আর্কাদি গাইদার
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
তখনও বাস্স্কাকভ পাইপ টেনে চলেছে। টানা-টানা সর্-সরু চোখদুটো কচকে মুখখানাকে এমন নিপট ভালোমানুষের মতো করে রেখেছে ও, যেন বলতে চাইছে: ‘আরে বকুক না, যত বকতে চায়। তাতে আমার কী এল-গেল? আমি বাপু কারো সাতে-পাঁচে নেই। দিব্যি পাইপ টেনে চলেছি’।
ওদের তৃতীয় বক্তার অবস্থা ঘটল দ্বিতীয় বক্তার মতোই। আর সে যখন মণ্ড থেকে নেমে গেল বেশির ভাগ শ্রোতাই তখন শিস্ দেয়া, হপহপ আওয়াজ করা আর চ্যাঁচামেচি শুরু করেছে।
‘হেই, সভাপতি-মশাই!’
‘আরে ও মোড়ল, অন্য বক্তার দাও-না বাবা!’
‘আরে, বলশেভিকদের কইতি দাও না গো! ওদের কইতি দিচ্চ না কেন?’
এ-অভিযোগের প্রতিবাদ করে সভাপতি জানালেন, যে বলতে চাইছে তিনি ভাকেই বলতে দিচ্ছেন। কিন্তু বলশেভিকদের কেউ এখনও পর্যন্ত বলতে চায় নি।
কারণ কে জানে, হয়তো ওরা ভয় পেয়েছে। ওদের দিয়ে তো জোর করে তিনি কিছু, বলাতে পারেন না।
‘আপনি যদি না পারেন তো আমরা চেষ্টা করে দেখি!’
‘নোংরা কাজ যা করবার শেষ করে ওরা এখন গা-ঢাকা দিতে চেষ্টা পাচ্চে হে।’
ঘাড় ধরে ওগুলারে গাড়ির কাচে এনে ফ্যালো দেখি! পাঁচজনের সামনে বলুক যা ওদের বলার আচে…
লোকের তর্জনিগজ’ন শুনে ভয় ধরে গেল আমার। দাঁড়কাকের দিকে তাকালুম। দেখলুম তিনি হাসছেন বটে, তবে মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
অবশেষে দাঁড়কাক বললেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে, ব্যস্কাকভ। এর পর কিন্তু অবস্থা খারাপ দাঁড়াবে।’
এবার সজোরে গলা ঝাড়ল বাস্স্কাকভ। তারপর পাইপটা পকেটে গজে ক্রুদ্ধ জনতার মাঝখান দিয়ে হেলেদুলে গাড়ির দিকে এগোতে লাগল। লোক পথ ছেড়ে দিল ওকে।
Sarakhon Report 



















