দক্ষিণ আফগানিস্তানে আফিম চাষ করা কৃষক আসাদুল্লাহ বলেন, ২০ বছর একটি ফসল চাষ করে এখন নতুন কিছু করা বেশ কঠিন। এখন তাদের জীবনযাপন করতেই হিমশিম করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের জমিগুলো আগের মতো আর উর্বর নেই। যদিও কোরআনে আফিম চাষে বারণ করা হয়েছে, আমরা এটি চাষ করে অন্তত বেঁচে ছিলাম এবং আমাদের দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা করেছিল।”

অনেক চাষী ইতিমধ্যে অন্য ফসল চাষের চেষ্টা করলেও তাদের আয় বহুলাংশে কমে গেছে। আসাদুল্লাহ বলেন, “আমরা আফিম চাষ করে আগে যা আয় করতাম, এখন তার সিকিভাগ মাত্র পারছি।”

আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ সরাসরি কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। অন্যান্য ফসল চাষের চেয়ে আফিম চাষ অনেক সহজ ও লাভজনক। এমনকি খরার সময়েও এটি চাষ করা যায়। যে কারণে আফিম চাষকেই তারা নিরাপদ আয়ের উৎস হিসেবে মনে করেন।

গ্রামাঞ্চলে সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মানুষজন, বিশেষ করে বেকার যুবক ও নারীরা আফিম চাষ থেকে লাভবান হতেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে এ মুহূর্তে তারা আবারও বেকার হয়ে পরেছেন।

তবে পপি চাষ আবারও বাড়তে শুরু করেছে আফগানিস্তানে। তালেবান সরকার ২০২২ এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে প্রথম আফিম চাষ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। আব্দুল হক আখুন্দ হামকার ডয়চে ভেলেকে জানান, “কৃষকদের সহায়তা করার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। এ মুহূর্তে আমরা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আছি। মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।”

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে ২০২৪ সালে ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আফিম চাষ করা হয়েছে।

ডিডাব্লিউ ডটকম

জনপ্রিয় সংবাদ

অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত

পপি চাষে তালেবান নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

১১:০৩:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

পপি চাষে নিষেধাজ্ঞার ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে আফগান গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনে। তালেবান সরকার তাদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহায়তার জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।

চলতি সপ্তাহে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আফিম চাষের কারণে অন্তত ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তালেবান প্রশাসন।

ধর্মীয় কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই প্রদেশটিতে ২০২২ থেকে আফিমের চাষ নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক প্রতিরোধ অধিদপ্তরের ডেপুটি মিনিস্টার (প্রতিমন্ত্রী) আব্দুল হক আখুন্দ হামকার ডয়চে ভেলেকে জানান, “তাদের শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আফিমের উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে চান।”

আফিম থেকেই মূলত নেশাদ্রব্য হেরোইন ও মরফিন তৈরি করা হয়। ২০২২ এ নিষেধাজ্ঞার আগে বিশ্বে সর্ববৃহৎ আফিম উৎপাদনকারী দেশ ছিল আফগানিস্তান।

তবে আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদনে বাধা দেয়া ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেখানকার কৃষকরা। ২০ বছর ধরে দক্ষিণ আফগানিস্তানে আফিম চাষ করা কৃষক আসাদুল্লাহ বলেন, ২০ বছর একটি ফসল চাষ করে এখন নতুন কিছু করা বেশ কঠিন। এখন তাদের জীবনযাপন করতেই হিমশিম করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের জমিগুলো আগের মতো আর উর্বর নেই। যদিও কোরআনে আফিম চাষে বারণ করা হয়েছে, আমরা এটি চাষ করে অন্তত বেঁচে ছিলাম এবং আমাদের দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা করেছিল।”

অনেক চাষী ইতিমধ্যে অন্য ফসল চাষের চেষ্টা করলেও তাদের আয় বহুলাংশে কমে গেছে। আসাদুল্লাহ বলেন, “আমরা আফিম চাষ করে আগে যা আয় করতাম, এখন তার সিকিভাগ মাত্র পারছি।”

আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ সরাসরি কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। অন্যান্য ফসল চাষের চেয়ে আফিম চাষ অনেক সহজ ও লাভজনক। এমনকি খরার সময়েও এটি চাষ করা যায়। যে কারণে আফিম চাষকেই তারা নিরাপদ আয়ের উৎস হিসেবে মনে করেন।

গ্রামাঞ্চলে সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মানুষজন, বিশেষ করে বেকার যুবক ও নারীরা আফিম চাষ থেকে লাভবান হতেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে এ মুহূর্তে তারা আবারও বেকার হয়ে পরেছেন।

তবে পপি চাষ আবারও বাড়তে শুরু করেছে আফগানিস্তানে। তালেবান সরকার ২০২২ এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে প্রথম আফিম চাষ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। আব্দুল হক আখুন্দ হামকার ডয়চে ভেলেকে জানান, “কৃষকদের সহায়তা করার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। এ মুহূর্তে আমরা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আছি। মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।”

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে ২০২৪ সালে ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আফিম চাষ করা হয়েছে।

ডিডাব্লিউ ডটকম