০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সহযোগিতা, একক মার্কিন সামরিক হুমকি এড়াল আবুজা চীনের নিষেধাজ্ঞার কড়া বার্তা, তাইওয়ান অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থার ওপর চাপ রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল কিয়েভ, সক্রিয় আকাশ প্রতিরক্ষা ট্রাম্পের সঙ্গে রোববার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলেনস্কি, ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার ইঙ্গিত সন্ত্রাস দমনে অপ্রবেশ্য নিরাপত্তা বলয়, সংঘটিত অপরাধে সর্বমুখী আঘাতের ঘোষণা অমিত শাহের ইসরায়েলের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সোমালিল্যান্ডকে, আফ্রিকার শিংয়ে নতুন ভূরাজনৈতিক ঢেউ চীনা যুদ্ধবিমানের প্রধান ক্রেতা হিসেবে পাকিস্তানের উত্থান, পেন্টাগনের প্রতিবেদনে স্পষ্ট বার্তা পাকিস্তানে সৌর বিদ্যুতের উত্থান, নারীরা কি কেবল দর্শক

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -১৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৭:৫৫:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 58

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

মাথোরকা তামাকের ধোঁয়ার কুয়াশার মধ্যে জনতা জোরে-জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। এখান-ওখান থেকে সমর্থনসূচক চিৎকার কানে এল।

এবার হুগলিকভ বলতে শুরু করল সংবিধান-সভা সম্বন্ধে। বলল, ওই সভাই হবে দেশের সর্বময় কর্তা। তারপর ও বললে জমিদারী-সম্পত্তি খেয়ালখুশিমাফিক কেড়ে নেয়া সম্বন্ধে, শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখা সম্পর্কে আর অস্থায়ী সরকারের নির্দেশ আর হুকুমনামাগুলো প্রতিপালন করার বিষয়ে। শ্রোতাদের মনগুলোকে ও সূক্ষ্য জালে চমৎকার জড়িয়ে ফেলল। প্রথমে কুলিকভ বক্তৃতা দিল চাষীদের সপক্ষে, তাঁদের প্রয়োজনের কথাও তাঁদের আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল। আর জনতা যখন ‘শুনুন, শুনুন!’ ‘ঠিক বলেচেন মশায়!’ ‘অবস্তা এর চে’ আর কী খারাপ হতি পারে!’

এই সব বলে চিৎকার করে তাদের সমর্থন জানাচ্ছিল ক্রুগুলিকভ তখন অতি সন্তর্পণে, প্রায়-ধরা-যায়-না এমন সুক্ষভাবে, উল্টো কথা বলতে শুরু করল। তারপর একসময় হঠাৎ দেখা গেল, যে-জনতা একটু আগে ক্রুগুলিকভের সঙ্গে এ-ব্যাপারে একমত হয়েছিল যে জমি ছাড়া চাষীদের সত্যি- কার স্বাধীনতা আসতে পারে না, তাদেরই আবার এই সিদ্ধান্তেও পৌঁছতে হচ্ছে যে একটা স্বাধীন দেশে জমিদারদের জমি কেড়ে নেওয়া চলতে পারে না।

অবশেষে ওর নদুই মিনিটের বক্তৃতা শেষ হল। প্রশংসাসূচক জোর গুঞ্জন উঠল চারদিকে। গুপ্তচর আর বলশেভিকদের উদ্দেশ্যে বর্ষিত হল আরেক দফা গালিগালাজ।

‘কুগুলিকভটার সঙ্গে আমাদের বাস্স্কাকভের কোনো তুলনাই হয় না,’ আমি ভাবলুম। ‘লোকটা কীভাবেই না সবাইকে খেপিয়ে তুলেছে।’

আমার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল বাস্স্কাকভ। অবাক হয়ে দেখলুম, ও দিব্যি পাইপ টেনে চলেছে, মঞ্চে ওঠার বিন্দুমাত্র ইচ্ছের লক্ষণ ওর মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।

গাড়িটার চারপাশে ভিড় করে দাঁড়ানো ‘এস-আর’-রাও বলশেভিকদের হাবভাব দেখে কিছুটা যেন ধাঁধায় পড়ে গেল। ওরা ভাবল, বলশেভিকরা বোধহয় কারো এসে পৌঁছনোর অপেক্ষায় আছে। কাজেই ওরা আরেকজন বক্তাকে ঝুলি থেকে বের করল। এই দ্বিতীয় বক্তাটি কিন্তু দেখা গেল কুলিকভের চেয়ে ঢের দুর্বল। মিনমিনে গলায় সে তোলাতে লাগল আর আগে যা বলা হয়েছে তার অনেকখানিই তোতাপাখির মতো ফিরেফিরতি বলে গেল। লোকটি নেমে যাওয়ার সময় হাততালিও পড়ল অনেক কম।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -১৬)

০৭:৫৫:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

মাথোরকা তামাকের ধোঁয়ার কুয়াশার মধ্যে জনতা জোরে-জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। এখান-ওখান থেকে সমর্থনসূচক চিৎকার কানে এল।

এবার হুগলিকভ বলতে শুরু করল সংবিধান-সভা সম্বন্ধে। বলল, ওই সভাই হবে দেশের সর্বময় কর্তা। তারপর ও বললে জমিদারী-সম্পত্তি খেয়ালখুশিমাফিক কেড়ে নেয়া সম্বন্ধে, শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখা সম্পর্কে আর অস্থায়ী সরকারের নির্দেশ আর হুকুমনামাগুলো প্রতিপালন করার বিষয়ে। শ্রোতাদের মনগুলোকে ও সূক্ষ্য জালে চমৎকার জড়িয়ে ফেলল। প্রথমে কুলিকভ বক্তৃতা দিল চাষীদের সপক্ষে, তাঁদের প্রয়োজনের কথাও তাঁদের আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল। আর জনতা যখন ‘শুনুন, শুনুন!’ ‘ঠিক বলেচেন মশায়!’ ‘অবস্তা এর চে’ আর কী খারাপ হতি পারে!’

এই সব বলে চিৎকার করে তাদের সমর্থন জানাচ্ছিল ক্রুগুলিকভ তখন অতি সন্তর্পণে, প্রায়-ধরা-যায়-না এমন সুক্ষভাবে, উল্টো কথা বলতে শুরু করল। তারপর একসময় হঠাৎ দেখা গেল, যে-জনতা একটু আগে ক্রুগুলিকভের সঙ্গে এ-ব্যাপারে একমত হয়েছিল যে জমি ছাড়া চাষীদের সত্যি- কার স্বাধীনতা আসতে পারে না, তাদেরই আবার এই সিদ্ধান্তেও পৌঁছতে হচ্ছে যে একটা স্বাধীন দেশে জমিদারদের জমি কেড়ে নেওয়া চলতে পারে না।

অবশেষে ওর নদুই মিনিটের বক্তৃতা শেষ হল। প্রশংসাসূচক জোর গুঞ্জন উঠল চারদিকে। গুপ্তচর আর বলশেভিকদের উদ্দেশ্যে বর্ষিত হল আরেক দফা গালিগালাজ।

‘কুগুলিকভটার সঙ্গে আমাদের বাস্স্কাকভের কোনো তুলনাই হয় না,’ আমি ভাবলুম। ‘লোকটা কীভাবেই না সবাইকে খেপিয়ে তুলেছে।’

আমার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল বাস্স্কাকভ। অবাক হয়ে দেখলুম, ও দিব্যি পাইপ টেনে চলেছে, মঞ্চে ওঠার বিন্দুমাত্র ইচ্ছের লক্ষণ ওর মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।

গাড়িটার চারপাশে ভিড় করে দাঁড়ানো ‘এস-আর’-রাও বলশেভিকদের হাবভাব দেখে কিছুটা যেন ধাঁধায় পড়ে গেল। ওরা ভাবল, বলশেভিকরা বোধহয় কারো এসে পৌঁছনোর অপেক্ষায় আছে। কাজেই ওরা আরেকজন বক্তাকে ঝুলি থেকে বের করল। এই দ্বিতীয় বক্তাটি কিন্তু দেখা গেল কুলিকভের চেয়ে ঢের দুর্বল। মিনমিনে গলায় সে তোলাতে লাগল আর আগে যা বলা হয়েছে তার অনেকখানিই তোতাপাখির মতো ফিরেফিরতি বলে গেল। লোকটি নেমে যাওয়ার সময় হাততালিও পড়ল অনেক কম।