আর্কাদি গাইদার
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
নানা দিক থেকে চওড়া চওড়া সব রাস্তা বেয়ে আশপাশের গাঁ থেকে চাষীরা দলে দলে কামেন্কার মাঠে এসে পৌঁছচ্ছিলেন। সভার কাজ তখনও শুরু হয় নি, কিন্তু দূর থেকেই একটা জমাট চিৎকার আর হৈ-হল্লা কানে আসছিল।
ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ আবিষ্কার করলুম ফেষ্কাকে। ও আগুপিছু ঘুরে ঘুরে লোকদের হাতে ইস্তাহার গুঁজে দিচ্ছিল। আমায় দেখে দৌড়ে কাছে এল।
ওহো, তুইও এসে গেছিস! হেট-হেট, আজ ব্যাপারটা যা জমবে না। এই নে, এই গোছাটা ধর্ দেখি। দে তো সবার মধ্যে বিলি করে।’
ডজনখানেক ইস্তাহার আমার হাতে গছিয়ে দিল ও। তার মধ্যে একখানা খুলে দেখি, ‘এস-আর’-রা তাতে যুদ্ধকে জয়যুক্ত করতে আর রণক্ষেত্র ছেড়ে না-পালাতে আবেদন জানাচ্ছে। দেখেই সঙ্গে সঙ্গে ইস্তাহারগুলো ফিরিয়ে দিলুম।
‘না, ফেদকা, এ-ইস্তাহার আমি বিলি করতে পারব না। ইচ্ছে হলে তুই নিজে বিলি কর।’
ফেদ্দুকা ঘেন্নায় থুথু ফেলল।
বলল, ‘তুই একটা গাধা। ওদের সঙ্গে আছিস নাকি রে তুই?’ বলে দাঁড়কাক আর বাস্স্কাকভের দিকে মাথার ভঙ্গি করে দেখাল। ‘বাঃ, তোর বেশ উন্নতি হয়েছে দেখছি। আর আমি কিনা তোর ওপর নির্ভর করেছিলুম!’
তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে কাঁধে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ফেক্কা ভিড়ে মিশে গেল।
‘ওহ, উনি আমার ওপর নির্ভর করেছিলেন,’ বাঁকা হেসে আমি নিজের মনে বললুম, ‘যেন আমি নিজেই মাথা খাটাতে পারি না!’
‘অ্যাঃ, জয়যুক্ত করতি হবে…’ পাশেই কাকে যেন চাপা গলায় বলতে শুনলুম।
ফিরে তাকিয়ে দেখলুম, খালি পায়ে আর খালি মাথায় একজন কৃষক দাঁড়িয়ে।