০৯:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে ইরানে চীনা বিনিয়োগ অনিশ্চিত, তবু মধ্যপ্রাচ্যের আহ্বান অটুট

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -১৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫
  • 16

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

গোড়ায়, শুরু করার আগে, ও সময় নিতে লাগল। প্রথমে একবার নির্বিকারভাবে গাড়ির চতুর্দিকে জটলা-পাকিয়ে-দাঁড়ানো ‘এস-আর’-দের দিকে তাকাল, তারপর হাতের তেলো দিয়ে কপালটা মুছল। একবার চোখ বুলিয়ে নিল জনতার ওপর, শেষে ওর প্রকাণ্ড হাতের মুঠি জড় করে বুড়ো আঙুলটা উচু করে ধরল আর সকলকে দেখানোর উদ্দেশ্যে হাতটা ধরল তুলে। তারপর সজোরে, ঠান্ডা গলায়, বিদ্রূপের সুরে বলল:

‘দেখলে তো?’

এরকম একটা অদ্ভুত ধরনের সূচনায় চমকে গেলুম আমি। চাষীরাও অবাক হয়েছে মনে হল।

সঙ্গে সঙ্গে চটে-ওঠা-গলায় চিৎকার শোনা গেল:

‘এর মানে কী?’

‘বলি, মানুষজনরে কাঁচকলা দেখানোর মতলবখানা কী?’

‘আ মোলো যা, ক’বি কথায় ক, কাঁচকলা দেখাস কেন? নাকি ঘাড়ধাক্কা খাবার ইচ্ছে হয়েচে?’

‘বলি, দেখলে তো?’ বাসস্কাকভ আবার শুরু করল। ‘যদি না দেখে থাক, এনারাই তোমাদিগে দেখিয়ে দেবেন’খন,’ বলে ‘এস-আর’-দের দিকে ঘাড় ঝাঁকাল। স্বাধীন রুশদেশের নাগরিক হাঁল কী হবে, তোমাদিগে যা বোঝানো হয় তাই বোক। আচ্ছা, নাগরিক ভাইসব কও দেখি, বিপ্লব কোন, ভালোটা করেচে তোমাদের? তোমাদের বরাতে যুদ্ধ জুটেছিল, তা যুদ্ধ এখনও চলচে।

তোমাদের জমিজমা ছিল না, তা এখনও নেই। জমিদারবাবুরা আশেপাশেই থাকতেন, তা এখনও আছেন তাঁরা, দিব্যি জলজ্যান্ত, হেসে-খেলে বেড়াচ্ছেন। তা, তাঁদের চিন্তারই বা আচে কাঁ? মুখে ফেনা তুলি যত ইচ্ছে তোমরা হৈ-চৈ, হপহপ কর। এই সরকারও কিন্তু জমিদারদের পক্ষে দাঁড়াবে। ভোদোভাতোভোর গ্রামবাসীদের একবার শুধোও দেখি- তারা যখন গাঁয়ের জমিদারবাবুর জমি দখল করতি চেষ্টা করেছিল তখন কী হল? তারা দেখল, গাঁয়ে মিলিটারি বসে গেচে। জমিদারবাবুর জমি অবিশ্যি খুবই সরেস ছিল, কিন্তু তাতে কী, কিছুতে কিছু, হবার লয়। তোমরা তো কয়ে থাক যে তিনশো বছর ধরে তোমরা এ-সব সহ্যি করচ, কও না? তা কী করবে, সাহ্য করে যাও যতদিন পার।

শান্তরে বলে, যাদের ধৈর্য অসীম, ভগবান তাদের ভালোবাসেন। তা বুক বেধে ধৈর্য ধরে থাক, কবে জমিদার লিজে থেকে আসবেন, তোমাদের কাছে টুপি খুলে দাঁড়িয়ে কবেন: ‘ভালো জমি চাও বাপু? তা লাও না, লাও, লিয়ে আমায় উদ্ধার কর’। ওপিক্ষে কর সে-পয্যন্ত। আর ওপিক্ষে? সে- কথা যদি কও তো বলি, একেবারে রোজ-কেয়ামত পয্যন্ত ওপিক্ষে করি যেতি হবে। আচ্ছা, তোমরা কি শুনেচ যে সংবিধান সভা যখন বসবে তখন সেখানে এই কথা লিয়ে আলোচনা হবে ‘চাষীদের হাতে যে-জমি দেয়া হবে তা কি দায়মুক্ত হওয়া বাবদ অর্থ তাদের কাছ থেকে লিয়ে দেয়া হবে, না না-লিয়ে দেয়া হবে?’

 

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩)

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -১৮)

০৮:০০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

গোড়ায়, শুরু করার আগে, ও সময় নিতে লাগল। প্রথমে একবার নির্বিকারভাবে গাড়ির চতুর্দিকে জটলা-পাকিয়ে-দাঁড়ানো ‘এস-আর’-দের দিকে তাকাল, তারপর হাতের তেলো দিয়ে কপালটা মুছল। একবার চোখ বুলিয়ে নিল জনতার ওপর, শেষে ওর প্রকাণ্ড হাতের মুঠি জড় করে বুড়ো আঙুলটা উচু করে ধরল আর সকলকে দেখানোর উদ্দেশ্যে হাতটা ধরল তুলে। তারপর সজোরে, ঠান্ডা গলায়, বিদ্রূপের সুরে বলল:

‘দেখলে তো?’

এরকম একটা অদ্ভুত ধরনের সূচনায় চমকে গেলুম আমি। চাষীরাও অবাক হয়েছে মনে হল।

সঙ্গে সঙ্গে চটে-ওঠা-গলায় চিৎকার শোনা গেল:

‘এর মানে কী?’

‘বলি, মানুষজনরে কাঁচকলা দেখানোর মতলবখানা কী?’

‘আ মোলো যা, ক’বি কথায় ক, কাঁচকলা দেখাস কেন? নাকি ঘাড়ধাক্কা খাবার ইচ্ছে হয়েচে?’

‘বলি, দেখলে তো?’ বাসস্কাকভ আবার শুরু করল। ‘যদি না দেখে থাক, এনারাই তোমাদিগে দেখিয়ে দেবেন’খন,’ বলে ‘এস-আর’-দের দিকে ঘাড় ঝাঁকাল। স্বাধীন রুশদেশের নাগরিক হাঁল কী হবে, তোমাদিগে যা বোঝানো হয় তাই বোক। আচ্ছা, নাগরিক ভাইসব কও দেখি, বিপ্লব কোন, ভালোটা করেচে তোমাদের? তোমাদের বরাতে যুদ্ধ জুটেছিল, তা যুদ্ধ এখনও চলচে।

তোমাদের জমিজমা ছিল না, তা এখনও নেই। জমিদারবাবুরা আশেপাশেই থাকতেন, তা এখনও আছেন তাঁরা, দিব্যি জলজ্যান্ত, হেসে-খেলে বেড়াচ্ছেন। তা, তাঁদের চিন্তারই বা আচে কাঁ? মুখে ফেনা তুলি যত ইচ্ছে তোমরা হৈ-চৈ, হপহপ কর। এই সরকারও কিন্তু জমিদারদের পক্ষে দাঁড়াবে। ভোদোভাতোভোর গ্রামবাসীদের একবার শুধোও দেখি- তারা যখন গাঁয়ের জমিদারবাবুর জমি দখল করতি চেষ্টা করেছিল তখন কী হল? তারা দেখল, গাঁয়ে মিলিটারি বসে গেচে। জমিদারবাবুর জমি অবিশ্যি খুবই সরেস ছিল, কিন্তু তাতে কী, কিছুতে কিছু, হবার লয়। তোমরা তো কয়ে থাক যে তিনশো বছর ধরে তোমরা এ-সব সহ্যি করচ, কও না? তা কী করবে, সাহ্য করে যাও যতদিন পার।

শান্তরে বলে, যাদের ধৈর্য অসীম, ভগবান তাদের ভালোবাসেন। তা বুক বেধে ধৈর্য ধরে থাক, কবে জমিদার লিজে থেকে আসবেন, তোমাদের কাছে টুপি খুলে দাঁড়িয়ে কবেন: ‘ভালো জমি চাও বাপু? তা লাও না, লাও, লিয়ে আমায় উদ্ধার কর’। ওপিক্ষে কর সে-পয্যন্ত। আর ওপিক্ষে? সে- কথা যদি কও তো বলি, একেবারে রোজ-কেয়ামত পয্যন্ত ওপিক্ষে করি যেতি হবে। আচ্ছা, তোমরা কি শুনেচ যে সংবিধান সভা যখন বসবে তখন সেখানে এই কথা লিয়ে আলোচনা হবে ‘চাষীদের হাতে যে-জমি দেয়া হবে তা কি দায়মুক্ত হওয়া বাবদ অর্থ তাদের কাছ থেকে লিয়ে দেয়া হবে, না না-লিয়ে দেয়া হবে?’