০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
গ্র্যামির ডাবল মনোনয়নে কেটসআইয়ের জয়যাত্রা — বৈচিত্র্য, প্রতিভা ও সংস্কৃতির গ্লোবাল উদযাপন যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন সমাপ্তির সম্ভাবনায় ডলার স্থিতিশীল, অস্ট্রেলীয় ডলার শক্তিশালী, ইয়েন দুর্বল প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২১) হলিউডের ‘হাইল্যান্ডার’ রিবুটে যোগ দিলেন কোরিয়ান তারকা জিওন জং-সিও অক্ষরের রহস্য: কেন ‘Q’-এর প্রয়োজন ‘U’ — ভাষার আত্মার এক বিস্ময়কর ইতিহাস নাসার চন্দ্র মিশনের গতি ফেরাতে ‘সবকিছু করবে’ ব্লু অরিজিন” ট্রাম্প বনাম সুপ্রিম কোর্ট: শুল্ক সংকটে নতুন আইনি লড়াই সম্ভাব্য বাজার ধসের পূর্বাভাস: ওয়াল স্ট্রিটও জানে না কখন আসবে পতন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫২) শেয়ারবাজারে ধস অব্যাহত: ডিএসই-তে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৩৫)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 61

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

টলস্টয়ের ওখান থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় আন্টন শেখভ আমাকে বলেছিলেন: “আমি বিশ্বাস করি না, উনি কখনো সুখী ছিলেন না।” কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, তিনি সুখী ছিলেন না। তিনি পরকে দেখাবার জন্যে বেঁচেছিলেন, এ কথাটা অবশ্য সত্যি নয়। তবে যে বস্তুতে তাঁর নিজের কোনো প্রয়োজন থাকতো না, সেই বস্তুকেই তিনি জনসাধারণকে বিলিয়ে দিতেন, যেন তারা সবাই ভিক্ষুক। তাদেরকে বাধ্য করতে তিনি ভালো বাসতেন।

তাদের তিনি বাধ্য করতে চাইতেন পড়ার জন্যে, বেড়াবার জন্যে, নিরামিষাশী হবার জন্যে, কৃষকদের ভালোবাসার জন্যে, এবং লিও টলস্টয়ের যুক্তি-ধর্মমূলক চিন্তাগুলির অভ্রান্ততা সম্পর্কে বিশ্বাস করার জন্যে। জনসাধারণকে এমন কিছু দিতে হবে, যাতে তারা হয় খুশী হবে, নয় কৌতুক পাবে। তারপর ঐ নিয়েই তারা হবে বিদায় এবং তাঁকে থাকতে দেবে শান্তিতে, তাঁর সুঅভ্যস্ত যন্ত্রনা-বিলাসে, আবার কখনো বা, “পরমতম” সংক্রান্ত ‘সমস্যার অতল গহ্বরের মুখে এবং আরামপ্রদ একাকিত্বে।

আব্বাকাম এবং সম্ভবত টিখন জাতস্কি ছাড়া, আর সমস্ত রুশ ধর্ম-প্রচারকেরাই ছিলেন নির্বিকার নিরাসক্ত মানুষ; কারণ, কোনোপ্রকার সক্রিয় জীবন্ত আদর্শ তাঁদের ছিল না। আমি যখন আমার “দি লোয়ার ডেপ্থস”এর লিউকা লিখছিলাম, তখন সেখানে এমনি একটি বৃদ্ধের বর্ণনা করতে চেয়েছিলাম: “সকল প্রকার সমাধান” সম্পর্কেই তাঁর সচেতন কৌতূহল, কিন্তু জনসাধারণ সম্পর্কে নয়; যখন জনসাধারণের সংগে তাঁর সংস্পর্শ অপরিহার্য হয়ে ওঠে, তখন তিনি তাঁদের দেন সান্ত্বনা।

এবং এই সান্ত্বনা দেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য, যাতে তারা তাঁকে একটু শান্তিতে থাকতে দেয়। এই ধরণের মানুষ যাঁরা, তাঁদের সমস্ত দর্শন, সমস্ত প্রচারই হোলো ভিখারীকে দেওয়া মুষ্টিভিক্ষা, গোপন আচ্ছাদিত বিতৃষ্ণা মাত্র। এবং তাঁদের প্রচারের করুণ নিঃস্ব কথাগুলির মধ্যে কেবলই ধ্বনিত হ’তে থাকে: “ভাগো! ভগবানকে কিম্বা প্রতিবেশীকে ভালোবাসো! কিন্তু ভাগো!

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্র্যামির ডাবল মনোনয়নে কেটসআইয়ের জয়যাত্রা — বৈচিত্র্য, প্রতিভা ও সংস্কৃতির গ্লোবাল উদযাপন

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৩৫)

০৩:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

টলস্টয়ের ওখান থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় আন্টন শেখভ আমাকে বলেছিলেন: “আমি বিশ্বাস করি না, উনি কখনো সুখী ছিলেন না।” কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, তিনি সুখী ছিলেন না। তিনি পরকে দেখাবার জন্যে বেঁচেছিলেন, এ কথাটা অবশ্য সত্যি নয়। তবে যে বস্তুতে তাঁর নিজের কোনো প্রয়োজন থাকতো না, সেই বস্তুকেই তিনি জনসাধারণকে বিলিয়ে দিতেন, যেন তারা সবাই ভিক্ষুক। তাদেরকে বাধ্য করতে তিনি ভালো বাসতেন।

তাদের তিনি বাধ্য করতে চাইতেন পড়ার জন্যে, বেড়াবার জন্যে, নিরামিষাশী হবার জন্যে, কৃষকদের ভালোবাসার জন্যে, এবং লিও টলস্টয়ের যুক্তি-ধর্মমূলক চিন্তাগুলির অভ্রান্ততা সম্পর্কে বিশ্বাস করার জন্যে। জনসাধারণকে এমন কিছু দিতে হবে, যাতে তারা হয় খুশী হবে, নয় কৌতুক পাবে। তারপর ঐ নিয়েই তারা হবে বিদায় এবং তাঁকে থাকতে দেবে শান্তিতে, তাঁর সুঅভ্যস্ত যন্ত্রনা-বিলাসে, আবার কখনো বা, “পরমতম” সংক্রান্ত ‘সমস্যার অতল গহ্বরের মুখে এবং আরামপ্রদ একাকিত্বে।

আব্বাকাম এবং সম্ভবত টিখন জাতস্কি ছাড়া, আর সমস্ত রুশ ধর্ম-প্রচারকেরাই ছিলেন নির্বিকার নিরাসক্ত মানুষ; কারণ, কোনোপ্রকার সক্রিয় জীবন্ত আদর্শ তাঁদের ছিল না। আমি যখন আমার “দি লোয়ার ডেপ্থস”এর লিউকা লিখছিলাম, তখন সেখানে এমনি একটি বৃদ্ধের বর্ণনা করতে চেয়েছিলাম: “সকল প্রকার সমাধান” সম্পর্কেই তাঁর সচেতন কৌতূহল, কিন্তু জনসাধারণ সম্পর্কে নয়; যখন জনসাধারণের সংগে তাঁর সংস্পর্শ অপরিহার্য হয়ে ওঠে, তখন তিনি তাঁদের দেন সান্ত্বনা।

এবং এই সান্ত্বনা দেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য, যাতে তারা তাঁকে একটু শান্তিতে থাকতে দেয়। এই ধরণের মানুষ যাঁরা, তাঁদের সমস্ত দর্শন, সমস্ত প্রচারই হোলো ভিখারীকে দেওয়া মুষ্টিভিক্ষা, গোপন আচ্ছাদিত বিতৃষ্ণা মাত্র। এবং তাঁদের প্রচারের করুণ নিঃস্ব কথাগুলির মধ্যে কেবলই ধ্বনিত হ’তে থাকে: “ভাগো! ভগবানকে কিম্বা প্রতিবেশীকে ভালোবাসো! কিন্তু ভাগো!